প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭১ সালের ৭ মার্চে দেওয়া ভাষণে যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন, তা বাংলাদেশের মানুষ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন। সোমবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘ঐতিহাসিক ৭ই মার্চ ২০২২’ উদযাপনে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন তিনি।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘৭ মার্চের ভাষণ, যে ভাষণ বাঙালি জাতিকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। একটি ভাষণের মধ্য দিয়েই একটি জাতি উদ্বুদ্ধ হয়েছিল সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য এবং স্বাধীনতা ছিনিয়ে আনার। ওই মূহুর্তে ঠিক কী কী করণীয় সেই নির্দেশনাও জাতিকে তিনি দিয়েছিলেন। অর্থাৎ অসহযোগের যে আন্দোলনের ডাক দেন, বাংলাদেশের মানুষ অক্ষরে অক্ষরে তা পালন করেছিল।’বাঙালি জাতির জন্য আত্মমর্যাদার ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে ১৯৪৮ সাল থেকে বঙ্গবন্ধু সংগ্রাম শুরু করেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই সংগ্রাম শুরু হয়েছিল ভাষা আন্দোলন থেকে। এরপর ধাপে ধাপে তিনি বাঙালিকে এগিয়ে নিয়ে যান।’তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশে সম্ভবত তিনি একমাত্র নেতা, যিনি আওয়ামী লীগ সংগঠনকে শক্তিশালী করার জন্য নিজের মন্ত্রিত্ব ছেড়েছিলেন। মন্ত্রিত্ব থেকে পদত্যাগ করে তিনি আওয়ামী লীগ সংগঠনকে শক্তিশালী করেন। এটা করার পেছনে আরেকটা কারণ ছিল। আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন মওলানা ভাসানী। তিনি আওয়ামী লীগ ছেড়ে গিয়ে আরেকটি দল করেন। তখন সংগঠনটা গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। তাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব পদত্যাগ করে এই সংগঠনটা গড়ে তোলেন।’বঙ্গবন্ধুকে বার বার কারাবন্দি করা হলেও বাঙালির স্বাধীনতার লক্ষ্যে তিনি অবিচল ছিলেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি যখন ৬ দফা দিলেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে মানুষ এই ৬ দফাকে তাদের মুক্তি সনদ হিসেবে গ্রহণ করলেন। ৬ দফা দাবি আন্দোলন অতি দ্রুত ব্যাপক জনপ্রিয়তা পেল। এই ৬ দফা দেওয়ার পরেই তাকে আবার গ্রেপ্তার করা হলো। ৬৮ সালের ১৮ জানুয়ারি ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে বন্দি অবস্থায় ঢাকা ক্যান্টনমেন্টে নিয়ে যাওয়া হলো এবং তার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী মামলা দেওয়া হলো, যেটা আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা নামে পরিচিত।’সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আবুল মনসুর।