একই এলাকায় ওজোপাডিকো
এবং পল্লী বিদ্যুতের লাইন !

এইচ এম আলাউদ্দিন ঃ ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিষ্ট্রিবিউশন কোম্পানীর ভৌগলিক এলাকা। হঠাৎ ঢুকে পড়ে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। প্রতিযোগিতা চলে কে কতো দ্রুত লাইন সম্প্রসারণ করতে পারে। এজন্য কার জমি কোথায়, কোন বাড়িটির সীমানা কোন পর্যন্ত এসবের কোন বাক-বিচার না করেই বিলের মধ্যেই লাইন টানা হয়। কিন্তু যখন বাড়িঘর করা হলো তখন দেখা যায়, ঘরের উপর দিয়েই চলে গেছে বিদ্যুতের লাইন। উপায় না পেয়ে বাড়ির মালিক প্লাষ্টিকের পাইপ দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের খোলা তার আবৃত্ত করে দিলেও চরম ঝুঁকির মধ্যেই তাদের দিন কাটাতে হচ্ছে। বাড়ির নারী-শিশুসহ সকলেই ছাদে উঠতে গিয়ে অনেকটা ঝুঁকির মধ্যে থাকছেন। যে কোন সময় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হওয়ারও আশংকায় থাকছেন তারা। এমনকি বাড়িটি দোতলা করারও কোন সুযোগ নেই। এভাবেই বিদ্যুতের তারের সাথে বসবাস করছেন তারা।
খুলনার লবণচরা থানাধীন জলমা ইউনিয়নের মধ্য হরিণটানা অর্থাৎ রিয়া বাজার এলাকার পূর্ব পাশের পল্লী বিদ্যুতের লাইন সম্প্রসারণের চিত্র এটি।
এদিকে, ঝুঁকিপূর্ণ ওই বৈদ্যুতিক লাইনটি অপসারনের জন্য গ্রাহকের পক্ষ থেকে আবেদন করা হলেও তাকে ৪১ হাজার টাকার একটি বিল ধরিয়ে দেয়া হয়। যেটি প্রদানে অপারগ হওয়ায় পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ওই লাইনটি সরিয়ে নিচ্ছে না।
সম্প্রতি সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই এলাকার ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুতের প্রতিযোগিতার চিত্র। একই বাড়িতে রয়েছে ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইন। অর্থাৎ ওজোপাডিকোতে লোডশেডিং চললে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বিদ্যুৎ যেমন তাদের ভরসা, তেমনি পল্লী বিদ্যুতের বিদ্যুৎ চলে গেলে ওজোপাডিকোর বিদ্যুতেই চলে তাদের কার্যক্রম। একই বাড়িতে কিভাবে দু’টি প্রতিষ্ঠানের লাইন জানতে চাইলে ওজোপাডিকোর বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৪এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো: মামুনুর রহমান বলেন, গ্রাহক কিভাবে একই বাড়িতে দু’টি প্রতিষ্ঠানের বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়েছেন সেটি দেখতে হবে। পল্লী বিদ্যুতের কাছ থেকে গ্রাহক হয়তো পরে লাইন নিয়েছেন। সুতরাং এটি বৈধ না অবৈধ সেটি না দেখে মন্তব্য করা যাবে না।
এদিকে, খুলনা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির এজিএম(এমএস) মো: তারেক বিন আব্দুল মান্নান বলেন, হরিণটানার রিয়া বাজার এলাকার একটি বাড়ির উপর দিয়ে লাইন চলে যাওয়ার বিষয়ে একটি আবেদন তার কাছে আছে। এজন্য তিনি ৪১ হাজার ২৮২টাকার একটি বিল করে সমিতির অনুকুলে জমা দেয়ার জন্য প্রস্তাবনা দিয়েছেন। এর বাইরে তার আর কিছু করার নেই। তবে সেটি যদি ঝুঁকিপূর্ণ লাইনের তালিকায় থাকে তাহলে কর্তৃপক্ষ পরবর্তী ব্যবস্থা নেবেন। সে ক্ষেত্রে গ্রাহককে সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বা ডিজিএম(টেকনিক্যাল) এর সাথে যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
গ্রাহক মো: জালাল মোল্লা তার লিখিত আবেদনে উল্লেখ করেন, হরিণটানা এলাকার তার বাড়ির ওপর থেকে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে। যে কোন সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা হতে পারে বলেও তিনি আশংকা করেন। তিনি বলেন, তার বাড়ির পাশে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করার জায়গা থাকা সত্বেও বাড়ি নির্মাণের পর তার অনুপস্থিতিতে বিদ্যুৎ লাইন নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েকবার অভিযোগ করার পরও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
প্রাপ্ত অভিযোগের ভিত্তিতে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ওই বাড়ির লোকজন ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় শুধু বসবাসই করছেন না, বরং ছাদের ওপর দিয়ে বয়ে যাওয়া পল্লী বিদ্যুতের তার প্লাষ্টিকের পাইপ দিয়ে আবুত্ত করে রেখেছেন। সেখান থেকে তারা অনায়াসে চলাফেরা করছেন। এতে ওই পাইপ ফেটে যে কোন সময় বিদ্যুতায়িত হওয়ারও আশংকা করা হচ্ছে।
এছাড়া পাশর্^বর্তী ‘মায়ের কোল’ নামের বাড়িটিতে ওজোপাডিকো ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লাইন টানা রয়েছে। একটি বাড়িতে একটি প্রতিষ্ঠানের সংযোগ থাকার পরও আরও একটি প্রতিষ্ঠান কিভাবে পুন:রায় নতুন সংযোগ দিলো সেটি নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। যদিও এ বিষয়টি নিয়ে কথা হলে ওজোপাডিকো ও পবিস কর্মকর্তারা তাদের দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।