সংবাদ আপডেট

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহী ভারত।

গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতকালে ঢাকায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত প্রণয় কুমার ভার্মা তার এ দেশের এই আগ্রহের কথা জানান।

পরে সন্ধ্যায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের ব্রিফ করেন।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, উনারা (ভারত) বাংলাদেশের সঙ্গে কাজ করতে চান। বাংলাদেশ ও ভারতের সমৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন।

হাইকমিশনার বলেন, আমরা (ভারত) শক্তিশালী এবং সমৃদ্ধ বাংলাদেশে বিশ্বাস করি। আমরা (ভারত) এক সঙ্গে কাজ করার জন্য উন্মুখ।

সৌজন্য সাক্ষাতটি অত্যন্ত আন্তরিক পরিবেশে হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব বলেন, বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আরও বেশি ইতিবাচক সম্পৃক্ততার ওপর গুরুত্বারোপসহ জনগণের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বাড়ানোসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ হয় এই সৌজন্য সাক্ষাতে।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব জানান, ড. ইউনূসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাতে হাইকশিনার প্রণয় ভার্মা বাংলাদেশে ভারতীয় দূতাবাসসহ দেশটির যেসব প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা আছে সেগুলোর নিরাপত্তা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

এই উদ্বেগ প্রসঙ্গে কুটনৈতিক এলাকাসহ বিভিন্ন স্থানে ইতোমধ্যে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান প্রেস সচিব শফিকুল আলম।

ভারতীয় হাইকমিশনারের নিরাপত্তা উদ্বেগ এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন গুজব প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, আপনারা জানেন যে সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন কিছু পোস্ট হচ্ছে, যেটা দুঃখজনক।

সৌজন্য সাক্ষাতে অতিবৃষ্টি, বন্যা, বাঁধের বিষয়ে আলাপ হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, হাইকমিশনার প্রণয় ভার্মা বলেছেন, ত্রিপুরায় বন্যা হচ্ছে সেটা খুবই অভূতপূর্ব বন্যা। ওখানে প্রায় ৫০ হাজারের মতো লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এটা উভয় পাশে (বাংলাদেশ এবং ভারত) ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি করেছে।

বাঁধ খোলা বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি রিলিজ (চলে আসা) হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, পানির উচ্চতা বেশি থাকায় বাঁধ থেকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে পানি রিলিজ হয়েছে।

বিভিন্ন ইস্যুতে বিজিবি-বিএসএফ পতাকা বৈঠকের মতো করে বন্যাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ দ্রুত সামাল দিতে উচ্চ পর্যায়ে সহযোগিতার জন্য একটি নতুন ব্যবস্থা চালু করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

পানি বণ্টন নিয়ে আলাপকালে ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, আমরা যৌথ ভাবে কাজ করে সমাধান করতে পারি।

এক্ষেত্রে ড. ইউনূস ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার ইন্দুস পানি চুক্তির কথা উল্লেখ করেন।

সৌজন্য সাক্ষাতে সংখ্যালঘু ইস্যু নিয়ে আলাপ হয়েছে জানিয়ে প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, বাংলাদেশ একটা বড় পরিবার। এখানে আমরা সবাই ভাই-বোন। এখানে সবাই মিলেমিশে এক সঙ্গে আমরা আছি।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আগেই বলেছেন কিছু কিছু (ভারতীয়) মিডিয়া সংখ্যালঘুদের নিয়ে যে সমস্ত রিপোর্ট করছে, অনেকগুলোই অতিরঞ্জিত। এটার জন্য উনি (ড. মুহাম্মদ ইউনূস) সবাইকে আহ্বান করেছেন- আসেন আপনারা বাংলাদেশ সফর করেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের ওপর নির্ভর না করে, আপনি নিজের মতো করে সরেজমিনে ঘুরে বেড়াবেন।

ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আলাপকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস বলেছেন, তার সরকার সংখ্যালঘুসহ প্রতিটি নাগরিকের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বদ্ধপরিকর।

আলোচিত সংবাদ

বিজ্ঞাপন