দিলীপ বর্মণ: সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় পুজার মহলয়া আগামী রবিবার। ২৮ সেপ্টেম্বর মহাষষ্ঠীর মাধ্যমে মূল পূজার আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে। বর্তমানে উৎসবের প্রস্তুতি চলছে দেশজুড়ে। প্রতিমা সাজানোর পাশাপাশি আলোক সজ্জায় ব্যস্ত রয়েছেন শিল্পীরা। শারদীয় দুর্গোৎসব উপলক্ষে জমে উঠেছে খুলনার পোশাকের বাজার। পূজা সামনে রেখে ডিজিটাল বাজারগুলোও সরব হয়েছে। অনলাইনে চলছে নানা পোশাকের প্রচারণা। সঙ্গে বিক্রিও বেশ ভালো বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
বিক্রেতারা জানিয়েছেন, গতবারের চেয়ে এবার বিক্রি ভালো। এদিকে পূজা উপলক্ষে কেনাকাটায় বিশেষ ছাড় দিচ্ছে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। বিশেষ-বিশেষ কালেকশন নিয়ে এসেছে ফ্যাশন হাউসগুলো। ইজি, ইনফিনিটি, লা রিভ, আড়ং, ইয়োলো, টুয়েলভ বিশ্বরঙ, আঞ্জনস, জেন্টাল পার্ক, প্লাস পয়েন্ট, দেশি দশসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান নিয়ে এসেছে নতুন কালেকশন।
পূজা উপলক্ষে কাপড়ের মার্কেট ও শোরুমগুলোতে নারীদের জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে বিভিন্ন রংয়ের থ্রি-পিস, জামদানি শাড়ি, কাতান শাড়ি, লেহেঙ্গা ও তাঁতের শাড়ি। ছেলেদের জন্য রয়েছে বাহারি ডিজাইনের ধুতি, শর্ট পাঞ্জাবি, শার্ট, টি-শার্ট, প্যান্ট। তাছাড়াও জুতার দোকাগুলোতে রয়েছে বিভিন্ন রকমের জুতা। রয়েছে বাচ্চাদের বাহারি পোশাক। নগরীর বড় বাজার, খান জাহান আলী হকার্র্স মার্কেট, রেলওয়ে মার্কেট, নিউ মার্কেট, শপিং কমপ্লেক্স, সিমেট্রি রোড়সহ বড় বড় শোরুমে পূজার কেনা কাটার ধুম পড়েছে।
দোকানি ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এবারের পূজার বাজারে নারীদের শাড়ি ও সালোয়ার-কামিজের চাহিদা বেশি। কাতান, জর্জেট, সিল্ক ও এমব্রয়ডারি দিয়ে কাজ করা শাড়ির প্রতি আগ্রহ বেশি ক্রেতাদের। খান জাহান আলী হকার্র্স মার্কেটের মধু শাড়ী ঘরের মধু সাহা জানান, এবার কদর বেড়েছে টাঙ্গাইলের তাঁত ও জামদানি শাড়ির।
গতকাল বুধবার নগরীর নিউ মার্কেটে গিয়ে দেখা যায়, পূজা উপলক্ষে বেশ কেনা কাটা চলছে। কেউ শাড়ি কিনছেন, কেউ পাঞ্জাবি, কেউ আবার কিনছেন জুতা। প্রায় সবার হাতেই ছিল শপিং ব্যাগ। প্রতিটি দোকানেই ক্রেতাদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মত।
নগরীর বয়রা থেকে অন্তরা বিশ্বাস পরিবার নিয়ে নিউ মার্কেটে এসেছেন পূজার কেনাকাটা করতে। তিনি বলেন, নিজের জন্য একটা শাড়ি ও মেয়ের জন্য টপস আর থ্রি-পিস এবং ছেলের জন্য পাঞ্জাবি কিনেছি। এখন শ্বশুর-শাশুড়ি ও বাবা-মা এবং আত্মীয় স্বজনের জন্য কেনাকাটা করতে হবে।
আরেক ক্রেতা সুমন সাহা থাকেন সোনাডাঙ্গায়। এবার পূজায় অষ্টমিতে তিনি গ্রামের বাড়ি যাবেন। তাই বাড়ির সবার জন্য পোশাক কিনেছেন। তিনি বলেন, মায়ের জন্য শাড়ি, বাবার জন্য পাঞ্জাবি ও জুতা কেনা হয়েছে। এখনও আত্মীয় স্বজনের জন্য পোশাক কিনতে হবে। পূজা উপলক্ষে নিউমার্কেট সংলগ্ন আড়ং এ ভিড় বাড়তে শুরু করেছে। নগরীর সিমেট্রি রোডে জুতা স্যান্ডেলের দোকানে ব্যাপক ভিড় চোখে পড়েছে। বিক্রেতারা জানিয়েছেন গতবারের চেয়ে এবার একটু ভালো বিক্রি হচ্ছে।
নগরীর হেলাতলায় সোনার দোকানে ইমিটেশনের গয়নার বিক্রি বেড়েছে। নারীরা পোশাকের সঙ্গে মিলিয়ে কিনছেন চুড়ি, গলার হার, আংটিসহ নানা রকম অলঙ্কার। পোশাকের পাশাপাশি মেয়েদের জুয়েলারি, সিঁদুর, চুড়িসহ অন্যান্য অনুষঙ্গ বেশ ভালোই বিক্রি হচ্ছে বলে জানালেন দোকানিরা। এবারের শারদীয় দুর্গোৎসব ২৮ সেপ্টেম্বর শুরু হয়ে শেষ হবে আগামী ২ অক্টোবর। বর্তমানে উৎসবের প্রস্তুতি চলছে দেশজুড়ে।