বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগর আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান বলেছেন, “একটি চক্র ‘আওয়ামী মার্কা’ ষড়যন্ত্রমূলক নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। কিন্তু শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ ও সাকিব রায়হানের উত্তরসূরিরা বেঁচে থাকতে সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন সম্ভব নয়।” তিনি বলেন, “আগামী নির্বাচনে ছাত্রসমাজ দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও দখলবাজদের বয়কট করবে। ছাত্রসমাজ জামায়াতে ইসলামী ও তার ঘোষিত ৭ দফা দাবির পক্ষে আছে। এদেশে ইনসাফভিত্তিক, সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার সংগ্রামে ছাত্রসমাজই মূল চালিকাশক্তি হবে।”
রবিবার (১৩ জুলাই) বিকেলে খুলনা মহানগরী ছাত্রশিবিরের উদ্যোগে খালিশপুর শিল্পাঞ্চলের বিআইডিসি সড়কে অবস্থিত শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কার্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
সভায় অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান আরও বলেন,“৭ দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে ছাত্রসমাজ কোনো নির্বাচন মেনে নেবে না। প্রয়োজনে তারা আবার রাজপথে নামবে এবং দাবি আদায় করেই ছাড়বে।”
তিনি আরও উল্লেখ করেন, “রাষ্ট্রের মৌলিক সংস্কার, শহীদ ও আহতদের পুনর্বাসন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, প্রবাসীদের ভোটাধিকার এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড প্রতিষ্ঠা না হলে নির্বাচনে অংশগ্রহণ অর্থহীন। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ভেতরে লুকিয়ে থাকা আওয়ামী দোসরদের অপসারণ করতেই হবে। তা না হলে জুলাই চেতনার প্রতিফলন হবে না।”
তিনি ছাত্রসমাজের ঐতিহাসিক ভূমিকা তুলে ধরে বলেন, “১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, ১৯৯০ সালের স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন এবং ২০২৪ সালের ফ্যাসিস্টবিরোধী আন্দোলনে ছাত্রসমাজ বিজয় ছিনিয়ে এনেছে। আজও তারা প্রস্তুত। ছাত্র-জনতার রক্তে অর্জিত নতুন বাংলাদেশ গঠনের দায়িত্ব তাদের কাঁধে।”
অধ্যাপক মাহফুজ ছাত্রনেতাদের উদ্দেশ্যে বলেন,“ছাত্রশিবিরের প্রতি জাতি আশাবাদী। আমল-আখলাক, জ্ঞানচর্চা ও নেতৃত্বে নিজেদের গড়ে তোলো, যেন একটি সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গঠনে তোমরা ভূমিকা রাখতে পারো।” তিনি জুলাই আন্দোলনের শহীদদের জাতীয় বীর ঘোষণার দাবিও জানান।
সভায় সভাপতিত্ব করেন ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় কার্যকরী পরিষদের সদস্য ও খুলনা মহানগরী সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন। সভা পরিচালনা করেন মহানগর সেক্রেটারি রাকিব হাসান।বিশেষ অতিথি ছিলেন বাংলাদেশ শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ও খুলনা অঞ্চল পরিচালক মাস্টার শফিকুল আলম,মহানগরী জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম,শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের মহানগর সভাপতি আজিজুল ইসলাম ফারাজী, বিএল কলেজের সাবেক সভাপতি মুনসুর আলম চৌধুরী। এছাড়া ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন থানা ও কলেজ শাখার নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।