১৯ হাজার দুইশ’ শিশুর কন্ঠে
বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ

স্টাফ রিপোর্টার ঃ বর্ণাঢ্য আয়োজন, বিপুল উপস্থিতি ও দেশপ্রেমে উজ্জীবিত জনতার বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসের মধ্য দিয়ে খুলনায় শিশু বঙ্গবন্ধুকন্ঠে ধ্বনিত হলো জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ। শিশু বঙ্গবন্ধুরা দৃঢ়ভাবে উচ্চারণ করলো ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। এর মধ্য দিয়ে ক্ষণিকের জন্য ইতিহাস যেন ফিরে গেলো ১৯৭১ সালের ৭ মার্চের সেই মাহেদ্রক্ষণে। বঙ্গবন্ধু জনতার মধ্যে এলেন, স্বাধীনতার তীব্র আকাক্সক্ষায় উজ্জীবিত কৃষক, শ্রমিক, ছাত্র-জনতা হাত নেড়ে অভিবাদন জানালো তাদের প্রাণপ্রিয় নেতাকে। শুরু হলো সেই কন্ঠের অনুরণন।
বিভাগীয় শহর খুলনায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি, বাংলাদেশের মহান স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ পাঠ করলো ১২৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ১৯ হাজার ২০০ শিক্ষার্থী। খুলনা জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এবং চাইল্ড ইন্টিগ্রিটি ও শিশুবঙ্গবন্ধু ফোরামের ব্যবস্থাপনায় গতকাল শনিবার বিকেলে জেলা স্টেডিয়ামে অনুষ্ঠানের শুরুতে ছিলো জাতীয় সংগীতের সাথে জাতীয় পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ। এরপরই দিনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রধান আকর্ষণ বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণ পাঠ। ভাষণের এক পর্যায়ে শিশু বঙ্গবন্ধুরা বঙ্গবন্ধুর ভাষায় উচ্চারণ করেন ‘২৮ তারিখে কর্মচারীরা গিয়ে বেতন নিয়ে আসবেন। এরপর যদি বেতন দেয়া না হয়, আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের ওপর আমার অনুরোধ রইল প্রত্যেক ঘরে ঘরে দুর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা’ কিছু আছে তাই নিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা যা আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দেবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে।’
ভাষণ পাঠের পরে খুলনার বিভাগীয় কমিশনার ড. মুঃ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার স্বাধীনতা, মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে সোনার বাংলা গড়ার শপথবাক্য পাঠ করান শিশু বঙ্গবন্ধুদের। মঞ্চে উপস্থিত অতিথিবৃন্দ তাদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
এ সময় ১৯৭১ সালে ৭ মার্চে ঢাকা রেসকোর্স ময়দানে উপস্থিত থাকা ও বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক সহচর এমন আটজন ব্যক্তিকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক, খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য সেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদ, বাগেরহাট জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিব বাহিনীর খুলনা আঞ্চলিক প্রধান শেখ কামরুজ্জামান টুকু, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি মকবুল হোসেন মিন্টু ও ফুলতলা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শেখ আকরাম হোসেন।
খুলনার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হেলাল হোসেনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাগেরহাট-১ আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন। এ সময় আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, জাতীয় সংসদের হুইপ পঞ্চানন বিশ^াস, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য আকতারুজ্জামান বাবু, খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, পুলিশ কমিশনার খন্দকার লুৎফুল কবির, সাবেক সিনিয়র সচিব মোঃ আবদুস সামাদ, খুুলনা মহানগর আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এমডিএ বাবুল রানা, জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডঃ সুজিত অধিকারী,খুলনা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এ্যাডঃ সাইফুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা মোঃ আলমগীর কবীরসহ সরকারি-বেসরকারি দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, শিক্ষক, ও অভিভাবকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।