জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আয়োজিত ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সহিংসতার ঘটনায় দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বুধবার দুপুর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত গোপালগঞ্জ শহরে একাধিক দফায় হামলা, ভাঙচুর ও সংঘর্ষের ঘটনায় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার, বিএনপি, জামায়াতে ইসলামি ও বিভিন্ন মহল তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
বিকেলে অন্তর্বর্তী সরকারের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “গোপালগঞ্জে শান্তিপূর্ণভাবে সমাবেশ করতে যাওয়া তরুণ নাগরিকদের ওপর হামলা তাদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘনের লজ্জাজনক উদাহরণ। সহিংসতার এ ঘটনা কোনোক্রমেই সমর্থনযোগ্য নয়।” বিবৃতিতে আরও বলা হয়, “এনসিপি, পুলিশ ও সংবাদকর্মীরাও হামলার শিকার হয়েছেন। গাড়ি ভাঙচুর, শারীরিক আক্রমণসহ বহুমাত্রিক সহিংসতা চলেছে।অভিযোগ রয়েছে নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ কর্মীরাই এই নৃশংসতায় জড়িত।” সরকার হামলাকারীদের দ্রুত চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করার ঘোষণা দেয় এবং সাহসী অংশগ্রহণকারীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বলে, “ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা হবেই।”
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক বিবৃতিতে বলেন, “আওয়ামী স্বৈরাচারী শাসকগোষ্ঠীর পতনের পর দুষ্কৃতকারীরা দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করে ইন্টেরিম গভর্নমেন্টকে বেকায়দায় ফেলতে চায়।” তিনি বলেন, “আজকের বর্বরোচিত হামলা, ককটেল বিস্ফোরণ, প্রশাসনের গাড়িতে অগ্নিসংযোগ এবং পুলিশ আহত হওয়া এসব অপচেষ্টারই অংশ।” বিএনপি নেতার ভাষায়, “দুষ্কৃতকারীদের কঠোর হস্তে দমন করা ছাড়া বিকল্প নেই।” তিনি আহত পুলিশ সদস্যদের সুস্থতা কামনা করেন এবং হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান ফেসবুকে দেওয়া বিবৃতিতে বলেন, “গোপালগঞ্জ তো বাংলাদেশেরই অংশ। এনসিপি প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা করেই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কিন্তু মাঠে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কোনো কার্যকর উপস্থিতি নেই।” তিনি সরকারকে সতর্ক করে বলেন, “প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে ইতিহাসের পূর্ণ দায় সরকারের ওপরই বর্তাবে।” তিনি জনগণকে উশৃঙ্খলতা থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানান এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তিগুলোর ঐক্যের কথা বলেন।