সিলেটের কোম্পানীগঞ্জের সাদাপাথর লুটের মামলায় বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব-৯)। গতকাল শনিবার রাতে নগরের আম্বরখানা এলাকা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।সাহাব উদ্দিন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সভাপতি ছিলেন। গত ১১ আগস্ট কেন্দ্রীয় বিএনপি ‘চাঁদাবাজি, দখলবাজিসহ বিএনপির নীতি ও আদর্শ পরিপন্থী অনৈতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার সুস্পষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে’ ওই নেতার পদ স্থগিত করে।
গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে র্যাব-৯-এর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম কর্মকর্তা) কে এম শহিদুল ইসলাম সোহাগ বলেন, সাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে সিলেট মহানগরের কোতোয়ালি ও কোম্পানীগঞ্জ থানায় সাতটি মামলা আছে। গ্রেপ্তারের পর রাতেই তাঁকে কোতোয়ালি থানায় হস্তান্তর করা হয়।
এদিকে আজ রোববার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব সাহাব উদ্দিনকে ‘সাদাপাথর লুটপাটে অভিযুক্ত অন্যতম মূলহোতা’ হিসেবে উল্লেখ করেছে। ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে র্যাবের একটি দল গতকাল রাত সোয়া ১১টার দিকে নগরের কুমারপাড়া এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সাহাব উদ্দিনকে (৫৪) গ্রেপ্তার করে। সাদাপাথর লুটের ঘটনায় কোম্পানীগঞ্জ থানায় গত ১৫ আগস্ট খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর দায়ের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ওই মামলায় অজ্ঞাতনামা ১ হাজার থেকে ১ হাজার ৫০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।র্যাব বিজ্ঞপ্তিতে আরও জানিয়েছে, গত এক বছরে কোম্পানীগঞ্জ ও গোয়াইনঘাট উপজেলায় অবৈধভাবে বিপুল পরিমাণ পাথর উত্তোলন করা হয়। এ ঘটনা নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হলে দেশব্যাপী তোলপাড় সৃষ্টি হয়। পরবর্তী সময়ে সাদাপাথর লুটের ঘটনায় দায়ী ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের লক্ষ্যে র্যাব-৯ গোয়েন্দা তৎপরতা জোরদার করে।
জেলা বিএনপির একটি সূত্র জানায়, গত ১০ এপ্রিল ভোলাগঞ্জে পাথর কোয়ারি পরিদর্শন করে প্রতিবেদন দাখিল করে তদন্ত কমিটি। তদন্ত প্রতিবেদনে সরকারি জমি দখল ও লুটপাটের ঘটনায় বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন ও তাঁর স্বজনেরা জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, উপজেলা সভাপতির নেতৃত্বে এমন অপরাধ সংঘটিত হবে, তা কখনো ভাবা যায় না। এতে দলের ভাবমূর্তি নষ্ট ও নেতৃত্বের চরম অবমাননা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়।
প্রসঙ্গত, কর্মজীবনে আশির দশকে একজন কাঠুরিয়া ছিলেন সাহাব উদ্দিন। সম্পৃক্ত হন ভারতীয় পণ্য ও স্বর্ণ চোরাচালানে সঙ্গে। একপর্যায়ে শত শত বিঘা সরকারি খাসজমি দখল করে হয়ে যান কোটি কোটি টাকার মালিক। এরপর রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক নেতা বনে যান। গেল বছরের ৫ আগস্ট পটপরিবর্তনের কারণে নির্মাণাধীন ভোলাগঞ্জ স্থলবন্দর, রোপওয়ে বাঙ্কার, পুলিশ ফাঁড়িসহ অসংখ্য স্থাপনা লুটপাট ও হামলার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।