# দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়

স্টাফ রিপোর্টার ঃ দীর্ঘ ৭ বছর পর খুলনার ঐতিহ্যবাহী শহিদ হাদিস পার্কের পুকুরে দিনব্যাপী মৎস্য শিকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করে খুলনা সিটি করপোরেশন (কেসিসি)। মাছ শিকার দেখতে গতকাল শুক্রবার সারাদিনই পার্কে ছিলো দর্শনার্থীদের উপচেপড়া ভিড়। সন্ধ্যায় সেরা ৩ মৎস্য শিকারিকে পুরস্কার প্রদান করেন সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
কেসিসি থেকে জানা গেছে, ২০১৩-১৪ সালে পার্কের পুকুর সংস্কারের পর থেকে প্রতিবছর মাছের পোনা অবমুক্ত করা হয়। শুধু কেসিসি নয়, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনও পুকুরে পোনা অবমুক্ত করে থাকে। কিন্তু দীর্ঘ ৭ বছরে পুকুরের মাছ ধরা হয়নি। মাছ বেড়ে যাওয়ায় তাদের স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত হচ্ছিলো। এজন্য মৎস্য বিভাগের পরামর্শে মাছ শিকারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
সূত্রটি জানায়, মাছ ধরতে পুকুরের চারপাশে ৩৫টি ঘাট তৈরি করা হয়েছে। প্রতিটি ঘাটের মূল্য ধরা হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। কেসিসি ১০টি সংরক্ষিত রেখে বাকি ২৫টি ঘাট সৌখিন শিকারিদের জন্য উন্মুক্ত করে। ২৫টি ঘাটে মাছ ধরতে ১৯৯ জন আবেদন করেন। তাদের মধ্যে লটারি করে ২৫ জনকে মাছ ধরার অনুমতি দেওয়া হয়। পার্কের মাছ ধরা বাবদ কেসিসির রাজস্ব আয় হয়েছে সাড়ে ১৭ লাখ টাকা।
দুপুরে পার্ক ঘুরে দেখা গেছে, পুকুরের চারদিকে অস্থায়ী ঘাট তৈরি করা হয়েছে। সেখানে মাছের খাবার ব্যবহার করে নিজেদের কৌশলমতো বড়শি দিয়ে মাছ ধরছেন শিকারিরা। তাদের বড়শিতে ধরা পড়ছে রুই, কাতলাসহ বড় বড় মাছ। মাছ ধরা দেখতে পুকুর পাড়ে ভিড় করেছেন হাজারো মানুষ।
কেসিসির বৈষয়িক কর্মকর্তা নুরুজ্জামান তালুকদার জানান, যারা ঘাট কিনেছেন তারা তিন বার মাছ ধরতে পারবেন। এর মধ্যে প্রথম দিন ছিলো গতকাল শুক্রবার। এছাড়া ৩ ডিসেম্বর (শুক্রবার) ও ১৭ ডিসেম্বর (শুক্রবার)ও মাছ ধরার সুযোগ পাবেন।
এদিকে সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক সন্ধ্যা ৬টায় শহীদ হাদিস পার্কে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। সিটি মেয়র প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীসহ উপস্থিত সকলকে অভিনন্দন জানান এবং আগামীতেও এ ধরনের আনন্দমুখর প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হবে বলে উল্লেখ করেন।
মৎস্য শিকার প্রতিযোগিতায় শেখ শাহজালাল হোসেন সুজন ১ম, বিপ্লব বৈরাগী ২য় এবং মো: হাফিজুর রহমান ৩য় স্থান অধিকার করেন। সিটি মেয়র পুরস্কার হিসেবে ১ম স্থান অধিকারীর হাতে ৪৩ ইঞ্চি এলইডি টিভি, ২য় স্থান অধিকারীর হাতে স্মার্ট ফোন এবং ৩য় স্থান অধিকারীর হাতে হুইল সেট তুলে দেন। উল্লেখ্য, সর্বমোট ৩৫ জন মৎস্য শিকারী এ প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।
কেসিসি’র মেয়র প্যানেলের সদস্য ও মৎস্য শিকার আয়োজক কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর মো: আলী আকবর টিপুর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কাউন্সিলর মো: শামছুজ্জামান মিয়া স্বপন, মো: সুলতান মাহামুদ পিন্টু, এস্টেট অফিসার নুরুজ্জামান তালুকদারসহ নগরীর গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। কয়েক হাজার দর্শক এ প্রতিযোগিতা উপভোগ করেন।