/ রূপসার নৈহাটির এক সড়কে হাজারো মানুষের স্বস্তি

রূপসার নৈহাটির এক সড়কে হাজারো মানুষের স্বস্তি

দৈনিক পূর্বাঞ্চলে সংবাদ প্রকাশের পর সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন

এইচ এম রোকন, রূপসা (খুলনা): উপজেলার নৈহাটি ইউনিয়নের বাগমারা গ্রামের খালের উপর গত আট বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল একটি সেতু। সেতুটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর হতে নির্মিত হয়।তবে দীর্ঘদিনেও সেতুটির দুপাশের সংযোগ সড়ক না হওয়ায় চরম ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে নৈহাটির জাবুসা ও বাগমারা গ্রামের হাজারো মানুষের। যে কারনে তখন এনিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকার অনেকেই।
এ বিষয়ে গত বছরের অর্থাৎ ২০২৪ সালের ২৩ অক্টোবর দৈনিক পূর্বাঞ্চলে ” রূপসায় ৮ বছরে হয়নি ব্রিজের সংযোগ সড়ক,ভোগান্তিতে এলাকাবাসী” শিরোনামে সচিত্র সংবাদ প্রকাশিত হয়। এরপরই নড়েচড়ে বসে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জানাগেছে,সংবাদ প্রকাশের পর তৎকালীন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আকাশ কুমার কুন্ডু ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ বোরহান উদ্দিন সরেজমিন পরিদর্শন করেন।পরবর্তীতে তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মাধ্যমে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জন্য বাজেট বরাদ্দ হয়।বরাদ্দকৃত বাজেটের মাধ্যমে নৈহাটি ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মোঃ ই‌লিয়াজ হো‌সেন শেখের একান্ত তদারকির মাধ্যমে। এছাড়াও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সার্বিক প্রচেষ্টায় অবশেষে গত মাসে সেতুর সংযোগ সড়কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে।আর যে কারনে,স্বস্তি ফিরেছে নৈহাটির জাবুসা ও বাগমারা গ্রামের হাজারো মানুষের মধ্য।স্থানীয় বাসিন্দারা এতে খুবই খুশি, কারণ এখন তাদের চলাচলে আর কোনো অসুবিধা হবে না।

সংযোগ সড়ক নির্মাণ হওয়ার ফলে নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো হয়েছে:

চলাচলে সুবিধা: রাস্তাটি তৈরি হওয়ার কারণে এলাকার মানুষের যাতায়াত অনেক সহজ হয়েছে।

অর্থনৈতিক উন্নতি: পণ্য আনা-নেওয়া এবং ব্যবসার ক্ষেত্রেও সুবিধা হয়েছে, যা এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নে সাহায্য করবে।

জীবনযাত্রার মান উন্নয়ন: মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে, কারণ এখন আর রাস্তাঘাটের সমস্যার কারণে দুর্ভোগ পোহাতে হবে না।

যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত: অন্যান্য এলাকার সাথে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হবে, যা এলাকার মানুষের সামাজিক ও সাংস্কৃতিক জীবনেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

মোটকথা, সংযোগ সড়ক নির্মাণ স্থানীয় জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন এবং স্বস্তির কারণ হয়েছে।

উল্লেখ্য,দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ব্রীজটি নির্মাণ সম্পন্ন করার জন্য নির্মাণের প্রকল্প ব্যয় ৫৪ লাখ ৪ হাজার ৬৫০ টাকা ধরা হয়। যা ২০১৬-১৭ সালের অর্থ বছরে শেষ হয়। নির্মাণের কাজ পেয়েছিলেন মেসার্স মিজানুর রহমান টেডার্স। ব্রীজটি নির্মাণ শেষ হওয়ার পর প্রতিষ্ঠানটি জামানতের টাকাসহ সকল বিল উত্তোলন করেন। অসম্পূর্ণ রয়ে যায় ব্রীজের দু’পাশের এ্যপ্রোচ রোডের কাজ। ব্রীজ নির্মাণের ফলে বাগমারা শামসুর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়, রূপসা কলেজ ও আল আকসা মাদ্রাসা সহ আশপাশ এলাকার অল্প সময়ের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের পাশাপাশি এলাকাবাসীর স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। কিন্তু ব্রীজ নির্মাণের পর ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ব্রীজের দুই পাশের রাস্তা নির্মাণ করেনি।

সেতু নির্মাণের পর থেকে সেতুর গোড়ায় মাটি না থাকায় অকেজো হয়ে পড়েছিল সেতুটি। সংযোগ সড়ক নির্মাণে ধীরগতির কারণে অব‍্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল এ এলাকার যোগাযোগের অন‍্যতম গুরুত্বপূর্ণ এ সেতুটি। সংযোগ সড়কটি সম্পন্ন হহওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানিয়েছে স্থানীয় জনসাধারণ।

এ বিষয়ে কথা হয় নৈহাটি এলাকার বাসিন্দা শেখ শাহিনের সাথে তিনি বলেন, আমাদের সড়কটি সম্পন্ন হওয়ায় এখন কোন রুগী অসুস্থ হলে দ্রুত স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যেতে পারি।যা আগে চরম দুর্ভোগের মধ্য পড়তে হতো।

একই এলাকার বাসিন্দা আবু জুবায়ের রিয়েল জানান, বর্তমানে সড়কটি নির্মাণ করায় যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেক ভালো হবে। এখন এই সড়ক দিয়ে ভ্যান গাড়ী সহ ছোট ইঞ্জিন চালিত গাড়ী চলাচল করবে, এতে করে আমাদের এলাকাবাসীর অনেক উপকার হবে।

এ ব্যাপারে রূপসা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা শেখ বোরহান উদ্দিন বলেন, আমি আসার আগে ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়।এছাড়া ব্রীজের রাস্তা নির্মাণের জন্য এলাকার কেউ মাটি না দেওয়ার কারণে এ অবস্থা তৈরি হয়েছিল ।আমার সিনিয়র যারা ছিলেন তারা অনেকবার সমাধানের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু স্থানীয়রা মাটি না দেওয়ার জটিলতার কারণে সম্ভব এতদিন হয়নি। দৈনিক পূর্বাঞ্চল পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হলে আমি স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে দ্রুত সমাধানের চেষ্টা করেছি।