নেপাল থেকে সাফের শিরোপা নিয়ে দেশে ফিরে বীরোচিত সংবর্ধনা ঠিকই পেয়েছেন। এর সঙ্গে বিমানবন্দরে লাগেজ থেকে নগদ অর্থ চুরি হওয়ার মতো বিড়ম্বনায় পড়তে হয়ছে সাফজয়ী কৃষ্ণা-শামসুন্নাহারদের। তবে বিমানবন্দর থেকে খেলোয়াড়ের টাকা চুরি ও লাগেজ ভাঙার কোনো ঘটনা ঘটেনি বলে জানিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে এ কথা জানিয়ে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) কর্মকর্তা ইমরানকে অক্ষতভাবে লাগেজ হস্তান্তর করা হয়। পাঁচটি ক্যামেরার ফুটেজ বিশ্লেষণ করে লাগেজ ভাঙা, চুরি— এসবের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। বাফুফে কর্মকর্তা অক্ষত দেখেই লাগেজ নিয়ে গেছেন।’বিমানের এই কর্মকর্তা আরও জানান, ‘বিমানের ল্যান্ডিং এরিয়া, ব্যাগেজ মেকআপ এরিয়ায় ট্রলির আগমন, ব্যাগেজ মেকআপ এরিয়ার প্রথম লাগেজ ড্রপ, বেল্ট নম্বর ৮-এ লাগেজ আসা, ব্যাগেজ মেকআপ এরিয়ায় সর্বশেষ লাগেজ আসা— এই পাঁচটি এরিয়ার সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করা হয়েছে। তবে এখানে লাগেজের তালা ভাঙা বা চুরির প্রমাণ পাওয়া যায়নি।’গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম আরও জানান, ‘ফুটবলারদের লাগেজ থেকে চুরি হওয়ার বিষয়টি বেশ গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বক্তব্য জানানো হবে।’এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে বাফুফে থেকে অর্থ চুরির ঘটনাটি নিশ্চিত করে সিভিল এভিয়েশনের কাছে একটি অভিযোগ করা হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে নিশ্চিত করেন বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ। তিনি বলেন, ‘কৃষ্ণা রানী সরকারের ব্যাগ থেকে ৯০০ ডলার এবং শামসুন্নাহারের ব্যাগ থেকে ৪০০ ডলার চুরির বিষয়ে অভিযোগ দেওয়ার পর সিভিলএভিয়েশন গুরুত্ব সহকারে তদন্ত করছে।’এদিকে কৃষ্ণা-শামসুন্নাহারের লাগেজ থেকে ১৩০০ ডলার চুরির ঘটনায় আজই বাফুফেকে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ার কথা আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন)।বৃহস্পতিবার সকালে কৃষ্ণাদের লাগেজ থেকে নগদ অর্থসহ অন্যান্য সামগ্রী চুরির ঘটনাটি সামনে আসে।কৃষ্ণা রানী গণমাধ্যমকে জানান, ‘দেশে আসার পর আমাদের জন্য বড় ধরনের আয়োজন ছিল। এ জন্য আমরা আমাদের হ্যান্ডব্যাগটা বড় লাগেজের ভেতরে রেখেছিলাম। পরে রাতে লাগেজ হাতে পেয়ে যখন সেটা খুলি, তখন দেখি ভেতরের ছোট ব্যাগের চেইন খোলা।হারানো অর্থের পরিমাণ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘ব্যাগের ভেতরে আমার ৯০০ ডলার, শামসুন্নাহারের ৪০০ ডলারসহ আরও অনেকের কিছু ডলার ছিল। বাংলাদেশি টাকায় যার মূল্য আড়াই লাখ টাকার মতো। সেগুলোর কিছুই নেই ব্যাগের ভেতর।বিমানবন্দরে নেমে সংবর্ধনার কারণে নিজেদের ব্যাগগুলো নিজেরা সংগ্রহ করতে পারেনি ফুটবলাররা। সেখান থেকে ব্যাগগুলো সংগ্রহ করে বাফুফের প্রতিনিধিরা। রাত পর্যন্ত সংবর্ধনা শেষে ফুটবলাররা যখন নিজেদের লাগেজ হাতে পান, তখনই বিষয়টি নজরে আসে সবার।নগদ অর্থের পাশাপাশি অনেকের লাগেজের তালাও ভাঙ্গা ছিল বলে জানানো হয়েছে বাফুফের পক্ষ থেকে। সেসব লাগেজে করে নিজেদের প্রিয়জনদের জন্য শাড়ি, প্রসাধনীসহ মূল্যবান উপহার এনেছিলেন ফুটবলাররা।