বিত্তবানদের কাছে
সাহায্যের আবেদন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ মো: তৈয়ব আলী। বয়স ৩৩ বছর। স্ত্রী ও দু’টি কন্যা সন্তান নিয়ে তার সংসার। কোন রকমে দিন আনতে পানতা ফুরায় অবস্থা। টানাপোড়েনের সংসার তার। তাই শহর ছেড়ে রূপসা সেতু বাইপাস সড়কের পাশের সুরখালী এলাকার একটি বাড়িতে ভাড়ায় থাকতেন। সংসার টিকিয়ে রাখতে অনেক কষ্টে দেড় বছর আগে চাকরী নেন আউটসোর্সিং কর্মচারী হিসেবে। খুলনা জেনারেল হাসপাতালের ওয়ার্ডবয় হিসেবেই কাজে প্রবেশ। এক বছরের মাথায় বেতন মিললেও বিগত সাত মাস কাজ করছেন বেতনবিহীন। এজন্য এক বেলা ডিউটির পর অন্য বেলায় ভ্যানযোগে তরকারি বিক্রি করতেন। কিন্তু হাসপাতালে সাইকেলযোগে ডিউটিতে যাওয়ার সময় গত বছর ১১ নভেম্বর যেন সবকিছু এলোমেলো করে দেয়। সেই থেকে এখনও তিনি হাসপাতালের বেডে মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। স্ত্রী ও দু’টি সন্তানের থাকা-খাওয়ার কোন উপায় নেই। এ যেন এক অন্যরকম পৃথিবী দেখছেন তারা। একদিকে স্বামীর মৃত্যু যন্ত্রণা অপরদিকে দু’টি অবুঝ সন্তান নিয়ে কিভাবে চলবেন সে চিন্তায় অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন তৈয়ব আলীর স্ত্রী আসমা খাতুন। তাই সমাজের বিত্তবানদের দ্বারস্থ হয়েছেন তিনি। স্বামীর চিকিৎসার খরচ আর সংসার চালানোর জন্য এখন পুরোটাই ভর করতে হচ্ছে সমাজের মানুষের ওপর।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন তৈয়ব আলীর শয্যাপাশে গিয়ে সম্প্রতি কথা হয় তার স্ত্রী আসমা খাতুনের সাথে। এসময় তৈয়ব আলীকে দেখা যায় অচেতন অবস্থায় পড়ে আছেন। আসমা খাতুন জানালেন দুর্ঘটনার পর থেকেই তিনি অচেতন হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। গত ১১ নভেম্বর দুপুরের দিকে তিনি বাইসাইকেলযোগে হাসপাতালে যাওয়ার পথে রূপসা সেতু বাইপাস সড়কের ওপর মটর সাইকেলের ধাক্কায় পড়ে গিয়ে আহত হন। স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে তার অবস্থার অবনতি হলে উন্নত চিকিৎসার জন্য নেয়া হয় গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। সেখান থেকে পরে নেয়া হয় শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালে। আবু নাসের হাসপাতাল থেকে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় রেফার্ড করা হলে তার পক্ষে সেটি সম্ভব হয়নি। আর্থিক সংকটের কারণে তার যখন চিকিৎসা প্রায় বন্ধ হওয়ার পথে তখন তার সহকর্মী আউটসোর্সিং কর্মচারীদের সহায়তায় খুলনা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসকদের অনুরোধ করে সেখানের মেডিসিন ওয়ার্ডে ভর্তি করে চিকিৎসা সেবা দেয়া হয়। দুর্ঘটনার পর থেকে তার শরীরের বাম পাশ অচেতন হয়ে পড়ে। হাসপাতালের মেডিসিন কনসালটেন্ট ডা: পার্থ ঘোষের অধীনে মেডিসিন ওয়ার্ডের ১৭ নম্বর বেডে রেখে তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।
আহত তৈয়ব আলীর স্ত্রী আরও জানান, ২০১৯ সালের মে মাস থেকে তিনি জেনারেল হাসপাতালে আউটসোর্সিং কর্মচারী হিসেবে কর্মরত। গত বছর জুলাই মাসে এক বছরের বেতন পেলেও এর পর থেকে আবারো বেতন বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি আউটসোর্সিং কর্মচারী নিয়োগের ঠিকাদার নিয়োগ জটিলতার কারণে আবারো বেতন বন্ধ হয়ে যায়। এতে তাদের অবস্থা এতোটাই শোচনীয় হয়ে পড়ে যে, বর্তমানে তার চিকিৎসার জন্য যেটুকু অর্থ ব্যয় হয় তা তার সহকর্মী আউটসোর্সিং কর্মচারীদের পক্ষ থেকে যোগাড় করে দেয়া হচ্ছে। কোন কোন ক্ষেত্রে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্স, কর্মকর্তা ও অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের পক্ষ থেকেও সহযোগিতা করা হচ্ছে। এভাবে অন্যের ওপর ভর করে তার চিকিৎসা সেবা চললেও সংসার চলবে কিভাবে সেটিও চিন্তার বিষয়। এজন্য তিনি সমাজের বিত্তবানদের কাছে সাহায্য কামনা করেছেন।
সাহায্য পাঠানোর জন্য ০১৪০৬-৯২৫২৩৬ নম্বর পারসোনাল রকেট নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।