নিজস্ব সংবাদদাতা, কয়রা (খুলনা): সুন্দরবনে বনদস্যুদের বেপরোয়া অত্যাচারে পেশাজীবি জেলে বাওয়ালীরা চরম আতঙ্কে রয়েছেন। সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল জেলে বাওয়ালীরা প্রতিনিয়ত সুন্দবনে মাছ ধরা অবস্থায় বনদস্যুদের হাতে অপহরণ, গুম, মুক্তিপণ আদায় ও শারীরিক নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছে।
সুন্দরবনের পাশ ঘেষে বসবাসরত ৯০ ভাগ মানুষ সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল। কেউ মাছ ধরা, মধু আহরণ, কাকড়া ধরা, কেউ মাছ কাকড়া ও মধু ব্যবসায়ে থেকে জীবিকা উপার্জন করে সংসার নির্বাহ করে আসছে। গত ৫ আগষ্ট ২০২৪ এর পর থেকে বনদস্যুরা সুন্দরবন তাদের নিজস্ব দখলে রেখেছে। জেলেরা কে কোথায় কোন নদীতে মাছ ধরবে অভয়ারণ্য এলাকাসহ সকল বিষয় বনদস্যুদের নির্দেশে হচ্ছে। এর সাথে জড়িত রয়েছে এলাকার মাছ ব্যবসায়ীরা।
এখানেই শেষ নয় এদের নেপথ্যে সহায়তা করছে রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরা। বনদস্যুদের প্রয়োজনীয় বাজার-ঘাটসহ এলাকার খবর বহন করেন মাছ ব্যবসায়ীরা। মাছ ব্যবসায়ীরা জেলেদের নিকট থেকে গোন প্রতি অর্থাৎ সপ্তাহে ২ থেকে ৩ হাজার টাকা চাদা আদায় করে বনদস্যুদের অর্ধেক এবং নিজেরা অর্ধেক ভাগ বাটোয়ারা করেন।জেলেদের অতিকষ্টের উপার্জিত টাকার সিংহ ভাগ দিতে হচ্ছে বনদস্যু ও মাছ ব্যবসায়ীদের। কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী ব্যবসার আড়ালে বনদস্যুদের সাথে জেলেদের টোকেনের মাধ্যমে টাকার চুক্তিতে মাছ ধরার ব্যবস্থা করে দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। এসকল মাছ ব্যবসায়ীরা আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথেও সখ্যতা রেখে অপরাধমূলক কাজ অব্যহত রেখেছে। আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে যোগাযোগ থাকায় প্রকাশ্য জনসম্মুখে বনদস্যুদের সাথে মোবাইল ফোনে টাকার চুক্তিসহ সকল বিষয় সংবাদ আদান-প্রদান করে থাকে।
আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে মাঝে মধ্যে এ সকল অসাধু মাছ ব্যবসায়ীদের চায়ের দোকানে শলা-পরামর্শ করতে দেখা গেছে। জেলে বাওয়ালীরা বনদস্যুদের ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। তারা নিরবে বনদস্যুদের অত্যাচার সহ্য করে যাচ্ছে। গত ৫ আগস্টের পূর্বে সুন্দরবন যেভাবে বনদস্যুমুক্ত ছিল। এমনি একটি সুন্দর পরিবেশ পরিস্থিতি কামনা করছেন জেলে বাওয়ালীরা।