/ বাগেরহাটে কমলো আসন, গাজীপুরে বাড়লো: ইসির চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ

বাগেরহাটে কমলো আসন, গাজীপুরে বাড়লো: ইসির চূড়ান্ত সীমানা প্রকাশ

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৩০০ আসনের চূড়ান্ত সীমানা প্রজ্ঞাপন জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার (৪ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, “ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য ৩০০ সংসদীয় এলাকার সীমানা নির্ধারণ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে। খুব শিগগিরই তা সরকারি গেজেটে প্রকাশ করা হবে।”

নতুন প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, দ্বাদশ সংসদের ২৬১ আসনের সীমানা অপরিবর্তিত থাকছে। তবে ৩৯টি আসনে ছোটখাটো পরিবর্তন আনা হয়েছে। বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হলো গাজীপুরে একটি আসন বাড়ানো এবং বাগেরহাটে একটি আসন কমানো। ফলে গাজীপুরে এখন মোট ছয়টি আসন থাকবে, আর বাগেরহাটে কমে দাঁড়াল তিনটি আসনে।

ইসির সীমানা নির্ধারণ কমিটি দীর্ঘদিনের কাজ শেষে গত ৩০ জুলাই নতুন সীমানার খসড়া প্রকাশ করে। খসড়া প্রকাশের পর সংসদীয় আসন নিয়ে দাবি-আপত্তি ও মতামত দেওয়ার জন্য সময়সীমা নির্ধারণ করা হয় ১০ আগস্ট পর্যন্ত। এ সময়ের মধ্যে সর্বমোট ১ হাজার ৮৯৩টি আবেদন জমা পড়ে। এর মধ্যে ৩৩ জেলার ৮৪টি আসন সম্পর্কিত ছিল ১ হাজার ১৮৫টি আপত্তি এবং ৭০৮টি সুপারিশ বা পরামর্শ।
ইসি সচিব জানান, “এ আপত্তিগুলো এসেছে পক্ষ-বিপক্ষ উভয় দিক থেকেই। আমরা সবার বক্তব্য শুনেছি।”

২৪ থেকে ২৭ আগস্ট পর্যন্ত চার দিনব্যাপী এসব দাবি-আপত্তি ও সুপারিশের ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচন কমিশনের সংশ্লিষ্ট সদস্যরা পৃথক সেশন করে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, প্রার্থী, নাগরিক ও স্বার্থসংশ্লিষ্ট গোষ্ঠীর বক্তব্য শোনেন। পর্যালোচনা শেষে কমিশন প্রয়োজনীয় সংশোধনী এনে চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশ করে।

আগামী জাতীয় নির্বাচন ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে এখন সরব আলোচনা। বিশেষ করে আসন পুনর্বিন্যাসের ফলে স্থানীয় পর্যায়ে নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন কৌশলগত প্রস্তুতির ইঙ্গিত মিলছে। গাজীপুরে নতুন আসন যোগ হওয়ায় সেখানে রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও তীব্র হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। অন্যদিকে, বাগেরহাটে একটি আসন কমে যাওয়ায় স্থানীয় রাজনীতিতে ভারসাম্যের পরিবর্তন ঘটতে পারে।

নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা জানান, সংসদীয় আসনের সীমানা নির্ধারণ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ। এটি নির্বাচনী প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও গ্রহণযোগ্যতার সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত। তাই দাবি-আপত্তি শোনা থেকে শুরু করে পর্যালোচনা পর্যন্ত প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার চেষ্টা করা হয়েছে।

চূড়ান্ত প্রজ্ঞাপন প্রকাশের মধ্য দিয়ে আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের অন্যতম প্রধান প্রস্তুতিমূলক ধাপ শেষ হলো। এখন কমিশনের সামনে বড় চ্যালেঞ্জ হলো নির্ধারিত সময়সূচি অনুযায়ী নির্বাচন আয়োজন এবং তা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করা।