স্টাফ রিপোর্টার ঃ বিভাগে কিছুটা কমেছে শনাক্ত ও মৃত্যুহার। তবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটে একদিনেই মৃত্যু হয়েছে নয় জনের। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোররাত চারটা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত ওই সাত জনের মৃত্যু হয়। এর আগের দিনের হিসাব উল্লেখ করে এ হাসপাতালের মুখপাত্র বলেন, মোট আটজনের মৃত্যু হয়। এছাড়া অন্য দু’টি সরকারি হাসপাতালে বিগত ২৪ ঘন্টায় পাঁচজন এবং একটি বেসরকারি হাসপাতালে আরও আটজনের মৃত্যু হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট হাসপাতালগুলো থেকে জানানো হয়। অর্থাৎ বিগত ২৪ ঘন্টায় তিন হাসপাতালে ২১জন এবং গতকাল শুধুমাত্র খুমেক হাসপাতালেই সাত জনের মৃত্যু হয়।
বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক দপ্তরের হিসাব অনুযায়ী বিগত ২৪ ঘন্টায় বিভাগের ১০ জেলায় এক হাজার ৭৩২জনের করোনা শনাক্ত হয়। যা আগের দিন ছিল এক হাজার নয়শ’। এছাড়া আগের দিন বিভাগে ৬০ জনের মৃত্যু হলেও বিগত ২৪ ঘন্টায় হয়েছে ৫১জনের। এ নিয়ে বিভাগে মোট মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৪১৬জনের আর মোট শনাক্তের সংখ্যা ৬৭ হাজার ৫৩১জন।
চার হাসপাতালে ২১জনের মৃত্যু ঃ খুলনার সরকারি-বেসরকারি মিলিয়ে চারটি হাসপাতালে বিগত ২৪ ঘন্টায় মোট ২১জনের মৃত্যু হয়েছে বলে হাসপাতালগুলো থেকে জানানো হয়েছে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা: সুহাস রঞ্জন হালদার গতকাল সকালে জানান, বিগত ২৪ ঘন্টায় এ হাসপাতালে মোট আটজনের মৃত্যু হয়। এরা হলেন, খুলনার রূপসার মকবুল খান(৮০), লবণ চরার নিলুফা ইয়াসমিন(৫৫), খুলনা সদরের মাহবুবুর রহমান(৫৫), ফুলতলার দিপক কুমার দে, বাগেরহাটের মোংলার মেহেরুন্নেছা(৫৩), খুলনার ফুলতলার রাজীব(২৮), দৌলতপুরের আ: রহিম(৬৫) ও মোংলার শুকলা(২৮)।
খুলনা জেনারেল হাসপাতালের মুখপাত্র ডা: কাজী আবু রাশেদ বলেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত বিগত ২৪ ঘন্টায় এ হাসপাতালে দু’জন করোনা রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন, রূপসার আনসার শেখ(৬০) ও দিঘলিয়ার আমেনা বেগম(৮০)।
শহীদ শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালের করোনা ইউনিটের মুখপাত্র ডা: প্রকাশ চন্দ্র দেবনাথ বলেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত সেখানে তিনজনের মৃত্যু হয়। এরা হলেন, ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সিরাজুল ইসলাম(৬৫), খুলনার ডুমুরিয়ার আবুল বাশার মোল্লা(৪৬) ও বটিয়াঘাটার রিজিয়া বেগম(৬৫)।
বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা: গাজী মিজানুর রহমান বলেন, গতকাল সকাল পর্যন্ত ওই হাসপাতালে মোট আটজনের মৃত্যু হয়েছে। এরা হলেন, নগরীর টুটপাড়ার আব্দুল কাদের(৬১), যশোরের নুর জাহান(৭৫), বাগেরহাটের ফকিরহাটের সুভাস দত্ত(৬১), নড়াইলের কালিয়ার মিসেস নাসিমা বেগম(৫৬), চুয়াডাঙ্গার দর্শনার মো: আব্দুর রশিদ(৪৫), পিরোজপুরের নাজিরপুরের সকিনা বেগম(৬৫), যশোরের দুলাল চন্দ্র ঘোষ(৬৫) ও খুলনার রূপসার শামীমা আকতার(৫০)।
এদিকে, খুমেক হাসপাতালের করোনা ইউনিটে গতকাল ভোররাত তিনটা ৫০ মিনিট থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত মোট সাত জনের মৃত্যু হয় বলে হাসপাতালে খোঁজ নিয়ে জানা যায়।
এরা হলেন, ভোররাত তিনটা ৫০ মিনিটে নগরীর দৌলতপুরের আ: রহিম শেখ(৬৫), সকাল সাতটা ১০ মিনিটে নগরীর সোনাডাঙ্গার আবুল কালাম আজাদ(৪৬), সকাল সোয়া আটটায় বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জের কুমুত মন্ডল(৭৮), বেলা ১১টায় নড়াইলের পুষ্প রানী দাস(৬৫), সন্ধ্যা ছয়টায় খুলনার কাগজী বাড়ির হোসনেয়ারা(৫৫), রূপসার ঘাটভোগের বাবুল মোল্লা(৫০) এবং রাত ১১টায় যশোর সদরের জুলেখা পারভিন(৫৭)।
খুমেক ল্যাবে ১০৭ পজেটিভ ঃ খুলনা মেডিকেল কলেজের আরটি পিসিআর ল্যাবে গতকাল বৃহস্পতিবার ২৮২টি নমুনা পরীক্ষার পর ১০৭জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে বলে কলেজের উপাধ্যক্ষ ডা: মো: মেহেদী নেওয়াজ জানান। তিনি বলেন, শনাক্ত হওয়া ১০৭ জনের মধ্যে খুলনার ৫৩জন, বাগেরহাটের ৪৫জন, সাতক্ষীরার একজন, যশোরের পাঁচজন, নড়াইলের একজন, পিরোজপুরের একজন এবং মাগুরার একজন রয়েছেন।