এ এইচ হিমালয় : নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে অর্ন্তভুক্তির জন্য আবেদন করেছে খুলনার ৫টি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা (এনজিও)। এর মধ্যে তিনটি সংস্থার নির্বাচন পর্যবেক্ষণের পূর্ব অভিজ্ঞতা নেই। প্রতিষ্ঠান তিনটির আকারও অনেক ছোট, জনবলও অনেক কম। জাতীয় নির্বাচনের এমন বড় আয়োজনে কিভাবে তারা অন্তর্ভুক্ত হলো তা নিয়ে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
খুলনা থেকে আবেদন করা সংস্থাগুলো হচ্ছে রূপান্তর, আশ্রয় ফাউন্ডেশন, আরপিও ফাউন্ডেশন, রূপসা ও স্কোপ। এর মধ্যে রূপান্তর ও আশ্রয় ইতোপূর্বে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছে। বাকি তিনটি এবারই প্রথম।
নির্বাচন কমিশন থেকে জানা গেছে, গত ১৮ জুলাই কাজী হাবিবুল আউয়াল কমিশনের নিবন্ধিত ৯৬টি স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষক সংস্থার সবকটির নিবন্ধন বাতিল করা হয়। এরপর নতুন সংস্থার আবেদন নেওয়া হয়। গত শনিবার দেশের ৭৩টি বেসরকারি সংস্থাকে পর্যবেক্ষক সংস্থা হিসেবে প্রাথমিকভাবে নিবন্ধনযোগ্য বলে চিহ্নিত করে ইসি। কোনো প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কারও দাবি বা আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে তা আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে ইসি বরাবর লিখিতভাবে জানাতে বলা হয়েছে গণবিজ্ঞপ্তিতে। এরপর দাবি-আপত্তি নিয়ে শুনানি শেষে পর্যবেক্ষক সংস্থার নিবন্ধন চূড়ান্ত করবে ইসি।
নির্বাচন কমিশনের খসড়া পর্যবেক্ষকের তালিকায় খুলনার ৫টি সংস্থার নাম পাওয়া গেছে। এর মধ্যে রূপান্তরের নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম খোকন বলেন, ‘আমরা ২০০১ ও ২০০৮ সালে জাতীয় নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। ২০১১ সালে একটি স্থানীয় সরকার নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। পরের নির্বাচনগুলোতেও আবেদন করেছি কিন্তু কমিশনের অনুমতি পাইনি।’
নগরীর নিরালা মোড়ে নিজস্ব অফিস রয়েছে আরপিও ফাউন্ডেশনের। ২০০৯ সালে সংস্থাটি প্রতিষ্ঠিত। তাদের জনবল রয়েছে ১৪ জন। অফিসে গিয়ে দেখা গেছে, ছোট পরিসরে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছেন তারা। ইতোপূর্বে কখনও নির্বাচন পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালনের অভিজ্ঞতা নেই সংস্থাটির।
সংস্থার নির্বাহী পরিচালক জয়নাল আবেদীন বাবলু বলেন, ইতোপূর্বে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার অভিজ্ঞতা রয়েছে। সেই অভিজ্ঞতার আলোকে পর্যবেক্ষণ করতে পারবো।
নগরীর নর্থ খাল ব্যাংক রোডের ৫২ নম্বর ভবনে রূপসা ও স্কোপ নামের এনজিওর কার্যালয়। দুটি প্রতিষ্ঠানই পর্যবেক্ষক হতে আবেদন করেছে। এর মধ্যে রূপসার উপকূলীয় এলাকায় প্রকল্প চলছে তাদের। বর্তমানে তাদের জনবল রয়েছেন ২৭ জন।
রূপসার নির্বাহী পরিচালক হিরন্ময় মন্ডল বলেন, ‘২০০৮ সালে রূপান্তরের সঙ্গে জোটবদ্ধভাবে দায়িত্ব পালন করেছি। এবার নিজেরাই আবেদন করেছি।’
একই ভবনেই রয়েছে স্কোপ এনজিওর কার্যালয়। কার্যালয়ে কর্মকর্তারা কেউ ছিলেন না। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক শেখ মো. টুটুল বলেন, তাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীর সংখ্যা ৭ জন। ভিজিডির চাল বিতরণসহ বিভিন্ন কাজ করেন তারা। ইতোপূর্বে রূপান্তরের সঙ্গে পর্যবেক্ষকের কাজ করেছেন।
নগরীর আহসান আহমেদ সড়কে আশ্রয় ফাউন্ডেশনের নিজস্ব অফিস রয়েছে। সংস্থার নির্বাহী পরিচালক মমতাজ খাতুন বলেন, ‘২০০৮ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ কয়েকটি স্থানীয় সরকার নির্বাচনে পর্যবেক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন করি। এবারও আবেদন করেছি। প্রয়োজনীয় জনবল ও অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখন কমিশনের অনুমোদনের অপেক্ষায় আছি।’