/ মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই পানির নিচে নগরী, জলজটে সীমাহীন দুর্ভোগ

মৌসুমের প্রথম বৃষ্টিতেই পানির নিচে নগরী, জলজটে সীমাহীন দুর্ভোগ

নির্মাণাধীন বড় ড্রেন ও খালের মুখে বাঁধে পানি নিষ্কাশন বাঁধাগ্রস্ত

ড্রেনগুলোও পরিষ্কার না করায় সময়মতো পানি নামেনি

বছরের প্রথম ভারী বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে খুলনা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকা। বর্ষা মৌসুমের তৃতীয় দিনের বৃষ্টিতে নগরীর প্রধান সড়কগুলো হাঁটুপানিতে ডুবে যায়। নগরীর লবণচরা, টুটপাড়া, বান্দাবাজার, হরিণটানা, বাস্তুহারা কলোনীসহ শহরের নি¤œাঞ্চল ও বহু এলাকার বাসাবাড়ি-দোকানপাটে পানি ঢুকে যায়। সবমিলিয়ে দুর্ভোগের একটি দিন পার করলো নগরীর মানুষ।
খুলনা আবহাওয়া অফিসের উপ-সহকারী আবহাওয়াবিদ অমরেশ চন্দ্র ঢালী জানান, সোমবার সকাল ৬টা থেকে মঙ্গলবার (১৭ জুন) সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আর সকাল ৬টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ৪৬.৮ মিলিমিটার। মূলত সকালের ভারী বৃষ্টিতেই নগরীর পথঘাট পানিতে ডুবে যায়।
দেখা গেছে, সোমবার রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে নগরীর অধিকাংশ রাস্তাঘাটের ড্রেন উপচে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এর মধ্যে রয়্যাল মোড়, বাইতিপাড়া মোড়, খানজাহান আলী সড়ক, শামসুর রহমান রোড, আহসান আহমেদ রোড, বাস্তুহারা, চানমারী, লবণচরা, টুটপাড়া, এবং মিস্ত্রিপাড়াসহ বেশ কিছু নি¤œাঞ্চল রয়েছে। রাস্তাঘাট পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় সাধারণ মানুষ বিশেষ করে কর্মজীবী ও নি¤œ আয়ের মানুষেরা চরম দুর্ভোগে পড়েন।

নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ও কেসিসির বর্জ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বৃষ্টি হলে নগরীর বিভিন্ন পয়েন্টে পানি জমে। কিন্তু মঙ্গলবার দীর্ঘ সময় পানি জমে থাকার কারণ হচ্ছে নির্মাণাধীন বড় ড্রেনগুলোর মাঝে মাঝে বাঁধ দিয়ে পানি আটকে রাখা। ড্রেন নির্মাণ কাজ সহজ করতে ঠিকাদাররা ড্রেনের মুখে বাঁধ দেন। কাজ শেষে কেসিসির পক্ষ থেকে বাঁধ অপসারণের নির্দেশনা থাকলেও সেটা অনেকেই মানেননি। বিশেষ করে পিটিআই মোড়ের সামনে ড্রেনের বাঁধ না কাটায় রয়েল মোড়সহ আশপাশের পানি নামতে পারেনি।
এছাড়া লবণচরা ¯øুইস গেটের স্থানে ব্রীজ নির্মাণের লক্ষ্যে ক্ষেত্রখালী খালের মুখে কেডিএর নির্মিত বাঁধ, ¯øুইস গেট নির্মাণের লক্ষ্যে মতিয়াখালী খালের মুখে নির্মিত বাঁধ, নিরালা ১নং রোডের মাথায় ময়ূর নদীর উপর নির্মিত কেডিএর বাঁধ এবং বাস্তুহারা-আড়ংঘাটা সড়ক নির্মাণের লক্ষ্যে বাস্তুহারা খালের ওপর কেডিএর বাঁধ এবং দেয়ানা চৌধুরী খালে নির্মিত বাঁধের কারণে পানি নিস্কাশন বাঁধাগ্রস্থ হয়েছে।
কেসিসির প্রধান বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা কোহিনুর জাহান বলেন, বাঁধসমূহে পানি নিস্কাশনের বিকল্প কোনো ব্যবস্থা ছিল না। যার কারণে বৃষ্টিতে সময় মতো পানি নিষ্কাশন হয়নি। গতকাল কেসিসি প্রশাসক জলাবদ্ধ এলাকা ঘুরে দেখে অসন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বাঁধসমূহে পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা রাখার জন্য জরুরী ভিত্তিতে কেডিএ কর্তৃপক্ষ বরাবর চিঠি প্রেরণের নির্দেশ দেন।
নগরবাসী বলছেন, বাঁধ ছাড়াও নিয়মিত ড্রেন পরিষ্কার না করায় পানি নিষ্কাশন বাঁধাগ্রস্ত হয়েছে।