/ গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: তিনজন নিহত, গুলিবিদ্ধ ৯

গোপালগঞ্জে এনসিপির সমাবেশে রক্তাক্ত সংঘর্ষ: তিনজন নিহত, গুলিবিদ্ধ ৯

গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে ভয়াবহ হামলা ও সংঘর্ষে অন্তত দুইজন নিহত হয়েছেন। গুলিবিদ্ধ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন আরও ৯ জন। ঘটনার পর জেলা শহরে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় জারি করা হয়েছে ১৪৪ ধারা।

নিহতরা হলেন দীপ্ত সাহা (২৫) ও রমজান কাজী (১৮)।

গোপালগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক জীবিতেষ বিশ্বাস জানিয়েছেন, বিকেলে তিনজন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় হাসপাতালে আনা হলে তাঁদের মৃত ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে একজনের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি, তবে তাঁর লাশ স্বজনেরা নিয়ে গেছেন বলে হাসপাতালের এক কর্মী জানান।হাসপাতালে আরও ৯ জন গুলিবিদ্ধ হয়ে ভর্তি আছেন। তাঁদের অস্ত্রোপচার চলছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, সমাবেশ শেষ হতেই হঠাৎ একদল লাঠিসোঁটা-হাতুড়ি হাতে লোকজন নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায়। পুলিশ ও সেনাবাহিনী সাউন্ড গ্রেনেড ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।

ঘটনার বিষয়ে জানার জন্য পুলিশ সুপার মো. মিজানুর রহমান, জেলা প্রশাসক মুহম্মদ কামরুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. গোলাম কবির কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি,

নিহত দীপ্ত সাহার চাচা বলেন, “দীপ্ত দুপুরে খাবার খেয়ে দোকানে যাচ্ছিল, চৌরঙ্গীতে তার পেটে গুলি লাগে।” রমজান কাজীর বাবা বলেন, “আমার ছেলেকে মেরে ফেলেছে। সে তো কিছু করেনি। আমি আমার সন্তানকে আর কোথায় পাব?”

সমাবেশ শুরু হওয়ার আগেই দুপুরে ২০০–৩০০ জন ব্যক্তি লাঠিসোঁটা নিয়ে মঞ্চ এলাকায় আসে। এসময় পুলিশ উপস্থিত থাকলেও তারা দ্রুত স্থান ত্যাগ করে। হামলাকারীরা মঞ্চের চেয়ার ও ব্যানার ভাঙচুর করে। একপর্যায়ে এনসিপি নেতারা নাহিদ ইসলাম, আখতার হোসেন, হাসনাত আবদুল্লাহ, সারজিস আলম—ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং সমাবেশ শুরু করেন।

সমাবেশ শেষে ফেরার সময় আবার হামলা হয়। এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী সাংবাদিকদের বলেন: “এই হামলা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা চালিয়েছে। আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়নি। পুলিশ-সেনাবাহিনী নিষ্ক্রিয় ছিল।”

সমাবেশস্থলে সহিংসতা ও প্রাণহানির পর ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। পুলিশ, সেনাবাহিনী ও র‌্যাব মোতায়েন করা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।