স্টাফ রিপোর্টার: জেলার কয়রায় পুলিশ কনস্টেবল মোঃ মফিজুল ইসলাম হত্যা মামলায় দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আছের আলী মোড়লসহ চার আসামীকে জেলহাজতে প্রেরণ করেছে আদালত। গতকাল বুধবার দুপুরে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে জামিনের আবেদন করলে শুনানী শেষে আসামীদের কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন বিচারক সুনান্দ বাগচী। আসামীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন এ্যাড. এমএম মজিবুর রহমান।
কারাগারে প্রেরিত অন্য আসামীরা হল- সাবেক ইউপি সদস্য নাছের আলী মোড়ল, মোস্তফা রিপন মোড়ল ও আঃ রউফ শেখ। মামলাটি তদন্ত শেষ পর্যায়ে অভিযোগপত্র চূড়ান্ত করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) খুলনা। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন পেলে শিগগিরই তা আদালতে দাখিল করা হবে জানিয়েছেন পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান। ২০১৩ সালের ৯ মার্চ কয়রা উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশির গোলখালী গ্রামে পুলিশ কনস্টেবল মোঃ মফিজুল ইসলাম হত্যাকান্ডের এ ঘটনা ঘটে।
ইতোপূর্বে সিআইডি’র দাখিলকৃত তদন্ত প্রতিবেদন সূত্রে জানা গেছে, কয়রা দক্ষিণ বেদকাশির গোলখালী গ্রামে ৯ বছর আগে আসামী ধরতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের গুলিতে কনস্টেবল মোঃ মফিকুল ইসলাম নিহত হন। ওইদিন পুলিশ একটি মামলার আসামী আব্দুল গনি সরদারের বাড়ীতে অভিযান চালিয়েছিল। এ অভিযানের আগেই গনি সরদারের প্রতিপক্ষ নূরুল আমীন মোড়লের চাচাতো ভাই নাছের আলী মোড়ল, আছের আলী মোড়ল, গোলাম মোস্তফা রিপন, রউফ শেখ, তাইজুল গাজী ও দাদরিজ শেখসহ কয়েকজন বন্দুক, গুলি, লাঠিসোঁটা, হাতুড়িসহ অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে সেখানে হাজির হয়। তারা আব্দুল গনি সরদারকে বাড়িতে না পেয়ে তাঁর স্কুলপড়ুয়া শিশু সন্তান সিরাজুলকে ধরে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এসময় আব্দুল গনির স্বজন ও প্রতিবেশীদের আত্মচিৎকারে গ্রামের সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসে। ওই পুলিশ সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন। একপর্যায়ে পুলিশের পেছনে অবস্থান নেয়া রউফ শেখ, আছের আলীর কাছে থাকা বন্দুক দিয়ে গুলি বর্ষণ করে। এতে কনস্টেবল মোঃ মফিকুল ইসলামের বাঁ পায়ের হাঁটুর পেছনে গুলিবিদ্ধ হন। পরে হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান তিনি। এঘটনায় আংটিহারা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এস আই মোঃ মমিনুর রহমান বাদী হয়ে কয়রা থানায় মামলা করেন। কয়েক দফায় তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের পর ২০১৫ সালে সিআইডি পুলিশ পরিদর্শক সরদার মোঃ হায়াত আলী আদালতে একটি অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন। এরপর আসামীপক্ষ উচ্চ আদালতের মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞাজারি করলে মামলাটি স্থবির হয়ে পড়ে। সর্বশেষ মামলাটি পুনঃতদন্তের দায়িত্ব পায় পিবিআই।
পিবিআই খুলনার পুলিশ সুপার সৈয়দ মুশফিকুর রহমান বলেন, ‘কয়রায় পুলিশ হত্যা মামলার চার আসামীকে জেলহাজতে প্রেরণে করেছে আদালত। তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে রিমান্ডের আবেদন করা হবে। অন্যদিকে, চাঞ্চল্যকর এ হত্যাকান্ডের তদন্ত প্রতিবেদন অনুমোদনের জন্য সদর দপ্তরে প্রেরণ করা হয়েছে। ওই মামলায় ৩৩ জনের সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। বাকী আসামীদেরও গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।’