স্টাফ রিপোর্টার ঃ কোয়ারেন্টাইনে থাকা ভারত ফেরত এক যুবতীকে (২২) ধর্ষণের অভিযোগে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশনের এএসআই মোকলেছুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। কেএমপি কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন। একই সাথে তাকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। কেএমপির অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার(সিটিএসবি) মিডিয়া ও পিআর মো: জাহাঙ্গীর আলম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গতকাল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে তিনি জানান, গত ১৩ মে রাত ১২টা ১৪ মে সকাল আটটা পর্যন্ত খুলনা মহানগরীর খুলনা থানাধীন পিটিআই মোড়স্থ প্রাইমারি ট্রেনিং ইনষ্টিটিউট (পিটিআই) এর মহিলা হোস্টেলে ভারত ফেরত বাংলাদেশী নাগরিকদের ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনের জন্য স্থাপিত অস্থায়ী প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানরতদের নিরাপত্তা ডিউটিতে খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের প্রসিকিউশন বিভাগে কর্মরত এএসআই মোকলেছুর রহমান নিয়োজিত ছিলেন। ডিউটিতে থাকাকালীন উক্ত এএসআই নিচতলা হতে ২য় তলায় কোয়ারেন্টাইনে অবস্থানরত ২২ বছর বয়সী এক যুবতীর কক্ষে বিনা অনুমতিতে প্রবেশ করে তার মুখ চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। পরর্বতী দিন অর্থাৎ ১৫ মে রাত আনুমানিক ১২টা ২০ মিনিটে উক্ত এএসআই আবারও ভিকটিমের রুমে গিয়ে পুনরায় মেলামেশা করতে চাইলে ভিকটিম চিৎকার করলে আসামী দ্রুত নিচে চলে যান। উক্ত বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তপক্ষের নজরে আসলে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য প্রাথমিক অনুসন্ধান করা হয়। অনুসন্ধানকালে ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া যায়। এরপর কেএমপি কর্তৃপক্ষ তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেন। এছাড়া উক্ত এএসআইয়ের বিরুদ্ধে ভিকটিম কেএমপির সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। যার নম্বর-১৩, তারিখ-১৭/০৫/২০২১।
এ ব্যাপারে আসামী এএসআই মোকলেছুর রহমানকে (সাময়িক বরখাস্তকৃত) গ্রেফতারপূর্বক আদালতে প্রেরণ করা হয়। মামলাটি বর্তমানে তদন্তাধীন রয়েছে বলেও কেএমপির মিডিয়া সেলের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা জানান।
এদিকে, মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, গত ৪ মে ভারত থেকে ফিরে ওই যুবতী মহানগরীর পিটিআই’র দ্বিতীয় তলার মহিলা হোস্টেলে ১৪ দিনের কোয়ারেন্টাইনে ছিলেন। গত ১৪ মে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তিনি প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে নিচতলায় নামেন। নিচ থেকে ওপরে ওঠার সময় এএসআই মোকলেছুর রহমান তাকে ডাক দেন। কেন আসবে জানতে চাইলে মোখলেসুর তাকে টাকা দেবে বলে জানান। এক পর্যায়ে চলে যান তিনি। পেছন পেছন এএসআই মোকলেছুরও সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে যান এবং যুবতিকে ধাক্কা দিয়ে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন। সাথে সাথে ওড়না দিয়ে যুবতীর মুখ বেঁধে ফেলেন। পরে তাকে বিছানায় ফেলে ধর্ষণ করেন। ওই রাতে তাকে আরও একবার ধর্ষণ করা হয় বলেও এজাহারে উল্লেখ করা হয়। বিষয়টি নিয়ে ভয়ে ওই যুবতী কাউকে কিছু বলেননি। মোকলেছুর পরদিন একইভাবে তার সাথে মেলামেশা করতে গেলে যুবতী বাধা দেন। বিষয়টি পাশের রুমের এক নারী জানতে পেরে চিৎকার করলে ওই পুলিশ সদস্য দ্রুত পালিয়ে যান। ওই যুবতী ঘটনাটি নিয়ে পরিবারের সদস্যদের সাথে আলাপ-আলোচনা করে গতকাল সোমবার সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।