খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ সালের ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান’ এবং তৎকালীন ভয়াবহ ‘জুলাই হত্যাযজ্ঞ’-এর বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গণস্বাক্ষর কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়েছে। একইসাথে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে শুরু হয়েছে পোস্টারিং এবং চিত্র প্রদর্শনী। এসব আয়োজনের মধ্য দিয়ে বিচার দাবিকে আরও বেগবান ও প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে শিক্ষার্থীরা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ।
মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাফেটেরিয়া চত্বরে কর্মসূচির উদ্বোধন করেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. রেজাউল করিম। উদ্বোধনী বক্তব্যে তিনি বলেন,“২০২৪ সালের জুলাইয়ের সেই নির্মম হত্যাযজ্ঞ আজও আমাদের গা শিউরে তোলে। এখনও অনেকে চিকিৎসাধীন, আর আমরা তাদের রক্তের ঋণে ঋণী। কিন্তু এখনও বিচার হয়নি খুনিদের। এই আয়োজন সেই বিচার দাবির প্রতীকী প্রতিধ্বনি।”
তিনি আরও বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে সরাসরি ছাত্ররাজনীতি না থাকলেও শিক্ষার্থীরা গণতন্ত্র ও দেশের ভবিষ্যৎ বিষয়ে সচেতন। “জুলাই অভ্যুত্থানে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা যেভাবে সক্রিয় ছিল, আজকের আয়োজন সেই ঐতিহাসিক ভূমিকার স্বীকৃতিও বটে,” বলেন উপাচার্য।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. হারুনর রশীদ খান বলেন “বাংলাদেশের ইতিহাসে ‘জুলাই হত্যাযজ্ঞ’ অন্যতম নৃশংস অধ্যায়। এক বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও বিচার শুরু না হওয়ায় আমরা গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছি। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের এই কর্মসূচি দেশে ন্যায়বিচারের জোরালো দাবির অংশ হয়ে উঠুক।”
রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) প্রফেসর ড. এস এম মাহবুবুর রহমান বলেন, তরুণ প্রজন্ম যেন অন্যায়ের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয় এবং সত্যের পক্ষে দাঁড়ায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এ উদ্যোগ সেটিই প্রতিফলিত করে।
কর্মসূচির আয়োজন কমিটির সভাপতি ও ছাত্র বিষয়ক পরিচালক প্রফেসর ড. মো. নাজমুস সাদাত বলেন “এটি কেবল স্মৃতিচারণ নয়, এটি একটি সক্রিয় প্রতিবাদ—বিচারহীনতার সংস্কৃতির বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদ।”
চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে চারুকলা স্কুলের শিক্ষার্থীরা এবং সহযোগিতায় ছিল খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় ফটোগ্রাফি সোসাইটি ও ৩৫এমএম।
অনুষ্ঠান সঞ্চালনায় ছিলেন ড্রইং অ্যান্ড পেইন্টিং ডিসিপ্লিনের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম। চিত্র প্রদর্শনী ও গণস্বাক্ষর কর্মসূচি সপ্তাহব্যাপী চলবে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।