/ বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা: ডুমুরিয়ার কৃষ্ণনগরে শিক্ষার্থী ও পানিবন্দি পরিবারগুলোর নিত্যদিনের দুর্ভোগ

বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা: ডুমুরিয়ার কৃষ্ণনগরে শিক্ষার্থী ও পানিবন্দি পরিবারগুলোর নিত্যদিনের দুর্ভোগ

খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার কৃষ্ণনগর গ্রামের একটি বাঁশের সাঁকো বছরের পর বছর ধরে হয়ে উঠেছে ১০টি পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথ এবং একটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য জীবনের ঝুঁকিপূর্ণ সেতু। মাত্র ২০০ ফুট রাস্তার মেরামতের অভাবে এই অবর্ণনীয় দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন স্কুলের ৬৬ জন শিক্ষার্থীসহ এলাকার মানুষজন।

স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, এই এলাকার একটি মূলচালা মাটির রাস্তা বছরজুড়েই পানির নিচে থাকে। ফলে কৃষ্ণনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং আশেপাশের পরিবারগুলো বর্ষা মৌসুমে চরম ভোগান্তিতে পড়ে। রাস্তাটি মেরামতের দাবি বারবার জানানো হলেও তা কানে তোলে না স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা। তারা নিজেরাও এই বাঁশের সাঁকো পার হয়ে চলাচল করেন, তবুও নেই কার্যকর কোনো ব্যবস্থা।
স্থানীয় বাসিন্দা আশীষ হালদার (৪২), যতিন হালদার (৬০), কৃষ্ণ হালদার (৫০) ও তুষার হালদার বলেন, “আমরা সারা বছর পানিবন্দি অবস্থায় থাকি। ঘর থেকে বের হতে গেলে বাঁশের সাঁকো ছাড়া উপায় নেই। বাচ্চারা প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে স্কুলে যায়। অথচ মাত্র ২০০ ফুট রাস্তা উঁচু করলেই আমাদের দুঃখ দূর হতো।”

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক বিভাষ কুমার মণ্ডল বলেন, “আমার স্কুলের ৬৬ জন শিক্ষার্থী প্রতিদিন বাঁশের সাঁকো পার হয়ে ক্লাসে আসে। বিষয়টি খুবই উদ্বেগজনক। সরকারি বরাদ্দের সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও আমরা নিজেদের স্কুল বাজেট থেকে সাঁকো তৈরি করেছি। তবে এটি স্থায়ী সমাধান নয়।”

ইউপি সদস্য অমিতেষ কুমার বালা বলেন, “বিগত কিছুদিন ধরে ইউনিয়নে কোনো উন্নয়ন কাজ পাচ্ছি না। তারপরও চেষ্টা করছি। ঘের মালিকদের অনুরোধ করেছি, কিন্তু তারা রাস্তাটি উঁচু করতে নারাজ।”
২নং রঘুনাথপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মনোজিৎ বালা বলেন, “আমি সমস্যাটি জানি। বাঁশের সাঁকোর নিচের রাস্তাটি উঁচু করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে।”

শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীরা স্থানীয় প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, যেন অবিলম্বে এই ২০০ ফুট রাস্তাটি মেরামত করে জলাবদ্ধতার সমাধান করা হয়। শিক্ষার্থীদের নিরাপদ চলাচলের পাশাপাশি স্থানীয় ১০টি পরিবারের স্বাভাবিক জীবনযাপনের জন্য এটি খুবই জরুরি।