/ মোরেলগঞ্জে ১০ বছরেও চালু হয়নি দলীত সম্প্রদয়ের সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

মোরেলগঞ্জে ১০ বছরেও চালু হয়নি দলীত সম্প্রদয়ের সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র

এম.পলাশ শরীফ, মোরেলগঞ্জ প্রতিনিধি: বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠি দলীত সম্প্রদয়ের সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটির কার্যক্রম ১০ বছরেও চালু হয়নি। সরকারি অর্থ ব্যায়ে বিভিন্ন খাতে লাখ লাখ টাকা ভেস্তে। কৃষি যন্ত্রাশং ১০ টি সেলাই মেশিন প্যাকেটবন্ধী অবস্থায় নাইট গার্ডের বসতবাড়ির পাঠাতনে। কেন্দ্রটির উদ্ধোধনের পর থেকেই মূল ফটকে ঝুঁলছে তালা। প্রকল্পের টাকা তৎকালিন দায়িত্বে থাকা নেতাদের পকেটে।

সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, উপজেলার হোগলাবুনিয়া ইউনিয়নের হোগলাবুনিয়া গ্রামের লক্ষনের হাট বাজার সংলগ্ন দলীত সম্প্রদয়ের জীবন যাত্রার মানউন্নয়নে বিকল্প কর্মসংস্থানের লক্ষে ২০১৪-২০১৫ অর্থ বছরে সাবেক প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের বরাদ্দকৃত প্রকল্পের ১৫ লাখ ৬০ হাজার কোনো কাজেই আসেনি। এ প্রকল্পের মাধ্যমে স্থানীয় মজিবুর রহমানের দানকৃত ৪শতক জমির ওপর সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি সাড়ে ৫ লাখ টাকা ব্যায়ে পাকা ভবন, টয়লেট নির্মাণ, ৩ লাখ টাকা ব্যায়ে কালিমন্দির ও দুর্গা মন্দির স্থাপন, এ সম্প্রদয়ের ১০ জন নারী সেলাই প্রশিক্ষনার্থীদের ২০১৭ সালে ৩ লাখ টাকা ব্যায়ে ১০টি সেলাই মেশিন বরাদ্দ দিলেও ১০ বছরেই সেলাই মেশিন প্যাকেট বন্ধী রয়েছে নাইট গার্ডের বসতবাড়ির পাটাতনে। মেশিনের স্টান্ড, টেবিলের কোন হদিস মিলছে না।


এ ছাড়াও ২০১৭ সালে ৩ লাখ টাকা ব্যায়ে ২টি পাওয়ার পাম্প সেচ মেশিন ক্রয় করা হলেও মেশিন দুটি ব্যক্তিগতভাবে ভাড়া দিয়ে টাকা স্থানীয় জমিদাতা মজিবর রহমান ও কেয়ারটেকার স্বপন কুমার দাসের পিতা গোপাল ঋষির পকেটে। ২০২০ সালে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ব্যায়ে ২টি পাওয়ার টিলার মেশিন ক্রয় করা হলেও ব্যবহারের অনুপযোগী পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। একই প্রকল্পের ৮ লাখ টাকা ব্যায়ে ১২শ’ ফুট ও ৬শ’ ফুট দুপি ইটসোলিং রাস্তা নির্মাণ, ২০ লাখ টাকা ব্যায়ে ব্রিজ নির্মাণ, চিকিৎসা ক্ষেত্রে ১ লাখ, শিক্ষা উপকরণে ২ লাখ টাকা উপবৃত্তি প্রদান দেখানো হয়েছে। ২০২১ সালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার দপ্তরের পরীক্ষা মাধ্যমে এ সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে স্বপন কুমার দাস নামের ১ জন নাইট গার্ড ও প্রশিক্ষণের শিক্ষক হিসেবে হাফিজা বেগমকে নিয়োগ দেওয়া হলেও অদ্যবধী পর্যন্ত তারা কোন বেতন পাননি। এ প্রকল্পের অধিকাংশ অর্থ ব্যায় তদারকির অভাবে ব্যহত, চলে গেছে অনেকের পকেটে। কমিটির নিষ্কিয়তা ও অনিয়মের কারণে কেন্দ্রটি অদ্যবধী পর্যন্ত চালু হয়নি বলে স্থানীয়দের অভিযোগ রয়েছে।

স্থানীয় অমল কৃষ্ণ শিকদার, কমল ঘোষ, অসীম শিকদার, জামাল শেখ, স্বপন দাস, মজিবুর রহমান বলেন, এ সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি চালু হলে এ সম্প্রদয়ের জীবন যাত্রার মান অনেক পরিবর্তন হবে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে শত শত পরিবারের। তারা সরকারের প্রতি কেন্দ্রটি চালুর জন্য জোর দাবি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে মোরেলগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার হাবিবুল্লাহ বলেন, এ উপজেলায় দলীত সম্প্রদয়ের সেলাই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটি বন্ধের বিষয়টি তিনি অবহিত নন। তবে, খোঁজ খবর নিয়ে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।