/ “সুন্দরবন বাঁচলে বাঘ বাঁচবে”—মোংলায় বিশ্ব বাঘ দিবসের আলোচনা সভায় বক্তাদের আহ্বান

“সুন্দরবন বাঁচলে বাঘ বাঁচবে”—মোংলায় বিশ্ব বাঘ দিবসের আলোচনা সভায় বক্তাদের আহ্বান

নিজস্ব সংবাদদাতা,মোংলা (বাগেরহাট): জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত ও দূষণের কবল থেকে বাঘের আবাসস্থল সুন্দরবনকে রক্ষা করার আহ্বান জানিয়েছেন বক্তারা। তাঁদের মতে, সুন্দরবনের নদী-খালে বিষ প্রয়োগ ও পাচারকারীদের অবাধ কার্যকলাপ বাঘের মৃত্যুর অন্যতম কারণ। বিষাক্ত পানি পান করে বাঘ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যাচ্ছে। বক্তারা বলেন, “সুন্দরবন বাঁচলে বাঘ বাঁচবে”—সংকটাপন্ন বন্যপ্রাণী বাঘ রক্ষায় সমন্বিত উদ্যোগ ও পরিকল্পনা এখন সময়ের দাবি।


মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) সকাল ১০টায় মোংলা উপজেলা অডিটোরিয়ামে বিশ্ব বাঘ দিবস উপলক্ষে “সুন্দরবন বাঁচাও, বাঘ বাঁচাও” শীর্ষক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন বক্তারা। ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা), ওয়াটারকিপার্স বাংলাদেশ ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপারের আয়োজনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়।

আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শারমিন আক্তার সুমী। প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ও হবিগঞ্জ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্য কৃষিবিদ মোহাম্মদ শামীমুর রহমান শামীম।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে শামীম বলেন, “বাঘ আমাদের শৌর্য-বীর্যের প্রতীক, সাহসের প্রতীক। জাতীয় ক্রিকেট দলের অফিসিয়াল লোগো হচ্ছে বাংলার বাঘ। বাঘ আমাদের গর্ব, বাঘ আমাদের অহংকার। সুন্দরবন বাঁচলে বাঘ বাঁচবে।”


সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা সমাজসেবা অফিসার এস এম মাসুদ রানা, সাবেক উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ কোহিনূর সরদার, বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবু হানিফ, ব্যবসায়ী মোঃ শাহ্ আলম শেখ, ওয়াইল্ড টিমের সাইফুল ইসলাম, জেলে সমিতির আব্দুর রশিদ হাওলাদার, পরিবেশকর্মী হাছিব সরদার ও মেহেদী হাসান।

আয়োজক সংগঠন ধরিত্রী রক্ষায় আমরা (ধরা)-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও পশুর রিভার ওয়াটারকিপার মোঃ নূর আলম শেখ বলেন, “গত ২৫ বছরে ৩০টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে মাত্র ১০টি বাঘের। ১৪টি বাঘ স্থানীয় মানুষ পিটিয়ে মেরেছে। বাঘ-মানুষ দ্বন্দ্ব নিরসন করতে হবে। আমাদের সবাইকে বাঘবন্ধু হতে হবে।”


সভাপতির বক্তব্যে ইউএনও শারমিন আক্তার সুমী বলেন, “‘বাঘের বৃদ্ধি, সুন্দরবনের সমৃদ্ধি’ শ্লোগানে বাংলাদেশে বিশ্ব বাঘ দিবস পালন করা হচ্ছে। সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বেড়েছে। পর্যটকরা এখন প্রায়ই বাঘ দেখতে পান। বাঘ রক্ষায় বনজীবী ও বন-সংলগ্ন এলাকার মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে।”

আলোচনা সভার আগে “সুন্দরবন বাঁচাও, বাঘ বাঁচাও” শীর্ষক বর্ণাঢ্য র‍্যালি অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া “সুন্দরবনের বাঘ” বিষয়ক শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়। আলোচনা সভা শেষে প্রধান অতিথি কৃষিবিদ মোহাম্মদ শামীমুর রহমান শামীম বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।