জাতীয় সংসদের হুইপ
পঞ্চানন বিশ^াস
* গৌরবের পদ্মা সেতু, আর বাকী ১৫ দিন

এইচ এম আলাউদ্দিন ঃ স্বপ্নের, গৌরবের, শিল্প বিপ্লবের সর্বোপরি দেশের অর্থনৈতিক পরিবর্তনের আশার বাতিঘরের পদ্মা সেতু এখন আর স্বপ্ন নয়, বাস্তব। আগামী ২৫ জুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনের মধ্যদিয়ে জনসাধারণের জন্য খুলে দেয়া হচ্ছে এ সেতু। আর এর মধ্যদিয়েই প্রমাণিত হলো শেখ হাসিনা যা ইচ্ছাপোষণ করেন তা’ তিনি করেন। অথচ এই পদ্মা সেতু নিয়ে যারা ষড়যন্ত্র করেছিল, যারা পদ্মা সেতু ‘হবে না’ বলে মন্তব্য করেছিল তাদের মুখে আজ ছাই পড়েছে। একদিকে পদ্মা সেতু উদ্বোধন হবে অন্যদিকে ষড়যন্ত্রকারীরা মাথা ঠুকবে।
এমন মন্তব্য করে জাতীয় সংসদের হুইপ ও খুলনা-১ আসনের সংসদ সদস্য পঞ্চানন বিশ^াস বলেন, পদ্মাসেতু আমাদের দেশের জন্য একটা অচিন্তনীয় প্রকল্প। যেটি আমরা আগে কখনও চিন্তাও করিনি। পদ্মা সেতুর মধ্যদিয়ে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য যোগাযোগের ক্ষেত্রে এক বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে বলেও মনে করেন তিনি। বিশ^ব্যাংককে চ্যালেঞ্জ করে পদ্মা সেতু যেভাবে এগিয়ে নিয়েছেন এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে তিনি ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, একামাত্র প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ়চেতা পদক্ষেপের ফলেই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা সম্ভব হয়েছে। পদ্মা সেতু চালুর খবরে খুলনাঞ্চলের মানুষের পাশাপাশি তিনি নিজেও খুশি বলেও উল্লেখ করেন পঞ্চানন বিশ^াস।
পদ্মা সেতু উদ্বোধনের মাহেন্দ্রক্ষণকে সামনে রেখে দৈনিক পূর্বাঞ্চলকে দেয়া একান্ত সাক্ষাতকারে জাতীয় সংসদের হুইপ বলেন, দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের জন্য সব রকমের সুবিধা সৃষ্টি করে দিয়েছে এই পদ্মা সেতু। যাতায়াতের ক্ষেত্রে ঘন্টার পর ঘন্টা ফেরিতে বা যানজটে বসে থাকতে হবে না। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের সাথে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের সেতুবন্ধন হবে। ব্যবসা বানিজ্যের ক্ষেত্রেও আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন। মংলা, পায়রা, বেনাপোল, ভোমরা বন্দর আরও গতিশীল হবে। এটি আমাদের সকলের জন্য খুবই আনন্দের। বিশেষ করে দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি পদ্মা সেতু বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার মাধ্যমে বাস্তবায়ন হওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষ তার কাছে চির ঋণি হয়ে থাকলো বলেও উল্লেখ করেন জাতীয় সংসদের এই হুইপ।
পদ্মা সেতুর পাশাপাশি খুলনাঞ্চলের মানুষের আর একটি দীর্ঘদিনের দাবি হচ্ছে বিমান বন্দর। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, রামপালের ফয়লায় এ বিমান বন্দরের কাজও অনেকটা এগিয়ে। আশা করা হচ্ছে, পদ্মা সেতুর পাশাপাশি বিমান বন্দরের কাজও দ্রুত এগিয়ে নেয়ার মধ্যদিয়ে দেশী-বিদেশী বিনিয়োগকারী এবং পর্যটকদের আকৃষ্ট করা হবে। সচল করা হবে মংলা বন্দরকে। তিনি রামপালে নির্মানাধীন খানজাহান আলী(রহ:) বিমান বন্দরের কাজ দ্রুত এগিয়ে নেয়ার দাবি জানান।
পদ্মা সেতু নিয়ে দেশী-বিদেশী ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, যারা বলেছিল জোড়াতালি দিয়ে পদ্মা সেতু হচ্ছে, ভেঙ্গে পড়তে পারে এ সেতু তাদের পদ্মা সেতুতে না যাওয়াই উচিত। এমনকি বিশ^ব্যাংকের অর্থায়ন থেকে সরে যাওয়ার বিষয়টিকেও তিনি প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দলের ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন।
পদ্মা সেতুর পাশাপাশি এ বছরের শেষের দিকে পদ্মা রেল সেতু চালু হতে যাচ্ছে উল্লেখ করে জাতীয় সংসদের হুইপ প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানিয়ে বলেন, রেল লাইনের সর্বশেষ ষ্টেশন খুলনায় করতে হবে। বিষয়টি নিয়ে তিনি জাতীয় সংসদেও কথা বলবেন বলে জানান।
তিনি বলেন, যেহেতু খুলনা থেকে সুন্দরবন সংলগ্ন নলিয়ান পর্যন্ত সড়ক যাচ্ছে, একাধিক সেতু হচ্ছে, খুলনা-মংলা রেল লাইন হচ্ছে এবং সর্বোপরি পদ্মা সেতু চালু হলে মাওয়া থেকে খুলনা পর্যন্ত সড়কের ওপর চাপ বাড়বে সেহেতু এসব বিষয় মাথায় রেখে পরিকল্পিত সড়ক উন্নয়ন দরকার। যেটি সরকার করবে বলেও তিনি আশা করছেন। এভাবে পর্যায়ক্রমে পরিকল্পিত উন্নয়নের মধ্যদিয়ে খুলনাঞ্চলের অর্থনীতিতে বিরাট ভূমিকা রাখবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন।