বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে দেশে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে। তিনি বলেন, নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে ইতিবাচক বলা হলেও প্রয়োজনীয় রাজনৈতিক ও প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার ছাড়া নির্বাচন আয়োজন জনগণের সঙ্গে প্রতারণার শামিল হবে।
বুধবার (১৩ আগস্ট) সকালে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আরাফাত আবাসিক এলাকায় উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত ভোটার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন। সমাবেশে তিনি নির্দলীয় সরকারের অধীনে ‘জুলাই সনদের’ আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রধান আকাঙ্ক্ষা ছিল রাষ্ট্র সংস্কার। এর জন্য ৬টি কমিশন গঠন এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে ১৯টি বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছিল। অথচ প্রধান উপদেষ্টা কর্তৃক পঠিত ঘোষণাপত্রে তা উল্লেখ না করে গুরুত্বহীন করা হয়েছে।” তিনি দাবি করেন, জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন দ্রুত সম্পন্ন করে তা অধ্যাদেশ, এলএফও বা গণভোটের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি দিতে হবে; অন্যথায় অন্তবর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম ব্যর্থ হবে।
তিনি আরও বলেন, জনগণ এখন ইসলামী আদর্শের শক্তিকে ভোট দিতে প্রস্তুত। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের অনুকূলে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, যা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের মাধ্যমে বিজয়ে রূপ নেবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অভিযোগ করেন, সরকারের প্রশাসনিক কাঠামোর মধ্যে ‘স্বৈরাচারের দোসররা’ সক্রিয় রয়েছে। তিনি আসন্ন নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তোলার আহ্বান জানান এবং নির্বাচন কমিশনসহ সব পর্যায়ে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার দাবি করেন।
তিনি সতর্ক করে বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সজাগ থাকতে হবে। দেশের মানুষ এখন ইসলামী দলগুলোকে নেতৃত্বের আসনে দেখতে চায়। অচিরেই জনগণের সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে, ইনশাআল্লাহ।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন চকমথুরাবাদ ভোট কেন্দ্র কমিটির সভাপতি মো. মতিউর রহমান হাওলাদার এবং পরিচালনা করেন হরিণটানা থানার ৪ নং ওয়ার্ড জামায়াত সভাপতি মো. আমির হোসাইন।
বিশেষ অতিথি ছিলেন, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, সহকারী সেক্রেটারি মুন্সি মঈনুল ইসলাম ও মিয়া গোলাম কুদ্দুস, ডুমুরিয়া উপজেলা আমীর মাওলানা মোক্তার হোসেন, হরিণটানা থানা আমীর আব্দুল গফুর,উপজেলা নায়েবে আমীর মাওলানা হাবিবুর রহমান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ নেতা হারুন অর রশীদ ও উপজেলা হিন্দু কমিটির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ দেবক প্রসাদ।
এছাড়া বিভিন্ন থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন। সমাবেশে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল থেকে প্রায় ২০-২৫ জন নেতা-কর্মী জামায়াতে ইসলামীতে যোগ দেন এবং মিয়া গোলাম পরওয়ারের হাতে ফুল তুলে দেন স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সমাজকর্মীরা।
এর আগে মিয়া গোলাম পরওয়ার খুলনার রায়েরমহল লাইন বিল পাবলা ভোট কেন্দ্র, পূর্ব বিলপাবলা ভোট কেন্দ্র এবং খানজাহান থানা কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত তিনটি আলাদা সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন। এসব সমাবেশে নেতৃবৃন্দ বলেন, এলাকার উন্নয়নে স্থানীয় নেতৃত্ব জরুরি, মওসুমী বা অতিথি পাখি প্রার্থীরা উন্নয়ন করতে পারবে না।