দৌলতপুর থানা যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুবুর রহমান মোল্লা হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া সজলকে দুই দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। রোববার খুলনা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৪ এর বিচারক মো. ফরিদুজ্জামান পুলিশ আবেদন করা সাত দিনের রিমান্ডের বিপরীতে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
শনিবার (১২ জুলাই) গভীর রাতে খুলনার দৌলতপুর থানাধীন মহেশ্বরপাশা পশ্চিমপাড়া এলাকা থেকে সজলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনি স্থানীয় সাহেব আলীর ছেলে এবং একটি মুদি দোকানের মালিক ছিলেন।
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর আতাহার আলী জানান, “সজল সরাসরি হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়নি, তবে নিহত মাহবুবের অবস্থান সংক্রান্ত তথ্য খুনিদের সরবরাহ করেছে। তার দেয়া তথ্যের ওপর ভিত্তি করেই দুর্বৃত্তরা মাহবুবকে গুলি করে এবং পায়ের রগ কেটে নির্মমভাবে হত্যা করে।”
খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর) তাজুল ইসলাম বলেন,“সজল শুধু এই হত্যাকাণ্ডেই নয়, গোপন সংগঠনের নানা তথ্যও সরবরাহ করে থাকে। হত্যার সময় ঘটনাস্থলের খুব কাছ থেকে সে দুর্বৃত্তদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। তার রিমান্ডে আমরা গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়ার আশায় আছি।”
স্থানীয়রা ও পুলিশ জানায়, শুক্রবার (১১ জুলাই) জুমার নামাজের সময় দুপুর দেড়টার দিকে নিজ বাড়ির সামনে ব্যক্তিগত প্রাইভেটকার পরিষ্কার করছিলেন মাহবুবুর রহমান মোল্লা। পাশে ছিলেন ভ্যানচালক মো. সোলায়মান। এ সময় একটি মোটরসাইকেলে করে তিনজন যুবক বারবার ওই রাস্তা দিয়ে ঘোরাঘুরি করছিল।
হঠাৎ দুর্বৃত্তরা মাহবুবকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। দুইটি গুলি তার মাথা ও মুখে লাগে। মাহবুব মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তারা মৃত্যু নিশ্চিত করতে পায়ের রগ কেটে দেয়। এরপর তারা তেলিগাতি হয়ে হাইওয়ে রোড দিয়ে পালিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘটেছিল নির্জন সময়ে, যখন আশপাশে কেউ ছিল না।
পুলিশ আশপাশের বাড়ি ও সড়কের সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে সন্দেহভাজনদের চিহ্নিত করতে থাকে। তদন্তের একপর্যায়ে সজলের সংশ্লিষ্টতার তথ্য উঠে আসে। তার তথ্যের ভিত্তিতে হত্যাকারীরা মাহবুবকে হত্যা করেছে বলে পুলিশ নিশ্চিত হয়েছে।
রবিবার বিকেলে সজলকে আদালত থেকে দৌলতপুর থানায় নেওয়া হয়। সেদিন থেকেই তার রিমান্ড কার্যকর শুরু হয়েছে বলে থানাসূত্রে জানা গেছে।ঘটনার একদিন পর, শনিবার নিহতের বাবা করিম মোল্লা দৌলতপুর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি এজাহারভুক্ত না হলেও অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে দায়ের করা হয়। মামলার নম্বর: ১২।
প্রসঙ্গত, মাহবুবুর রহমান মোল্লা খুলনার দৌলতপুর থানা যুবদলের বহিষ্কৃত সহ-সভাপতি ছিলেন এবং এলাকায় বিএনপি রাজনীতির পরিচিত মুখ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। তার নৃশংস হত্যাকাণ্ডে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগও ঘুরেফিরে আসছে। তবে পুলিশ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো রাজনৈতিক মোটিভ নিশ্চিত করেনি।