বিভাগীয় পরামর্শ
সভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার ঃ বিশ্ব খাদ্য দিবস উপলক্ষ্যে ‘নগরে খাদ্য নিরাপত্তা ও নগর-কৃষি’ বিষয়ক বিভাগীয় পরামর্শ সভায় বক্তারা বলেছেন, খুলনা মহানগরীর সকল বাড়িতে ছাদ বাগান করা হলে খাদ্য চাহিদার অন্তত: ১৫ শতাংশ পূরণ করা সম্ভব। যেটি বর্তমান চাহিদার পরিপূরক হিসেবে কাজ করবে। এছাড়া পরিকল্পিতভাবে ছাদ বাগান করা গেলে এটিকে লাভজনক করা সম্ভব। এজন্য বক্তারা খুলনা সিটি কর্পোরেশন ও খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সমন্বয়ের মাধ্যমে ছাদ বাগানকে এগিয়ে নিতে বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করারও পরামর্শ দেন।
গতকাল শনিবার সকালে নগরীর বিএমএ মিলনায়তনে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন), সেন্টার ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড পার্টিসিপেটরি রিসার্চ (সিইপিআর) ও খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি)-বাংলাদেশ এ সভার আয়োজন করে।
বিশিষ্ট সাংবাদিক গৌরাঙ্গ নন্দীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বিভাগীয় পরামর্শ সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আলহাজ¦ তালুকদার আব্দুল খালেক।
এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ক্লিন-এর প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী। অতিথি হিশেবে উপস্থিত ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের প্যানেল মেয়র আলী আকবর টিপু এবং মহানগর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও কৃষকনেতা শ্যামল সিংহ রায়।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিটি মেয়র বলেন, বর্তমান সরকারের আন্তরিকতায় দেশের কৃষি বিপ্লব ঘটেছে। মাছ, মাংস, দুধ ও ডিমসহ কৃষি পণ্যের উৎপাদন বেড়েছে। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন কৃষিবান্ধব দেশপ্রেমিক নেতা। তিনি দেশের সবুজ বিপ্লব ও কৃষি বিপ্লবের ধারণা দেন। সম্মৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তুলতে তিনি কৃষি উন্নয়নের সূচনা করেন।
সিটি মেয়র আরও বলেন, বর্তমান সরকারের আমলে দেশের সকল ক্ষেত্রে উন্নয়ন অগ্রযাত্রা শুরু হয়েছে। কিন্তু একটি মহল তা নস্যাৎ করার অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। এক্ষেত্রে আমাদের সকলকে সজাগ থাকতে হবে। তিনি বলেন অপরিকল্পিত আবাসনের কারণে কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। সেজন্য কৃষিজমি রক্ষা করতে হবে। ছাদ কৃষি বা ছাদ বাগান নামে কৃষিতে একটি নতুন ধারা সূচিত হয়েছে। কেসিসি কর্তৃক ময়ূর নদীসহ ২২ খালের জায়গায় নতুন প্রকল্প বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। নদীর পাড় বাধাই এবং এলাকাটিকে বৃক্ষশোভিত করে চিত্তবিনোদনের জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও সিটি মেয়র তার বক্তব্যে এল্লখ করেন।
সভায় লিখিত প্রবন্ধে হাসান মেহেদী জানান, খুলনা মহানগরীর প্রায় ৪০ শতাংশ মানুষ পরবর্তী সপ্তাহের খাদ্য নিয়ে দুশ্চিন্তায় থাকেন এবং প্রায় ২৩ শতাংশ মানুষ অন্তত: একবেলা না খেয়ে থাকতে বাধ্য হন। এছাড়া দেশ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হলেও খুলনা জেলা সব সময়ই খাদ্য ঘাটতিতে থাকে। নগর-কৃষির মাধ্যমে ১০-১৫ শতাংশ খাদ্য উৎপাদন বাড়ানো গেলে এ খাদ্য ঘাটতি অনেকটাই কমে আসবে।
পরামর্শ সভায় বক্তারা নগর-কৃষি প্রবর্তন ও উন্নয়নে নীতিমালা, কর্মপরিকল্পনা ও গাইডলাইন তৈরি, নগর-কৃষিকে উৎসাহিত করার জন্য কর রেয়াতসহ অন্যান্য প্রণোদনা প্রদান, খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে নতুন ভবন তৈরির নীতিমালায় ছাদকৃষি বাধ্যতামূলক করা, সিটি কর্পোরেশনে কৃষি সম্প্রসারণ দপ্তর স্থাপন ও জনবল নিযুক্ত করা, নগর কৃষির জন্য সিটি কর্পোরেশনে বাজেট বরাদ্দ করা, মহানগরীতে নগরকৃষি নার্সারি স্থাপন করা, নাগরকিদের সচেতন করার উদ্দেশ্যে প্রচারাভিযান চালানো এবং নগর-কৃষির জন্য আলাদা মনিটরিং সেল গঠন করার দাবি জানান।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন পানি অধিকার কমিটির সদস্য সচিব হুমায়ুন কবির ববি, কাউন্সিলর, মাহমুদা বেগম, কৃষি কর্মকর্তা অঞ্জন কুমার বিশ্বাস, পরিবর্তন-খুলনা’র নাজমুল আযম ডেভিড, জনউদ্যোগ-এর সদস্য সচিব মহেন্দ্রনাথ সেন, দলিত-এর জুলি, টিআইবি’র আব্দুল্লাহ আল মামুন, রূপান্তরের শেখ জার্জিস উল্লাহ, ধ্রুপদ একাডেমির বাসুদেব বিশ্বাস বাবলা, এ্যাওসেড-এর হেলেন খাতুন, মাছরাঙা টেলিভিশনের মোস্তফা জামাল পপলু, শুভ সংঘের আবু সাঈদ খান, দৈনিক পূর্বাঞ্চলের এইচ এম আলাউদ্দিন, নিজেরা করি’র নাসিমা খাতুন, সুশীলনের শেখ নূরুননবী, ক্লিন-এর মাহবুব আলম প্রিন্স, শারমিন আক্তার বৃষ্টি, ফাহাদ-বিন-রফিক, কাকলী হালদার কেকা প্রমুখ।