পূর্বাঞ্চল ডেস্ক ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে উদ্বোধন করবেন ‘উন্নয়নের নতুন জোয়ার, বদলে যাওয়া কক্সবাজার’ জমকালো উৎসবটি। বদলে যাওয়া এই কক্সবাজারের সাফল্য তুলে ধরতে বৃহস্পতিবার সৈকতের লাবণী পয়েন্টে এই উৎসব অনুষ্ঠিত হবে। এ দিন সৈকতের অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মোস্তফা কামাল, ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কয়েকজন উদ্ধতন কর্মকর্তাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ। এই উৎসব আয়োজন করছে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ। বাস্তবায়ন করছে কক্সবাজার জেলা প্রশাসন।
যেখানে তুলে ধরা হবে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা সংগ্রাম, ঘুরে দাঁড়ানো বাংলাদেশের ইতিহাস উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হচ্ছে বাংলদেশ। দ্রুত বদলে যাচ্ছে দেশ। বদলে যাচ্ছে পর্যটন জেলা কক্সবাজারের চিত্র। এই জেলার সামগ্রিক উন্নয়ন চোখে পড়ার মতো। ছোট-বড় ৭৭টি উন্নয়ন প্রকল্পে ব্যয় হচ্ছে ১ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের সাগর ছোঁয়া রানওয়ে। রেল পথ, সড়ক পথ, গভীর সমুদ্র বন্দর, বিদ্যুৎ প্রকল্প, বিশেষ পর্যটন কেন্দ্র সহ অনেক মেগা প্রকল্পের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. মামুনুর রশীদ বাসস’কে জানান, প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের তত্ত্বাবধানে উৎসবটি বাস্তবায়ন করছে জেলা প্রশাসন। আশা করা হচ্ছে উৎসবে লক্ষাধিক মানুষের জমায়েত হবে। এর বাইরে এখানে বেড়াতে আসা পর্যটকরা তো রয়েছে। অনুষ্ঠান স্থলে চারটি স্টল বসানো হবে। যেখানে বঙ্গবন্ধু, বাংলাদেশ, প্রধানমন্ত্রী ও কক্সবাজারের সামগ্রিক উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরা হবে। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিন প্রেরিত অনুষ্ঠানমালার সূচিতে এই উৎসবকে দুই পর্বে ভাগ করা হয়েছে। প্রথম পর্ব অনুষ্ঠান সকাল ১০টায় শুরু হয়ে পর্যায়ক্রমে চলবে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত। এর মধ্যে রয়েছে, জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন, স্বাগত বক্তব্য, উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ বিষয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন। সকাল সাড়ে ১০টায় কবিতা আবৃতি করবেন বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক কবি মুহাম্মদ নুরুল হুদা। এর পর স্থানীয় শিল্পীদের পরিবেশনায় দেশাত্ববোধক গান ও পল্লীগীতি, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে স্কুল শিক্ষার্থীদের সংলাপ, স্কুল শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। পরে স্কুল পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হবে। বেলা পৌনে ১টায় স্থানীয় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠির প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব শুরু হবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায়। অতিথিদের আগমনের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এরপর রয়েছে স্থানীয় শিশু শিল্পীদের অংশগ্রহণে সমবেত জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা। প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের সচিব ফাতিমা ইয়াসমিনের স্বাগত বক্তব্যের পর ‘জোরশে চলো বাংলাদেশ’ বাংলাদেশ শীর্ষক প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শিত হবে। এরপর সন্ধ্যা ৬টা ৫০ মিনিটে স্থানীয় উন্নয়নের উপর উপস্থাপনা। এতে বক্তব্য রাখবেন, ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। প্রধানমন্ত্রীর মূখ্যসচিব ড. আহমদ কায়কাউসের সঞ্চালনায় উন্নয়নের সুবিধাভোগীদের বক্তব্যের পর অনুষ্ঠানের সভাপতি অর্থমন্ত্রী আ.হ.ম মুস্তফা কামাল বক্তব্য রাখবেন। সন্ধ্যা ৭টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রীকে সম্মান জানিয়ে ‘ও জোনাকি’ গানের ভিডিওচিত্র চিত্রায়ন করা হবে। এরপর ৭টা ২০ মিনিটে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যের পরপরই ‘একটি বাংলাদেশ তুমি জাগ্রত জনতার’ গানের সাথে দলীয় নৃত্য ও সৈকতের আকাশ রাঙানো হবে হরেক রঙের আতশবাজিতে। সবশেষে মঞ্চ মাতাবেন দেশের জনপ্রিয় ব্যান্ড ফুয়াদ এন্ড ফ্রেন্ডস ও চিরকুট। উল্লেখ্য, গত বছরের ২৪ নভেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ প্লেনারি সভায় বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের অনুমোদন পায়। এর মধ্য দিয়ে উত্তরণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ পাঁচ বছর প্রস্তুতির সময় পেয়েছে। ২০২৬ সালের ২৪ নভেম্বর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে গণ্য হবে বাংলাদেশ।