পূর্ব ইউক্রেনের বাখমুত নগরীর দখল নিতে গত ছয়মাস ধরে রুশ বাহিনী লড়াই করছে। ছোট শহরটি দখল করতে পারলে গত গ্রীষ্মের পর এটিই হবে রুশ বাহিনীর বড় সাফল্য। সেখানে এরইমধ্যে রাশিয়ার ২০ থেকে ৩০ হাজার সেনা হতাহত হয়েছে বলে দাবি করেছেন পশ্চিমা কর্মকর্তারা। এছাড়া, ছয় মাসের বেশি সময় ধরে ক্ষেপণাস্ত্র ও গোলার আঘাতে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে গেছে বাখমুত।তারা বলেন, যতটা দীর্ঘ সময় ধরে ও তীব্র আকারে সেখানে যুদ্ধ হয়েছে, তা সব পূর্বানুমানকে ছাড়িয়ে গেছে এবং বাখমুতকে কৌশলগত দিক দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।অপরদিকে, কয়েকদিন আগে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা বিষয়ক একটি বৈঠকে দেওয়া এক বিবৃতিতে দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু দাবি করেছেন, এক ফেব্রুয়ারি মাসেই ইউক্রেনের ১১ হাজার সেনা নিহত হয়েছে।রুশ ভাড়াটে সেনাদল ওয়াগনার নগরীটির পূর্বাঞ্চলের পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে বলে দাবি করেছে। অন্যদিকে, ইউক্রেন বলছে, তারা এখনও হাল ছাড়েনি। প্রতিরোধ লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। গত গ্রীষ্মে বাখমুতে যখন লড়াই শুরু হয় তখনই নগরীর প্রায় ৯০ শতাংশ বাসিন্দা প্রাণ বাঁচাতে বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়।নগরীর পূর্বাঞ্চল দখলের রাশিয়ার দাবির বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যদি এ দাবি সত্যও হয় তাহলেও মস্কো অনেক কিছু হারিয়ে খুব সামান্যই অর্জন করতে পারবে বলে বিশ্বাস পশ্চিমা কর্মকর্তাদের। অন্যদিকে, ইউক্রেনের জন্য বাখমুত ‘রাশিয়ার অনেক সেনাকে হত্যা করার অসাধারণ একটি সুযোগ’ বলে মত এক পশ্চিমা কর্মকর্তার।সামাজিক যোগাযোগ ‍মাধ্যম টেলিগ্রামে ওই বিবৃতিটি পোস্ট করা হয় বলে জানায় বিবিসি। বাখমুত যুদ্ধে রাশিয়ার হয়ে মূলত যুদ্ধ করছে তাদের ভাড়াটে যোদ্ধাবাহিনী ওয়াগনার। সম্প্রতি ওয়াগনার বাহিনীর সঙ্গে মস্কোর নানা বিষয়ে বিরোধের চিত্র বেশ স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।কয়েকদিন আগে ওয়াগনার প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন মস্কোর বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অভিযোগ তুলেছেন। বলেছেন, যুদ্ধের জন্য মস্কো থেকে তাদের যে পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ ও যোদ্ধা পাঠানোর কথা ছিল তারা সেটা করেনি।যদিও রাশিয়ার আক্রমণের আরও বিস্তার ঘটানোর লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না বলে জানান পশ্চিমা কর্মকর্তারা।বরং ইউক্রেন তাদের পশ্চিমা মিত্রদের কাছ থেকে আরও বেশি অত্যাধুনিক অস্ত্র পাচ্ছে। সেগুলোর মধ্যে ট্যাঙ্ক এবং সাঁজোয়া যান রয়েছে। তারা এখন তাদের নিজস্ব আক্রমণের পরিকল্পনা সাজাচ্ছে এবং আগামী মে মাসের আগেই তারা রুশ বাহিনীর উপর ঝাঁপিয়ে পড়বে বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তারা।