বর্তমানে গত ১ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশে উত্তোলনযোগ্য গ্যাসের মজুদ ১০.৬৩ ট্রিলিয়ন ঘনফুট। একই সঙ্গে বিদ্যমান গ্যাসক্ষেত্র থেকে দৈনিক ২৫৭০ মিলিয়ন ঘনফুট হারে গ্যাস উৎপাদন করা হচ্ছে। উত্তোলনের এ ধারা অব্যাহত থাকলে জনগণ, শিল্প কারখানাসহ অন্যান্য গ্রাহকদের মধ্যে আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ সম্ভব হবে।

মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে মো. হাবিবর রহমানের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এ তথ্য জানান।

মো. মামুনুর রশীদ কিরনের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, বর্তমানে প্রতিদিন গ্যাসের চাহিদা ৩৭০০ মিলিয়ন ঘনফুট। দৈনিক উৎপাদিত গ্যাসের উৎপাদন ২৫৭০ মিলিয়ন ঘটনফুট এবং আমদানি করা দৈনিক ৫৯০ মিলিয়ন ঘনফুট সমপরিমাণ এলএনজি মিলিয়ে বর্তমানে দেশে দৈনিক ৩১৬০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস সরবরাহ করা হচ্ছে। এ হিসাবে দৈনিক ঘাটতি রয়েছে ৫৪০ মিলিয়ন ঘনফুট। বর্তমানে ঘাটতি পূরণের জন্য অনশোর গ্যাস অনুসন্ধান ও উৎপাদন বৃদ্ধির বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়েছে। এ ছাড়া দৈনিক ১০০ মিলিয়ন ঘনফুট ক্ষমতাসম্পন্ন একটি ল্যাল্ড বেইসড এলএনজি টার্মিনাল নির্মাণের জন্য ফ্যাসিবিলিটি স্টাডি ও টার্মিনাল ডেভেলপারস সিলেকশন কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

বেগম গ্লোরিয়া ঝর্ণা সরকারের প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, সরকারি খাতে অভ্যন্তরীণ উৎস হতে উৎপাদিত এলপি গ্যাসের মূল্য আন্তজার্তিক বাজার মূল্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। তবে বেসরকারি খাতে আমদানি ও বিপণন করা এলপিজির মূল্য আন্তর্জাতিক বাজার মূল্যের সঙ্গে হ্রাস-বৃদ্ধি পায়। উল্লেখ্য আন্তর্জাতিক বাজারে এলপি গ্যাসের মূল্য প্রতি মাসে একবার পরিবর্তন হয়। আর এলপিজি সিলিন্ডারের অভ্যন্তরে বিদ্যমান চাপের কারণে বিস্ফোরণজনিত দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা ক্ষীণ এবং অদ্যাবধি এ ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার নজির নেই।

ফখরুল ইমামের প্রশ্নের জবাবে নসরুল হামিদ বলেন, ঢাকা মহানগরসহ আশপাশের জেলাগুলোতে শনাক্তকৃত অবৈধ বিতরণ লাইনের মাধ্যমে আবাসিকে অবৈধ সংযোগের উৎসমুখ চিহ্নিত করা হয়েছে ১২১টি এবং অবৈধ বিতরণ লাইনের দৈর্ঘ্য ২ লাখ ৪৪ হাজার ৭৬০ মিটার।

সৈয়দা রুবিনা আক্তারে প্রশ্নের জবাবে বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে সরকারি খাতে উৎপাদিত সাড়ে ১২ কেজি ওজনের এক সিলিন্ডার গ্যাসের ভোক্তা পর্যায়ে খুচরা মূল্য ৭০০ টাকা এবং বেসরকারি খাতে বটলিংকৃত প্রতি ১২ কেজি ওজনের গ্যাসের খুচরা মূল্য সাড়ে ৯শ’ থেকে ১ হাজার টাকা বিক্রির তথ্য পাওয়া গেছে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতে প্রতি ইউনিট বিদ্যুৎতের উৎপাদন ব্যয় ফার্নেস অয়েলভিত্তিক গড়ে ১৩-১৪ টাকা, ডিজেলভিত্তিক গড়ে ২৫-৩০ টাকা এবং গ্যাসভিত্তিক গড়ে ২.৫-৩.০ টাকা। এর বিপরীতে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বাবিউবো) বিদ্যুৎতের বাল্ক পর্যায়ে গড় সরবরাহ ব্যয় প্রতি ইউনিট ৫.৮২ টাকা এবং বাল্ক গড় বিক্রয় মূল্য প্রতি ইউনিট ৪.৮০ টাকা। এ বিক্রয় মূল্য ও সরবরাহ ব্যয়ের মধ্যে পার্থক্যের কারণে সরকারকে ভর্তুকি দিতে হচ্ছে। সরকার গত একদশকে এ খাতে প্রায় ৫২ হাজার ২৬০ কোটি টাকা বাজেটারি সাপোর্ট-ভর্তুকি প্রদান করা হয়েছে।