স্বপ্নের পদ্মা সেতু উদ্বোধনকে কেন্দ্র করে সুসজ্জিত করা হয়েছে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ে। অভিনন্দন আর শুভেচ্ছা বার্তার ব্যানারে ছেয়ে গেছে এক্সপ্রেসওয়ে।দুর্নীতির চেষ্টার ভিত্তিহীন অভিযোগ এনে বিশ্ব ব্যাংকের মুখ ফিরিয়ে নেওয়া, রাজনৈতিক বাদানুবাদ, গুজবসহ নানা প্রতিবন্ধকতা জয় করে প্রমত্বা পদ্মার বুকে এখন সগর্বে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের দীর্ঘতম সেতু। শনিবার পদ্মা সেতুর স্বপ্নদ্রষ্টা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উদ্বোধনকে ঘিরে এবং সক্ষমতার প্রতীক পদ্মা সেতু বরণের জন্য ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের পাশে ছোট-বড় বিলবোর্ডগুলো এখন সুসজ্জিত হয়েছে দলীয় নেতা-কর্মীদের পোস্টার আর ব্যানারে।স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে শরীয়তপুরে ‘পদ্মা সেতু দেয়ালে-খেয়ালে’ স্বপ্নের পদ্মা সেতুর উদ্বোধনকে ঘিরে শরীয়তপুরে ‘পদ্মা সেতু দেয়ালে-খেয়ালে’
স্থানীয় নেতা-কর্মীদের স্থানীয়দের মধ্যে উৎসবের আমেজ বইছে। দক্ষিণ কেরানীগঞ্জের আব্দুল্লাপুর থেকে শুরু করে ধলেশ্বরী টোলপ্লাজা কুচিয়ামোড়া ও নিমতলা বাসস্ট্যান্ডগুলোর আশপাশে থেকে শুরু করে মাওয়া পর্যন্ত ছেয়ে গেছে পোস্টার আর ব্যানারে।পদ্মা সেতু উদ্বোধনী অনুষ্ঠান হবে খুবই জমকালো। মূল উদ্বোধনী অনুষ্ঠান ৬৪টি জেলাতে দেখানোর ব্যবস্থা থাকবে। অর্থাৎ দেশ জুড়ে উৎসব পালন করা হবে। শনিবার সকাল ১০টায় মুন্সীগঞ্জের মাওয়া প্রান্তে পদ্মা সেতু উদ্বোধনী নামফলক উন্মোচনের পর টোলপ্লাজার সামনে সুধী সমাবেশে বক্তব্য রাখবেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর সেতু পেরিয়ে জাজিরা প্রান্তে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। শরীয়তপুরের জাজিরা প্রান্তে নামফলক উন্মোচনের পর বিকেলে জনসভায় বক্তব্য দিবেন প্রধানমন্ত্রী।এদিকে বাংলাদেশের ইতিহাসে সব চেয়ে বড় মেগা প্রকল্প পদ্মা সেতুর শতভাগ নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুর দায়িত্ব সেতু কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছে।এ বিষয়ে প্রকল্প পরিচালক মো. শফিকুল ইসলাম বলেন, ভায়াডাক্টসহ পদ্মা সেতুর শতভাগ কাজ সঠিকভাবে শিডিউল মোতাবেক শেষ হয়েছে। রোড মার্কিং, রেলিং স্থাপনসহ ছোটখাট যেসব কাজ বাকি ছিল সেগুলোও সম্পন্ন হওয়ার পর ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বুধবার আমাদের সেতু বুঝিয়ে দিয়েছে। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। উদ্বোধনের পরই খুলে দেওয়া হবে পদ্মা সেতু।পদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলেন ইউনূসপদ্মা সেতু উদ্বোধন অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পেলেন ইউনূস
মূল সেতুর নির্বাহী প্রকৗশলী দেওয়ান মো. আবদুল কাদের জানিয়েছেন, মূল সেতু, নদী শাসন, সংযোগ সড়ক ও সার্ভিস এরিয়া, জমি অধিগ্রহণ ও পুনর্বাসনসহ ছয়টি ভাগে পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজ হয়েছে। ২০১৪ সালের ২৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সেতুর কাজ শুরু করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চীনের মেজর ব্রিজ ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (এমবিইসি)।প্রকল্পের মেয়াদ রয়েছে আরও এক বছর। ২০২৩ সালের ৩০ জুন এই প্রকল্প শেষ হবে। এই এক বছরের মধ্যে নির্মাণ কাজের কোনো ত্রুটি থাকলে, তা নিজ দায়িত্বে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মেরামত করে দেবে।এর আগে মাওয়া অংশের সংযোগ সড়কের কাজ ২০১৬ সালের ২৭ জুলাই, জাজিরা অংশের সংযোগ সড়কের কাজ ২০১৭ সালের ২ জুন, সার্ভিস এরিয়া দুইয়ের কাজ ২০১৬ সালের ১২ জুলাই সম্পন্ন হয়। ১২ হাজার ১৩৩ কোটি টাকার মূল সেতুর কাজ বুধবার সম্পন্ন হলো। তবে নদী শাসনের কাজ এখনো প্রায় ৭ শতাংশ বাকি। আগামী বছরের ৩০ জুন এই কাজ শেষ হবে। প্রায় ৪ শতাংশ বাকি রয়েছে ভূমি অধিগ্রহণ, পুনর্বাসন ও পরিবেশগত ব্যবস্থাপনার কাজ।