“স্বৈরাচার হাসিনাকে পদত্যাগে বাধ্য করেছি, এবার তার রেখে যাওয়া সন্ত্রাসীদেরও প্রতিহত করব” এমনই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক ও খুলনা-৩ আসনের নেতা আলহাজ্ব রকিবুল ইসলাম বকুল।
মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ২টায় খুলনার ফুলবাড়িগেট বাসস্ট্যান্ডে খানজাহান আলী থানা বিএনপির আয়োজনে অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি আরও বলেন“আমরা ভেবেছিলাম, হাসিনা পালিয়ে যাওয়ার পর দেশে শান্তি ফিরে আসবে। কিন্তু এখন দেখি, তার রেখে যাওয়া সন্ত্রাসীরা প্রশাসনের ছত্রছায়ায় মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। সাধারণ মানুষ আতঙ্কে, শিক্ষক রাস্তায় গুলিবিদ্ধ। এই খুলনায় আমরা আর সন্ত্রাসীদের জায়গা দিতে পারি না।”
মানববন্ধনের মূল প্রেক্ষাপট ছিল তেলিগাতি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দীপক কুমার সরকারের ওপর গুলিবর্ষণ। দীপক সরকার অভিযোগ করেন, একটি সন্ত্রাসী চক্র তার কাছে ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। তিনি থানায় জিডি করলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। পরবর্তীতে তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি চালানো হয়।
মানববন্ধনে অংশ নিয়ে দীপক নিজেই বলেন,“আমি হিন্দু বলে কি বিচার পাব না? পুলিশ আমাকে রক্ষা করতে পারেনি। পরিবার নিয়ে নিরাপত্তাহীনতায় আছি।”
বক্তব্যে বকুল অভিযোগ করেন,“একজন শিক্ষক জিডি করেও নিরাপত্তা পান না, এটা ব্যর্থ প্রশাসনের নিদর্শন। আমরা ভাবছি—এই পুলিশ কার হয়ে কাজ করছে? জনগণের হয়ে, নাকি সন্ত্রাসীদের হয়ে?”। তিনি আরও বলেন—“আমরা ধর্মীয় পরিচয়ের রাজনীতিতে বিশ্বাস করি না। হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধ সবাই মিলে বাংলাদেশ। এদেশ কারও একার নয়।”
বকুল আরও বলেন,“নির্বাচন ছাড়া জবাবদিহি হয় না। এই অনির্বাচিত সরকার যতদিন থাকবে, অপরাধ ততই বাড়বে। পুলিশ যদি জনগণের অনুভূতি না বোঝে, তাহলে গণজোয়ার উঠলে আর রক্ষা নেই।”তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন,“রাজপথই হবে আমাদের ঠিকানা, প্রশাসনের কোনো রক্তচক্ষুকে ভয় পাই না।”
মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট শফিকুল আলম মনা বলেন,“তারেক রহমান পরিষ্কারভাবে বলেছেন—বাংলাদেশে সংখ্যালঘু বলে কিছু নেই। সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে আমরা রাজপথে থাকব।”
মহানগরের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল আলম তুহিন বলেন,“খানজাহান আলী থানা এলাকায় মাদক বিস্তার লাভ করেছে। অথচ কেউ গ্রেফতার হচ্ছে না। গত ১০ মাসে এই সরকারের তেমন কোনো উল্লেখযোগ্য কার্যক্রম আমরা খুলনায় দেখিনি।”
মানববন্ধনে সভাপতিত্ব করেন খানজাহান আলী থানা বিএনপির সভাপতি কাজী মিজানুর রহমান এবং পরিচালনা করেন সাধারণ সম্পাদক আবু সাঈদ হাওলাদার আব্বাস। অন্যান্য বক্তার মধ্যে ছিলেন: শেখ সাদী, বদরুল আনাম খান, রেহাসা ঈসা, অ্যাড. মো. আলী বাবু, মুর্শিদ কামাল, হাবিবুর রহমান বিশ্বাস, মতলুবুর রহমান মিতুল, জাকির ইকবাল বাপ্পি, বিপ্লবুর রহমান কুদ্দুস, প্রমুখ।