/ মোরেলগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাসে দু’বার পানিতে প্লাবিত, আতংকে শিশু শিক্ষার্থীরা

মোরেলগঞ্জে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মাসে দু’বার পানিতে প্লাবিত, আতংকে শিশু শিক্ষার্থীরা

আশ্রয়কেন্দ্র কাম স্কুল ভবন নির্মাণের দাবি

এম. পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জঃ বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে খাউলিয়া ইউনিয়নে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাসে দু’বার স্কুল মাঠ ও শ্রেণিকক্ষ প্লাবিত হচ্ছে। জোয়ার এলেই আতংকে থাকে শিক্ষার্থীরা। শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয় অভিভাবকদের দাবি স্কুল টু-সাইক্লোন শেল্টার নির্মাণের।

জানা গেছে, উপজেলার খাউলিয়া ইউনিয়নের ১২৫নং পূর্ব খাউলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ১৯৩৫ সালে স্থাপিত হলেও পরবর্তী ২০০০ সালে একতলা ৪ কক্ষ বিশিষ্ট নির্মিত হয় স্কুল ভবন। এক রুমে অফিসিয়াল কার্যক্রম, বাকি ৩টি কক্ষে পাঠদান চলে আসছে। মোট শিক্ষার্থী রয়েছে ১৫৪ জন। প্রধান শিক্ষকসহ ৫ সহকারি শিক্ষক রয়েছে। সোমবার দুপুর ২টা স্কুলের চারিপাশে পানি থৈ থৈ করছে। শ্রেণিকক্ষে শিক্ষকরা পাঠদান করছেন। কোমলমতি এ শিক্ষার্থীদের চোখে মুখে আতংকের ছাপ। কখন যেনো শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করবে পানি। স্কুল ভবনটি বাহির থেকে চক চক করলেও লবণাক্ততায় কারণে নাজুক হয়ে পড়েছে। অনেক স্থান থেকে খসে পড়ছে পলেস্তরা।

আবির হোসেন, হাফিজা আক্তার, মিম আক্তার, তানভির হোসেনসহ একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, আমাদের স্কুলে জোয়ারের পানিতে মাসে এ রকম ২ বার পানি ওঠে। খেলাধুলা, পিটি করতে পারছি না। কবে হবে নতুন একটি ভবন? মাঠ ভরাট করে উচু না করলে খেলাধূলা করতে আমাদের সমস্যা হয়। পাকা ভবন চাই। বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক উজ্জল কুমার রায় বলেন, নদীর তীরবর্তী স্কুলটি হলেও এখন বেড়িবাঁধের কাজ চলছে। জোয়ারের পানি প্রবেশের কারণে মাসে ২ বার পানিতে নিমজ্জিত থাকে। এখানে সরকারিভাবে মাঠ ভরাট ও ভবন নির্মাণের দাবি জানান।
প্রধান শিক্ষক মো. কামরুল আহসান বাবলু বলেন, পূর্ব খাউলিয়া বিদ্যালয়টি অত্যান্ত পুরাতন স্কুল, ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা অনেক বেশী। ৪টি গ্রাম সমন্বয়ে ১নং ওয়ার্ড এখানে প্রায় ৫ হাজার মানুষ বসবাস করছেন। প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বন্যাকবলিত নদীর তীবরর্তী মানুষের আশ্রয়ের জন্য নিকটবর্তী কোন সাইক্লোন শেল্টারও নেই। এ বিদ্যালয়টিতে সাইক্লোন টু-স্কুল ভবন নির্মাণ হলে এ সমস্যা আর থাকবে না। অন্যদিকে সাধারণ মানুষও দুর্যোগে আশ্রয় নিতে পারবে। তিনি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সাইক্লোন শেল্টারের দাবি জানান।

এ সম্পর্কে মোরেলগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা অফিসার আতিকুর রহমান জুয়েল বলেন, এ উপজেলায় ৩০৯টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ১০টি বিদ্যালয়ে এখনও টিনশেড ঘর রয়েছে। নতুন ভবনের জন্য ওই বিদ্যালয়গুলোর জন্য একটি তালিকা পাঠানো হয়েছে। মাঠ ভরাটের ক্ষেত্রে ইতোমধ্যে একটি তালিকা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তারপরও যদি কোন বিদ্যালয় তালিকায় বাদ পড়ে থাকে পরবর্তীতে নির্দেশনা অনুযায়ী তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম বলেন, যেসব বিদ্যালয়ের ভবনগুলো ব্যবহারে অনুপযোগী ইতোমধ্যে তালিকা করে অধিদপ্তরে পাঠানো হয়েছে। এছাড়াও ১৩টি স্কুল-টু সাইক্লোন শেল্টার নতুন ভবনের কাজ চলমান রয়েছে।