/ পরীক্ষামূলক থেকে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে লাভজনক ভেনামি চিংড়ি

পরীক্ষামূলক থেকে বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে লাভজনক ভেনামি চিংড়ি

ডুমুরিয়ায় অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার

নিজস্ব সংবাদদাতা, ডুমুরিয়া (খুলনা): খুলনার অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু সায়েদ মোঃ মনজুর আলম বলেছেন, ‘ডুমুরিয়া ও বটিয়াঘাটার সিমান্তবর্তী চক শৈলমারী এলাকায় পরীক্ষামূলক প্রকল্প থেকে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে লাভজনক ভেনামি চিংড়ি চাষ। ভেনামি রোগ প্রতিরোধ ক্ষম এবং ১০০ দিনের মধ্যে এ চিংড়ি বাজারজাত করা সম্ভব। এছাড়া বিদেশের বাজারে এর চাহিদা খুব বেশি। সরকারের পক্ষ থেকে ভেনামি চাষে পলিসি সাপ্লাই দিতে হবে এবং ভেনামি চাষের উপর ম্যাপিং করে ভালো-মন্দ দিক সরকারের কাছে তুলে ধরতে হবে।

মঙ্গলবার সকালে জেবিএস ফুড প্রোডাক্টস এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড নামক খামারে ভেনামি চিংড়ি আহরণ ও চাষী সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

খুলনার অবঃপ্রাপ্ত জেলা মৎস্য কর্মকর্তা প্রফুল্ল সরকারের সভাপতিত্বে সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্যদেন খুলনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ বদরুজ্জামান ও বিএফএফইএ’র ভাইস প্রেসিডেন্ট শেখ কামরুল আলম। আরো বক্তব্যদেন, বটিয়াঘাটা উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ সেলিম সুলতান, টোটাল ফুডসের পরিচালক প্রফেসর মেহেদী হাসান, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী প্রফুল্ল কুমার রায়, জনতা ব্যাংক মোংলা শাখা ব্যবস্থাপক সুশান্ত মন্ডল, চাষী সত্যেন গাইন, বাবলু মন্ডল ও খামার ব্যবস্থাপক প্রসেনজিত রায়।

জানা যায়, চক শৈলমারী এলাকায় এমইউসি ফুড লিঃ এর সার্বিক তত্বাবধায়নে গত তিন বছর যাবত জেবিএস ফুড প্রোডাক্টস নামক খামারে হারভেস্টার পদ্ধতিতে ভেনামী চাষ করা হয়। বর্তমানে ভেনামী চাষ পাইলট প্রকল্প থেকে বাণিজ্যিকভাবে শুরু হয়েছে খামারটিতে। মোট ৫ একর জমির উপর ৬টি পুকুরের মধ্যে ৫টিতে চিংড়ি চাষাবাদ এবং ১টি পুকুর রিজার্ভার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। মে মাসের ২ তারিখে ১২ লাখ ৩৯ হাজার ভেনামী চিংড়ী ছাড়ে। ইন্ডিয়ান বিএমআর হ্যাচারি থেকে এ চিংড়ির পোনা সংগ্রহ করা হয়। এ প্রতিষ্ঠানটি সম্প্রতি ভেনামি চিংড়ির বাণিজ্যিক চাষের অনুমোদন পেয়েছে।

এদিন এক একর জমির ১টি পুকুর থেকে ৫ হাজার ৬’শ কেজি ভেনামী চিংড়ি আহরণ করা হয়। যা হেক্টর প্রতি ১৪ হাজার ৮২৮ কেজি উৎপাদন হয়েছে খামারের এমডি ও এমইউ সি ফুডের পরিচালক শ্যামল দাস জানান, ‘শুরুতে ভেনামির পোনা থাইল্যান্ড থেকে এবং খাদ্যসহ অন্যান্য সামাগ্রি ভারত থেকে আনা হতো। তখন পাইলট প্রকল্প হিসেবে শুরু করা হয়। বর্তমানে ভেনামি চিংড়ি বাণিজ্যিকভাবে চাষ করা হচ্ছে। তবে পোনা থেকে শুরু করে মেডিসিন এবং খাদ্য সামগ্রী আমদানির উপর নির্ভর করে। এই আমদানির উপর কিছু ট্যাক্স ধরার কারণে উৎপাদন খরচ কেজি প্রতি ৪৮০ থেকে ৪৯০ টাকা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। যদি সরকারের পক্ষ থেকে ট্যাক্সমুক্তসহ লোকালভাবে খাদ্য ও স্বাস্থ্যকর পোনা উৎপাদন করা যেত, তাহলে ৪০০ টাকার নিচে খরচ দাঁড়াবে। এতে চাষের সংখ্যাও বেড়ে যাবে শতগুণ। তেমনি বাড়বে উৎপাদন ও এক্সপোর্ট। বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করে স্বাবলম্বি হতে পারবে চাষীরা।