রিকশার চাকায় ওড়না পেঁচিয়ে গলায় ফাঁস লেগে গুরুতর আহত হন যশোরের মেধাবী এইচএসসি পরীক্ষার্থী সুমাইয়া ছায়া (১৮)। টানা ১২ দিন মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন তিনি। বুধবার দিবাগত রাত ১২টার দিকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)।
গত ২৫ জুলাই শুক্রবার দুপুরে ছায়া রিকশায় যশোর শহরের দড়াটানা এলাকা থেকে খড়কি এলাকার বোনের বাড়িতে যাচ্ছিলেন।পথে বৃষ্টিতে ভিজে যাওয়ার সময় রিকশার সামনের পলিথিন গুঁজে দিতে গিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকেন। এসময় তাঁর ওড়না চাকার সঙ্গে পেঁচিয়ে যায়। মুহূর্তের মধ্যে গলায় ফাঁস লাগে এবং তিনি রিকশা থেকে ছিটকে পড়ে যান।তাকে দ্রুত যশোর জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে তাঁর জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয় এবং পরে তাকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়।চিকিৎসক জানান, দুর্ঘটনায় ছায়ার মেরুদণ্ড ছিঁড়ে স্পাইনাল কর্ড পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে হাড়গুলো সংযুক্ত করা গেলেও স্নায়ুর ক্ষতি অপূরণীয় ছিল। পরবর্তীতে শ্বাসকষ্ট দেখা দিলে তাঁকে আইসিইউতে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার রাতে তিনি মারা যান।
ছায়ার ভাই শিমুল ভূঁইয়া জানান, দুর্ঘটনার পর ছায়াকে ঢাকার একাধিক সরকারি হাসপাতালে নেওয়া হলেও বেড সংকটের কারণে ভর্তি নেওয়া হয়নি। পরে বিএনপির খুলনা বিভাগের ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম অমিত, সাংবাদিক হারুন জামিল ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নূরে আলম সিদ্দিকীর সহযোগিতায় চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।
ছায়ার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে যশোর সদর উপজেলার দৌগাছিয়া গ্রামে নেমে আসে শোকের ছায়া। তাঁর সহপাঠী, শিক্ষক, প্রতিবেশী ও এলাকাবাসী কেউই মেনে নিতে পারছেন না এই মর্মান্তিক বিদায়।মেধাবী এই শিক্ষার্থী মৃত্যুকালে মা–বাবা, তিন বোনসহ অসংখ্য স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে সবার কাছে আত্মার মাগফিরাত কামনায় দোয়া চাওয়া হয়েছে।