/ মোরেলগঞ্জের গাবতলা ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: হাটু পানিতে ক্লাস, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ

মোরেলগঞ্জের গাবতলা ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়: হাটু পানিতে ক্লাস, ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের উদ্বেগ

এম. পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলার ১১৬নং গাবতলা ইসলামাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে মাসের অর্ধেক সময় হাটু পানি জমে থাকে। প্রতিদিন এ পানি পেরিয়ে ক্লাসে যেতে হয় বিদ্যালয়ের ১৬০ জন শিক্ষার্থীকে। পূর্ণিমার জোয়ারে পানি আরও বেড়ে যাওয়ায় মাসে ১০-১২ দিন শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যায়। ঝুঁকিপূর্ণ স্কুল ভবন নিয়ে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা আতঙ্কে রয়েছেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পানগুছি নদীর তীরবর্তী মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের গাবতলা গ্রামের বিদ্যালয়টি দুপুর গড়িয়ে গেলেও চারপাশে জোয়ারের পানিতে সয়লাব হয়ে থাকে। বিদ্যালয়ের প্রবেশ মুখ ও মাঠ পানিতে ডুবে থাকে। এতে শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন ভিজে ক্লাসে অংশ নিতে হয়।

১৯৭২ সালে বিদ্যালয়টি প্রতিষ্ঠিত হলেও মূল ভবনটি নির্মিত হয় আশির দশকে। পরে একটি সাইক্লোন টু-স্কুল ভবন নির্মিত হয়, যা বর্তমানে ঝুঁকিপূর্ণ। অতিরিক্ত লবণাক্ততার কারণে ভবনের বিভিন্ন স্থান থেকে পলেস্তারা খসে পড়ছে। ২০২৩ সালে সরকারিভাবে ক্ষুদ্র মেরামতের বরাদ্দে কিছুটা সংস্কার ও রঙ করা হয়।

ভবনটি শুধু বিদ্যালয় হিসেবেই নয়, প্রাকৃতিক দুর্যোগে আশপাশের ভাইজোড়া, কাঠালতলা ও গাবতলা গ্রামের দেড় হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করেন। অভিভাবকদের আশঙ্কা, যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে।

সহকারী শিক্ষক আব্দুল কাইয়ুম, শাহিনুর খানম ও দোলা রায় বলেন, “মাঠে পানি ওঠায় প্রতিদিনের সমাবেশ বারান্দায় করতে হয়। বাইরে থেকে দেখলে ভবনটি ভালো মনে হলেও ভিতরে এর অবস্থা নাজুক।”
স্থানীয় অভিভাবক গফ্ফার হাওলাদার ও রাজ্জাক শেখ জানান, “পানি জমে থাকার কারণে আমাদের সন্তানদের স্কুলে পৌঁছে দিতে হয় এবং ছুটির পর বাড়ি ফিরিয়ে আনতে হয়। এ অবস্থায় তাদের শিক্ষা ব্যাহত হচ্ছে।”

বিদ্যালয়ের মাঠ ভরাট ও নতুন ভবন নির্মাণের জন্য প্রধান শিক্ষক ইতিমধ্যে উপজেলা শিক্ষা অফিসারের কাছে আবেদন করেছেন। স্থানীয় অভিভাবক ও গ্রামবাসীরাও একই দাবি জানিয়ে বলেন, স্কুলের মাঠ ভরাট হলে শিক্ষার্থীদের আর এভাবে ভোগান্তি পোহাতে হবে না।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সিকদার আতিকুর রহমান বলেন, “আমি সদ্য যোগদান করেছি। শুধু গাবতলা বিদ্যালয় নয়, এ ধরনের একাধিক বিদ্যালয় নাজুক অবস্থায় রয়েছে। ১০টি টিনসেড স্কুলের জন্য নতুন ভবন নির্মাণের একটি তালিকা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। মাঠ ভরাটের জন্যও পূর্বে তালিকা পাঠানো হয়েছে। গাবতলা বিদ্যালয়ের সমস্যার দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করা হবে।”