/ ফুলতলায় উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে জনবল ও সরঞ্জাম সংকট, পশু-পাখির চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

ফুলতলায় উপজেলা প্রাণি সম্পদ অফিসে জনবল ও সরঞ্জাম সংকট, পশু-পাখির চিকিৎসা সেবা ব্যাহত

এস. এম মোস্তাফিজুর রহমান, ফুলতলা(খুলনা): উপজেলায় গবাদি পশু ও হাঁস-মুরগির বিপুল সংখ্যক খামার থাকলেও উপজেলা প্রাণি সম্পদ কার্যালয়ে জনবল ও ওষুধ-সরঞ্জামের তীব্র সংকট বিরাজ করছে। ফলে পশু-পাখির রোগ প্রতিরোধ ও চিকিৎসা সেবা কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে ভেটেনারি সার্জনের পদ থাকলেও বর্তমানে কেউ কর্মরত নেই। তিনজন চিকিৎসকের মধ্যে দুই জন কর্মরত, তৃতীয় শ্রেণির দুইজন কর্মচারীর মধ্যে উপস্থিত মাত্র একজন। উপ-সহকারী (কৃত্রিম প্রজনন) ও উপ-সহকারী (প্রাণি স্বাস্থ্য) কর্মকর্তা পদে কোনো জনবল নেই। নৈশ প্রহরী ও পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাব তীব্রভাবে বিরাজমান।

উপজেলায় বর্তমানে গরুর সংখ্যা প্রায় ৫১ হাজার, ছাগল ৬০-৭০ হাজার এবং হাঁস-মুরগির সংখ্যা প্রায় ৪-৫ লক্ষ। নিবন্ধিত দুগ্ধ খামার আছে ২৬টি, অনিবন্ধিত প্রায় ৯০টি। নিবন্ধিত হৃষ্টপুষ্ট গরুর খামার রয়েছে মাত্র একটি, অনিবন্ধিত ৬৫টি। নিবন্ধিত ছাগলের খামার ১টি, অনিবন্ধিত ২০০টি। লেয়ার মুরগির নিবন্ধিত খামার ২টি, অনিবন্ধিত ৫০টি। ব্রয়লার মুরগির নিবন্ধিত খামার ১০টি, অনিবন্ধিত ১১৪টি। কোয়েল পাখির নিবন্ধিত খামার নেই, তবে অনিবন্ধিত ৮টি রয়েছে। হাঁসের নিবন্ধিত খামার ১টি, অনিবন্ধিত ২৪টি।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. তৌহিদুল ইসলাম জানান, গবাদি পশুর অনুপাতে যে পরিমাণ ওষুধ প্রয়োজন, তার মাত্র দুই মাসের সরবরাহ দিয়েই সারা বছর চলতে হয়। গত ২৭ এপ্রিল সর্ট সার্কিটের কারণে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডে ২৫ ধরনের প্রায় ৪ লাখ টাকার ওষুধ ভস্মীভূত হয়। বর্তমানে ভিটামিন, মিনারেল, কৃমিনাশক, ডায়রিয়া ও এন্টিভাইরাসসহ প্রয়োজনীয় কোনো ওষুধই মজুদ নেই। পোষা প্রাণি কুকুর-বেড়ালের জন্য কোনো ভ্যাকসিন সরবরাহ না থাকায় স্থানীয় পশুপ্রেমীরা বিপাকে পড়েছেন।

অন্যদিকে মুরগি, গরু ও ছাগল খামারিদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও অর্থ বরাদ্দ না থাকায় প্রশিক্ষণ কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। স্থানীয় খামারিরা অভিযোগ করে বলেন, প্রাণিসম্পদ অফিসে পর্যাপ্ত জনবল, ওষুধ ও প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা না থাকায় তারা নিজেরাই স্থানীয়ভাবে চিকিৎসক বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ওপর নির্ভর করতে বাধ্য হচ্ছেন। এতে চিকিৎসা ব্যয় বেড়ে যাচ্ছে এবং পশু-পাখির রোগে মৃত্যুর ঝুঁকিও বাড়ছে।

উপজেলা প্রাণিসম্পদ সম্প্রসারণ কর্মকর্তা ডা. সুমাইয়া ইসলাম বলেন, পর্যাপ্ত জনবল ও সরঞ্জাম সংকট দূর করতে উচ্চ পর্যায়ের কাছে একাধিকবার চাহিদাপত্র পাঠানো হলেও এখনও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাসনীম জাহান জানান, প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ে জনবল ও সরঞ্জামের সংকটের বিষয়টি আমাদের জানা আছে। খামারিদের প্রয়োজনীয় সেবা নিশ্চিত করতে আমরা ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে জানিয়েছি। আশা করছি শিগগিরই প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ ও ওষুধ-ভ্যাকসিন সরবরাহের ব্যবস্থা হবে।