স্টাফ রিপোর্টার: বিগত ১০দিন ধরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সিটি স্ক্যান মেশিন নষ্ট হয়ে থাকায় সেখানকার সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ভর্তি রোগী কিংবা বহি:বিভাগের জটিল রোগীদের সিটি স্ক্যান একটি গুরুত্বপূর্ণ টেস্ট হলেও খুমেক হাসপাতালের দু’টি মেশিনই নষ্ট হয়ে পড়ে থাকায় রোগী ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করেছে। বিশেষ করে স্ট্রোকের রোগীদের জন্য সিটি স্ক্যান করেই চিকিৎসকরা ব্যবস্থাপত দিয়ে থাকেন। সরকারি এ হাসপাতালে যেখানে মাত্র দু’হাজার টাকায় সিটি স্ক্যান করা যায় সেখানে বাইরের প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান থেকে করাতে গিয়ে গুনতে দ্বিগুন অর্থ। যেটি অনেকের পক্ষে সম্ভব হচ্ছে না।
হাসপাতালের সূত্র মতে, খুমেক হাসপাতালের দু’টির মধ্যে একটি সিটি স্ক্যান মেশিন গত বছরের (২০২৪) ২ জুন থেকে নষ্ট হয়ে যায়। অপর মেশিনটি দিয়ে রোগীদের সেবা দেওয়া হচ্ছিল। কিন্তু সেটিও গত ২৪ জুলাই থেকে নষ্ট হওয়ায় সেদিন থেকে খুমেক হাসপাতালে একেবারেই সিটি স্ক্যান হচ্ছে না। গত ৩০ জুলাই মেশিন সরকরাহকারী প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে বিশেষজ্ঞ টিম এসে দেখে যাওয়ার পর এখন স্বাস্থ্য মন্ত্যণালয়ের অর্থ বিভাগের অর্থ ছাড়ের অপেক্ষায় বিষয়টি ঝুলে আছে।
এ বিষয়ে খুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা: মোঃ মোহসীন আলী ফরাজী বলেন, মেশিন দু’টি নষ্ট হওয়ার সাথে সাথেই মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন নিমিউ এন্ড টিসি’র চীফ টেকনিক্যাল ম্যানেজার বরাবর পত্র দিয়ে জানানো হয়েছে। বর্তমানে মেশিন সংস্কারের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। যেহেতু এজন্য চাহিদাপত্র দেওয়া হয়েছে এবং প্রয়োজন এক কোটি ৬৪ লাখ টাকা সেহেতু মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগের ছাড়ের প্রয়োজন রয়েছে। সেখান থেকে যত দ্রুত অর্থ ছাড় হবে তত দ্রুতই নিমিউ এন্ড টিসি কর্তৃপক্ষ মেশিন সংস্কার করতে পারবে।
খুমেক হাসপাতালের রেডিওলজি এন্ড ইমেজিং বিভাগের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট(রেজিওগ্রাফী) এসএম আলতাফ হোসেন বলেন, হাসপাতালে প্রতিদিন ২৫ থেকে ৩০টি সিটি স্ক্যান করা হয়। এখন বন্ধ থাকায় রোগীদের ফেরত দেওয়া হচ্ছে। তবে খুলনার অপর সরকারি প্রতিষ্ঠান খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালে বর্তমানে একটি সিটি স্ক্যান মেশিন চালু আছে জানিয়ে তিনি বলেন, রোগীরা সেখান থেকে সিটি স্ক্যান করাতে পারেন।
খুলনা বিশেষায়িত হাসপাতালের রেডিওলজি বিভাগের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট(রেডিওগ্রাফী) আবু তারিফ পলাশ বলেন, সেখানে প্রতিদিন সর্বোচ্চ ৮/১০টি সিটি স্ক্যান করা সম্ভব। এর বেশি হলে সম্ভব নয়। অনেক সময় জটিল রোগী হলে ২/৩জনের করাতেই দিন চলে যায়।
এদিকে, সরকারি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান করাতে না পেরে মানুষ বাধ্য হয়ে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানে যাচ্ছেন। অনেকের আর্থিক সঙ্গতি না থাকায় সিটি স্ক্যান করা থেকে বিরত থাকছেন। এর ফলে রোগ নির্ণয় করতে না পেরে সঠিক চিকিৎসাও দিতে পারছেন না বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা।