/ যশোর অভয়নগরে ব্যবসায়ীকে মাটিতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের মামলার আসামি জনি খুলনা থেকে গ্রেপ্তার

যশোর অভয়নগরে ব্যবসায়ীকে মাটিতে পুঁতে ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের মামলার আসামি জনি খুলনা থেকে গ্রেপ্তার

যশোর জেলার অভয়নগরে আলোচিত ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপুকে মাটিতে পুঁতে রেখে নির্যাতন ও ৪ কোটি টাকা চাঁদা আদায়ের মামলার অন্যতম পলাতক আসামি আসাদুজ্জামান জনিকে খুলনা থেকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। গ্রেপ্তারের সময় তিনি নগরীর একটি হোটেলে অবস্থান করছিলেন।

যৌথ বাহিনীর সদস্যরা বুধবার (১৩ আগস্ট) রাতে খুলনা শহরের হোটেল রোজ গার্ডেন-২ এ গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালায়। সেখানে একটি কক্ষে লুকিয়ে ছিলেন আসাদুজ্জামান জনি। অভিযান শেষে তাকে আটক করে যৌথ বাহিনীর ক্যাম্পে নেওয়া হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরেই তাকে অভয়নগর থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়।

আসাদুজ্জামান জনি নওয়াপাড়া পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন। তবে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে ২০২৪ সালের ২১ নভেম্বর বিএনপির পক্ষ থেকে তার সাংগঠনিক পদ স্থগিত করা হয়। স্থানীয় রাজনৈতিক সূত্রে জানা যায়, দলীয় পদ হারানোর পরও তিনি বিভিন্ন সময় এলাকায় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা চালিয়ে আসছিলেন এবং অপরাধচক্রের সাথে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ছিল।

মামলার বিবরনে জানা যায় অভয়নগরের ব্যবসায়ী শাহনেওয়াজ কবীর টিপু ২০২৪ সালের শেষ দিকে এক ভয়াবহ অভিজ্ঞতার শিকার হন। অভিযোগ অনুযায়ী, আসামি জনি ও তার সহযোগীরা পরিকল্পিতভাবে টিপুকে অপহরণ করে নির্জন স্থানে নিয়ে যায়। সেখানে তাকে মাটিতে কোমর পর্যন্ত পুঁতে রেখে শারীরিক নির্যাতন চালানো হয় এবং মুক্তিপণ হিসেবে ৪ কোটি টাকা দাবি করা হয়। ঘটনার ভিডিও ধারণ করে ভুক্তভোগীর পরিবারকে ভয় দেখানো হয় যাতে তারা পুলিশে অভিযোগ না করে।

ঘটনার পর টিপুর পরিবার থানায় মামলা করলে পুলিশের পাশাপাশি র‌্যাব ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আসামিদের গ্রেপ্তারের জন্য অভিযান শুরু করে। মামলার একাধিক আসামি এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হলেও জনি দীর্ঘদিন পলাতক ছিলেন।

অভয়নগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল আলিম বলেন, যৌথ বাহিনী থেকে আসাদুজ্জামান জনিকে বুঝে পেয়েছি। বর্তমানে তাকে থানায় রেখে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তার কাছ থেকে মামলার অন্যান্য পলাতক আসামিদের অবস্থান এবং ঘটনার বিস্তারিত তথ্য বের করার চেষ্টা চলছে।

পুলিশ জানিয়েছে, জনিকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড আবেদন করা হবে, যাতে পুরো চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের ঘটনার পেছনের মূল পরিকল্পনাকারী এবং অর্থ লেনদেনের তথ্য উদঘাটন করা যায়। পাশাপাশি, তার বিরুদ্ধে পূর্বের কোনো অপরাধমূলক রেকর্ড আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হবে।