শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের
ভাইস-চ্যান্সেলর

অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান

* গৌরবের পদ্মা সেতু আর বাকী ৩ দিন

এইচ এম আলাউদ্দিন ঃ খুলনাস্থ শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর অধ্যাপক ডা: মোহাম্মদ মাহবুবুর রহমান বলেছেন, পদ্মা সেতু হচ্ছে বাঙ্গালী জাতির গৌরবের প্রতীক, বাংলাদেশের আত্ম মর্যাদার প্রতীক, বাংলাদেশের সমৃদ্ধির প্রতীক। আর মাত্র তিনদিন পরই স্বপ্নের পদ্মা সেতুর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন হতে যাচ্ছে। এটি এ অঞ্চলের মানুষের জন্য বড়ই আনন্দের।
দৈনিক পূর্বাঞ্চলকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে তিনি এমন মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, পদ্মা সেতু প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের সেতু। প্রধানমন্ত্রী যে বাংলাদেশের উন্নয়নের জন্য নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন তার বাস্তব প্রমাণ এই পদ্মা সেতু।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের এই উন্নয়নের শুরুটা হয়েছিল বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে, যার পূর্ণতা প্রাপ্তির দিকে এগিয়ে চলেছে শেখ হাসিনার হাত ধরে। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দুর্দশার কথা বিবেচনা করে প্রধানমন্ত্রী এই চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিলেন।
রাজধানী ঢাকার সাথে তুলনা করলে খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ছিল অনেকটাই পশ্চাদপদ এমনটি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, এ অঞ্চল যে কতটা পিছিয়ে আছে সেটি প্রধানমন্ত্রী জানেন বলেই তিনি এই চ্যালেঞ্জিং প্রকল্পটি হাতে নিয়েছিলেন। তিনি এ অঞ্চলের মানুষের কথা যেমন ভাবেন তেমনি অন্য এলাকার মানুষের কথাও একইভাবে ভাবেন- এমনটি জানিয়ে মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, পদ্মা সেতু শুধু যে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের উপকারে আসবে তা’ নয়, বরং সার্বিকভাবে দেশের সকল এলাকার উন্নয়ন হবে। জাতীয় অর্থনীতিতেও ভূমিকা রাখবে।
পদ্মা সেতু নির্মাণের জন্য তৎকালীন দেশের অর্থনৈতিক বাস্তবতায় বিশ^ব্যাংকের সহযোগিতা চাওয়া হলেও দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের কারনে বিশ^ব্যাংক প্রথমে এগিয়ে আসলেও পরে ফিরে যায়। এর পরেও প্রধানমন্ত্রী নিজস্ব অর্থায়নে অনেকটা ঝুঁকি নিয়ে পদ্মা সেতুর কাজকে এগিয়ে নেন। যদিও পদ্মা সেতুতে যে দুর্নীতির গুজব তখন ওঠানো হয়েছিল তার কোন ভিত্তিই শেষ পর্যন্ত মেলেনি। আর এর মধ্যদিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রমাণ করেছেন যে, তিনি বঙ্গবন্ধুর ন্যায় অন্যায়ের কাছে মাথা নতো করতে জানেন না এবং বাঙালী জাতি অন্যায়ের কাছে মাথা নতো করে না।
পদ্মা সেতু দেশের প্রতিটি মানুষের অর্জিত সম্পদের লগ্নি আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ সেতু আমাদের গৌরবের, আত্মমর্যাদার ও সমৃদ্ধির। সকল ষড়যন্ত্রের জাল ছিন্ন করে নির্মিত এ সেতু উদ্বোধন হতে যাচ্ছে ২৫ জুন শনিবার।
পদ্মা সেতু চালু হলে এ অঞ্চলের মানুষের আর্থ সামাজিক উন্নয়ন যে কতটা বেড়ে যাবে সেটি এখনও কল্পনায় আনা যাচ্ছে না। পদ্মা সেতু জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে যেমন ভূমিকা রাখবে তেমনি শিক্ষা ব্যবস্থায়ও আনবে ব্যাপক পরিবর্তন। যোগাযোগের সমস্যার কারণে খুলনা বিশ^বিদ্যালয়, কুয়েট এবং কৃষি বিশ^বিদ্যালয়ে দেশের অন্যান্য স্থান থেকে শিক্ষার্থীরা আসতে চাইতো না। এখন এ সেতু বাস্তবায়নে এ অবস্থার অবসান ঘটবে বলেও তিনি আশা করছেন। সর্বশেষ চালু হতে যাওয়া শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের মধ্যদিয়ে এ অঞ্চলের স্বাস্থ্যসেবার পাশাপাশি স্বাস্থ্যশিক্ষায়ও যথেষ্ট ভূমিকা রাখবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। দেশের মানুষের জন্য শিক্ষার এমন সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়ার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, পদ্মা সেতুর ফলে সুন্দরবন কেন্দ্রিক পর্যটনেরও প্রসার ঘটবে।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে যেমন বাঙালী জাতি মহান স্বাধীনতার দিকে এগিয়ে গিয়েছিল আজ তার কণ্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত ধরে দেশ এগিয়ে যাবে উন্নয়নের দিকে।
২০৪১ সালে দেশ পরিণত হবে উন্নত রাষ্ট্রে এমনটি উল্লেখ করে শেখ হাসিনা মেডিকেল বিশ^বিদ্যালয়ের ভিসি বলেন, যে লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে দেশ এগিয়ে যাচ্ছে সেটি বাস্তবায়ন হলে বিদেশ থেকেও মানুষ এদেশে আসবে চাকরী, ব্যবসা, শিক্ষা বা পর্যটনের জন্য। পদ্মা সেতু আমাদের সেই পথে অগ্রসর হওয়ার জন্য অন্যতম পথ দেখাবে বলেও তিনি মনে করেন।