আজ শেষ হয়ে
যাচ্ছে ১ম ডোজ

এইচ এম আলাউদ্দিন ঃ খুলনা মহানগরীতে এ পর্যন্ত করোনা ভ্যাকসিনের জন্য অনলাইনে আবেদন করেছেন দু’লাখ ৪৮ হাজার ২৫৬জন। আর গতকাল বুধবার পর্যন্ত মডার্না ভ্যাকসিনের প্রথম ডোজ দেয়া হয় ৬৯ হাজার ৮২৬ জনকে এবং দ্বিতীয় ডোজ গ্রহণ করেন ৪৪২জন। আজ বৃহস্পতিবারের পর থেকে নগরীর নিবন্ধনকারীদের মডার্নার টিকা দেয়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। শুধুমাত্র আগামী শনিবার থেকে দেয়া হবে দ্বিতীয় ডোজের টিকা। অর্থাৎ নিবন্ধন করেও মডার্নার টিকা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নগরীর প্রায় পৌনে দু’লাখ লোক।
এছাড়া সিনোফার্ম’র টিকার জন্য খুলনা জেলার নয়টি উপজেলার আবেদনকারীর সংখ্যাও ছয় লাখ ৫৬ হাজার ৪২১জন। যেখানে প্রথম ডোজ দেয়া হয় এক লাখ ১০ হাজার ৭৮২জনকে এবং দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয় সাত হাজার ৬৬১জনকে। অর্থাৎ নিবন্ধনের পর এখনও খুলনা জেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ লোককে টিকা দেয়া যাচ্ছে না বলে খুলনার সিভিল সার্জনের দপ্তর থেকে দেয়া দৈনন্দিন প্রতিবেদনে দেখা যায়।
যদিও খুলনার সিভিল সার্জন ডা: নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, যারা অনলাইনে আবেদন করেছেন তাদের শংকার কোন কারণ নেই। কেননা শীঘ্রই টিকা আসছে। কিছুদিন দেরি হলেও সকল নিবন্ধনকারীকে টিকা দেয়া হবে। হয়তো কিছুদিন দেরি হতে পারে। উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ভারতের এ্যাষ্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের নিবন্ধনকারীদের মধ্যে যাদেরকে প্রথম ডোজ দিয়ে কিছুদিন অপেক্ষা করা হয়েছিল তাদের কিন্তু এখন দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হচ্ছে। সুতরাং হতাশার কিছু নেই।
বর্তমানে খুলনায় তিন ধরনের টিকা দেয়া হচ্ছে উল্লেখ করে সিভিল সার্জনের কার্যালয় বলছে, আমেরিকান তৈরি মডার্নার টিকা দেয়া হচ্ছে শুধুমাত্র নগরীর পাঁচটি কেন্দ্রে। কেন্দ্রগলো হচ্ছে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা জেনারেল হাসপাতাল, শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতাল, উপশম হাসপাতাল ও বিভাগীয় পুলিশ হাসাপাতাল। যদিও প্রথম ডোজ আজ বৃহস্পতিবার দেয়ার পর শেষ হয়ে যাচ্ছে। আগামী শনিবার থেকে ওই পাঁচটি কেন্দ্রে মডার্নার দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হবে। সিভিল সার্জন কার্যালয়ের সূত্র মতে, গতকাল পর্যন্ত মডার্নার ৫০ হাজার ২শ’ টিকা মজুদ ছিল। গতকাল পর্যন্ত প্রথম ডোজ দেয়া হয় ৬৯ হাজার ৮২৬জনকে আর দ্বিতীয় ডোজ গতকাল থেকে দেয়া শুরু হলে প্রথম ডোজ দেয়া হয় ৪৪২জনকে। ১৪ আগষ্ট থেকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া শুরু হলে নিবন্ধনকৃত প্রায় এক লাখ ৭৫ হাজার লোক মডার্নার টিকা থেকে বঞ্চিত হবেন।
এছাড়া জেলার নয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কেন্দ্রে দেয়া হচ্ছে চীনের তৈরি সিনোফার্ম ভ্যাকসিন। গতকাল পর্যন্ত জেলার নয়টি কেন্দ্রে এক লাখ ১০ হাজার ৭৮২জনকে প্রথম ডোজ এবং সাত হাজার ৬৬১ জনকে দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়। বর্তমানে মজুদ আছে সাত হাজার টিকা। অর্থাৎ আগামী ২/১দিনের মধ্যে সিনোফার্ম’র নতুন ভ্যাকসিন না আসলে জেলায় প্রায় সাড়ে পাঁচ লাখ নিবন্ধনকৃত লোককে ভ্যাকসিন বঞ্চিত থাকতে হবে।
যদিও ভারত থেকে আনা এ্যাষ্ট্রাজেনেকা ভ্যাকসিনের জন্য নিবন্ধন করেও খুলনা মহানগরী ও জেলার ১৫ হাজার ২৪৪জনকে গতকাল পর্যন্ত দ্বিতীয় ডোজ দেয়া হয়।
অবশ্য এর মধ্যেই গত ৭ আগষ্ট প্রথম ধাপে গণটিকা ক্যাম্পেইন কার্যক্রম সম্পন্ন হয় এবং আগামী ১৪ আগষ্ট শনিবার দ্বিতীয় ধাপের গণটিকা ক্যাম্পেইনের কথা রয়েছে।
এদিকে, করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিন দিতে সারাদেশের ন্যায় খুলনায়ও চলছে মানুষের উপচেপড়া ভীড়। প্রতিদিনই মানুষ টিকা কেন্দ্রগুলোতে গিয়ে টিকা গ্রহণ করছেন। আগে অবশ্য অনলাইনে আবেদন করে রেজিষ্ট্রেশন করার পর মোবাইলে এসএমএস পাওয়া সাপেক্ষে টিকা কার্ডসহ যাচ্ছেন কেন্দ্রে। আর তখনই সুযোগ পাচ্ছেন টিকা নেয়ার। কিন্তু অনেকেই টিকার জন্য অনলাইনে আবেদন করেও দিনের পর দিন পার হলেও পাচ্ছেন না এসএমএস। এজন্য টিকা দেয়ারও সুযোগ পাচ্ছেন না। বিষয়টি কোথা থেকে নিয়ন্ত্রণ হয় সেটিও সবার অজানা। তার পরেও তদ্বির করে পরে রেজিষ্ট্রেশন করে আগে টিকা দেয়ার তারিখ সম্বলিত এসএমএস পাচ্ছেন অনেকে। পরে রেজিষ্ট্রেশন করে আগে তারিখ পাওয়া ব্যক্তিদের ব্যাপারে জানতে চাইলে খোদ খুলনার সিভিল সার্জনও অসহায়ত্ত বোধ করেন। তিনি বলেন, এটি কিভাবে হয় সেটি তারও জানা নেই।