বাগেরহাটে কচুয়া উপজেলায় সড়ক মেরামতের দুই মাস না পেরোতেই দেখা দিয়েছে ভাঙ্গন। এমনকি স্থানীয় বাসিন্দাদের হাতের চাপে সহজেই উঠে যাচ্ছে সড়কটির কার্পেটিং। জেলার কচুয়া উপজেলার ফতেপুর বাজার থেকে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের এক কিলোমিটার এলাকার কাজ করা হয় দুই মাস আগে। স্থানীয়দের অভিযোগ নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সড়ক নির্মান ও পর্যাপ্ত প্যারাসাইলিং না দেওয়ার কারনে সড়কটি ভেঙ্গে যাচ্ছে।
সরজমিনে জেলার কচুয়া উপজেলার ফতেপুর বাজার থেকে গোপালপুর ইউনিয়নের চন্দ্রপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা যায়, মাত্র দুইমাস আগে পুনঃনির্মান করা এ সড়কটির অন্তত ৭টি স্থানে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। যার অধিকাংশ ভাঙ্গন গুলো হয়েছে সড়কটির পাশে থাকা বিভিন্ন পুকুরের পাড় থেকে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, দীর্ঘদিন ধরে ভাঙাচোরা সড়কটির জন্য ভোগান্তিতে ছিলেন তারা। সম্প্রতি রাস্তাটির নির্মাণকাজ শুরু হলে গ্রামবাসী আশা করেছিলেন যে তাদের দুর্ভোগের অবসান হবে। কিন্তু নির্মাণের মাত্র দুই মাসের মধ্যেই সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ভাঙন ধরে, যা উন্নয়নের নামে সরকারি অর্থের অপচয় ছাড়া আর কিছুই নয়।
চন্দ্রপাড়া গ্রামের বাসিন্দা বৃদ্ধ নওশের শেখ অভিযোগ করে বলেন, সড়কটি নির্মাণে নিম্নমানের খোয়া ও বিটুমিন ব্যবহার করা হয়েছে। আমরা গ্রামবাসি বারবার এ ব্যাপারে আপত্তি জানালেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মীরা আমাদের কথা শোনেনি।
একই গ্রামের জসিম মিনা বলেন, সড়কের দুই পাশে থাকা পুকুরের পাড়ে মাত্র তিনটি স্থানে প্যারাসাইলিং দেওয়া হয়েছে। বাকি অংশে সুরক্ষাব্যবস্থা না থাকায় রাস্তা ভেঙে যাওয়ার অন্যতম কারন।
একই গ্রামের আরিফ শেখ জানান, এই সড়কটির অব্যবস্থাপনা আমাদের ভোগান্তি কেবল বাড়িয়েছে। তিনি বলেন, “রাস্তার কাজ শুরু হওয়ায় আমরা ভেবেছিলাম কষ্ট লাঘব হবে, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আগামীতেও এই সমস্যা থেকেই যাবে।”
বাগেরহাট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কচুয়া উপজেলার ফতেপুর বাজার থেকে গোপালপুর ইউনিয়ন পরিষদ সড়কের চন্দ্রপাড়া গ্রাম থেকে ১ কিলোমিটার সড়কের পুনঃনির্মান ও প্রশস্ত করনের কাজ শুরু হয় গত ফেব্রæয়ারি মাসের ৩ তারিখ। যা শেষ হয় গত এপ্রিল মাসের ১৫ তারিখ। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান তুবা এন্টারপ্রাইজ এই কাজ সম্পন্ন করেছে। ইতোমধ্যে এই কাজের সম্পূর্ণ অর্থ গ্রহন করেছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি। এ সড়কটি নির্মান কাজে ব্যায় ধরা হয়েছিলো ৯০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা।
বাগেরহাট এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ শরীফুজ্জামান বলেন, কাজ সম্পন্ন হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা দায় (সিকিউরিটি পিরিয়ড) এখনও রয়েছে। তাদের জামানত এখনও পরিশোধ করা হয়নি। সড়কের যেসব জায়গায় ভেঙ্গেছে সেসব জায়গা ঠিকাদার নতুন করে সংস্কার করবে। না করলে তার জামানতের অর্থ দিয়ে কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানান এ কর্মকর্তা।