# ১০ জেলার মধ্যে শীর্ষে খুলনা, আইসোলেশনে ৮ হাজার ৭৮৪জন

স্টাফ রিপোর্টার ঃ খুলনা বিভাগের দশ জেলায় ক্রমান্বয়ে বাড়ছে করোনা রোগী। চলতি মাসের বিগত ১৭ দিনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগীর মৃত্যু হয়েছে বিগত ২৪ ঘন্টায়। যার সংখ্যা ১৮জন। অবশ্য বিগত দেড় বছরের মধ্যে বিভাগে ২৪ ঘন্টায় মৃত্যুর সংখ্যা এটিই ছিল সর্বোচ্চ। এছাড়া করোনাভাইরাস শনাক্তের হারও উর্ধমূখী রয়েছে। বিগত ২৪ ঘন্টায় বিভাগের ১০ জেলায় ৭৬৫ জনের করোনা শনাক্ত হয় বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক দপ্তরের দৈনিক প্রতিবেদনে দেখা যায়।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: রাশেদা সুলতানা বলেন, চলতি মাসের মধ্যে বিগত ২৪ ঘন্টায় বিভাগে ১৮জনের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে খুলনায় চারজন, বাগেরহাটে একজন, যশোরে তিনজন, মাগুরায় একজন, ঝিনাইদহে একজন, কুষ্টিয়ায় চারজন, চুয়াডাঙ্গায় দু’জন এবং মেহেরপুরে দু’জনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ গতকাল সকালে দেয়া বিগত ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র সাতক্ষীরা ও নড়াইলে কারও মৃত্যু হয়নি। এছাড়া এ পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় সর্বমোট ৭৬৭ জনের মৃত্যু হয় করোনায়। এর মধ্যে খুলনায় ২০১জন, বাগেরহাটে ৬৩ জন, সাতক্ষীরায় ৫৫জন, যশোরে ৯৯জন, নড়াইলে ২৮জন, মাগুরায় ২৪জন, ঝিনাইদহে ৬১জন, কুষ্টিয়ায় ১৪০জন, চুয়াডাঙ্গায় ৬৬জন এবং মেহেরপুরে ৩০জনের মৃত্যু হয়েছে। অর্থাৎ বিভাগের মধ্যে সর্বোচ্চ মৃত্যুর তালিকায় রয়েছে খুলনা জেলা।
করোনা হাসপাতালে তিনজনের মৃত্যু ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আওতাধীন করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে গতকাল আরও তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন, খুলনার ফুলতলার দামোদর এলাকার শাহিনুর বেগম(৪০), নগরীর হাজী মহসীন রোডের জয়নাব বেগম(৭৮) এবং সাতক্ষীরার শ্যামনগর থানার হরিনগর এলাকার আশুতোষ মন্ডল(৩৪)। খুলনা করোনা হাসপাতালের মুখপাত্র ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার বলেন, ফুলতলার শাহিনুর বেগম ১৫ জুন ভর্তি হয়ে গতকাল ভোররাত সাড়ে তিনটায়, হাজী মহসীন রোডের জয়নাব বেগম ১১ জুন ভর্তি হয়ে গতকাল সকাল পৌনে ১০টায় এবং শ্যামনগরের আশুতোষ মন্ডল গতকাল ভর্তি হয়ে গতকাল দুপুর ১২টা ২০ মিনিটে মৃত্যুবরণ করেন।
এছাড়া বেসরকারি প্রতিষ্ঠান খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল একজনের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: গাজী মিজানুর রহমান জানিয়েছেন।
খুমেক ল্যাবে শনাক্ত ২২২ ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গতকাল ৫৬২টি নমুনা পরীক্ষার পর ২২২ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে বলে কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ জানিয়েছেন। এর মধ্যে খুলনার ১৫১জন, বাগেরহাটের ৪২জন, সাতক্ষীরার সাতজন, যশোরের ১৪জন, নড়াইলের পাঁচজন এবং ঝিনাইদহ, পিরোজপুর ও বরিশালের একজন করে রয়েছেন।
এছাড়া গতকাল সকালে বিগত ২৪ ঘন্টার খুলনা জেলার হিসাব তুলে ধরে সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার(রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা: সাদিয়া মনোয়ারা উষা বলেন, ওই সময়ে খুলনা মেডিকেল ও গাজী মেডিকেলের পিসিআর ল্যাবসহ জেলার নয়টি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নগরীর অন্যান্য কেন্দ্রগুলোতে এন্টিজেন পরীক্ষাসহ সর্বমোট ৬৫৬টি নমুনা পরীক্ষায় ১৮১ জনের করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গাজী মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গতকাল ১৬টি নমুনা পরীক্ষার পর ১৩জনেরই করোনা শনাক্ত হয় বলে হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জানান। তিনি বলেন, বর্তমানে ওই হাসপাতালে ৭৭ জন রোগী ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে সাতজন রয়েছেন আইসিইউতে।
অপরদিকে, বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা: রাশেদা সুলতানা বলেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত বিভাগের ১০ জেলায় সর্বমোট ৪২ হাজার ৬১১ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এর মধ্যে সুস্থ্য হয়েছেন ৩৩ হাজার ৮২৭জন। অর্থাৎ বিভাগে এখনও করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতাল অথবা বাড়িতে আইসোলেশনে আছেন আট হাজার ৭৮৪জন।