ডুমুরিয়া (খুলনা)থেকে কাজী আবদুল্লাহ : গতকাল শনিবার বিকেল ৩টায় খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের ডুমুরিয়া উপজেলার আঙ্গারদোহা কালভার্টের ওপর দ্রুতগামী ইটবাহী ডাম্পার ট্রাকের সরাসরি আঘাতে ইজিবাইকের চালকসহ ৫ জন নিহত হন। এ দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত ২জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মর্মান্তিক এই দুর্ঘটনায় এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, খুলনা মেট্রো-শ-১১-০৫১০ নম্বর ডাম্পার ট্রাকটি ডুমুরিয়া উপজেলার একটি ভাটা থেকে ইট নিয়ে খুলনাঞ্চলে নামিয়ে দিয়ে দুপুর ৩টার দিকে দ্রুতগতিতে খর্ণিয়ার ভাটার দিকে ফিরছিলো। ওই সময় চুকনগরের দিক থেকে ইজিবাইক চালক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস তার স্ত্রী-কন্যা-পরিজন নিয়ে উপজেলার শোভনা ইউনিয়নের জিয়েলতলা গ্রামের বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে টিপনার নতুন রাস্তার দিকে আসছিলো। ঘটনার সময় খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের আঙ্গারদোহা কালভার্টের ওপর দ্রুতগামী ট্রাকটি যাত্রীবোঝাই ইজিবাইকটিকে সরাসরি আঘাত করে। ট্রাকের ওই আঘাতে ইজিবাইকের যাত্রী উপজেলার খর্ণিয়া ইউনিয়নের আঙ্গারদোহা গ্রামের আব্দুল হান্নান মোড়লের ছেলে সাব্বির মোড়ল(২৮) ও ইজিবাইক চালকের শাশুড়ি ডুমুরিয়া উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের পশ্চিম বিলপাবলা এলাকার অনিমেষ ঢালীর স্ত্রী অমরী ঢালী(৬০) ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান। ঘটনার পরপরই এলাকার লোকজন দ্রুত এগিয়ে এসে গুরুতর আহত ইজিবাইক চালক বিশ্বজিৎ বিশ্বাসসহ অন্যান্য যাত্রীদের ডুমুরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠায়। কিন্তু হাসপাতালে পৌঁছার পর কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, চালক বিশ্বজিৎ বিশ্বাস(৩৮) ও তার আত্মীয়া উপজেলার পশ্চিম বিল পাবলা গ্রামের নিপা ঢালী(২৫) প্রাণ হারিয়েছেন। দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত বিশ্বজিতের স্ত্রী অন্তিমা বিশ্বাস(৩০), তাদের ৪ বছর বয়সী মেয়ে অর্ণি ও নিহত নিপা ঢালীর ৬ বছর বয়সী ছেলে অরিজিৎ ঢালীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দ্রুত খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিছু সময় পরে খুলনা থেকে জানা যায়, নিহত বিশ্বজিতের মেয়ে অর্ণি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েছে।
এ প্রসঙ্গে ডুমুরিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শুকান্ত সাহা বলেন, আঙ্গারদোহার মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছে। নিহতদের আপনজন বাদি হয়ে থানায় মামলা করেছে। তবে ঘাতক ট্রাকের চালক আটক না হলেও ট্রাক ও ইজিবাইক ২টি ডুমুরিয়া থানা হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। দুর্ঘটনার পর থেকে প্রায় ঘণ্টাব্যাপী সড়কে গাড়ি চলাচল বন্ধ ছিল। উভয় পাশে বাস ট্রাকসহ শতাধিক বিভিন্ন প্রকার যানবহন আটকে পড়ে যানজটের সৃষ্টি হয় এবং যাত্রীরা ভোগািন্ততে পড়েন। তবে ডুমুরিয়া থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও খর্ণিয়া হাইওয়ে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলে গাড়ি চলাচল স্বাভাবিক হয়।
উল্লেখ্য, খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কটিতে এখন প্রচুর সংখ্যায় যানবাহন চলাচল করে। কিন্তু বেশির ভাগ বাস ট্রাক গতিসীমা না মেনে চলাচল করে। খুলনা থেকে সাতক্ষীরা বা পাইকগাছাগামী বাস সোনাডাঙ্গা থেকে জিরো পয়েন্ট এসে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে অবিশিষ্ট সময়ের মধ্যে গন্তব্যে পৌঁছাতে জিরো পয়েন্ট থেকে চুকনগর সবচেয়ে দ্রুত চলে। ফলে এই এলাকাটি অধিক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।