/ জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের খুলনায় ধর্মঘট, ১৫ জেলায় তেল বিপণন বন্ধ

জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের খুলনায় ধর্মঘট, ১৫ জেলায় তেল বিপণন বন্ধ

জ্বালানি তেল ব্যবসায়ীদের ১০ দফা দাবিতে খুলনায় ধর্মঘট, ১৫ জেলায় তেল বিপণন বন্ধ


কমিশন বৃদ্ধি ও ডিলারশীপ ছাড়া জ্বালানি তেল বিক্রি বন্ধসহ ১০ দফা দাবিতে খুলনায় সকাল থেকে ধর্মঘটে নেমেছেন পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক-শ্রমিকরা। বাংলাদেশ পেট্রোল পাম্প ও ট্যাংকলরি মালিক ঐক্য পরিষদের ডাকে রোববার (২৫ মে) ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি চলবে দুপুর ২টা পর্যন্ত।

খুলনার খালিশপুর কাশিপুরে অবস্থিত পদ্মা, মেঘনা ও যমুনা ডিপো থেকে জ্বালানি তেল উত্তোলন বন্ধ রেখে ডিপোগুলোর সামনেই ট্যাংকলরি দাঁড় করিয়ে রাখেন শ্রমিকরা। পরে মালিক ও শ্রমিকরা ট্যাংকলরি ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেন।

এই ধর্মঘটের ফলে খুলনা বিভাগের ১০ জেলা এবং বৃহত্তর ফরিদপুর অঞ্চলের ৫ জেলায় তেল বিপণন কার্যক্রম, পেট্রোল পাম্পে তেল সরবরাহ এবং ট্যাংকলরির চলাচল সম্পূর্ণভাবে বন্ধ রয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

জ্বালানি ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, বিগত বছরগুলোতে বারবার কমিশন বৃদ্ধির দাবিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে আবেদন করা হলেও কোনো কার্যকর সিদ্ধান্ত আসেনি। অথচ দেশে জ্বালানি তেলের দাম কয়েক দফা বাড়লেও ডিলারদের কমিশন অপরিবর্তিত রয়েছে।

ঐক্য পরিষদের নেতৃবৃন্দ জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে কমিশন বৃদ্ধি না পেলে পেট্রোল পাম্প পরিচালনা ব্যয় বহন করা অসম্ভব হয়ে পড়বে। তারা দাবি জানান, প্রতি লিটার তেলের বিক্রয়মূল্যের ন্যূনতম ৭ শতাংশ হারে কমিশন নির্ধারণ করতে হবে।

১০ দফা দাবির মধ্যে রয়েছে:

১. প্রতি লিটারে ৭% হারে কমিশন নির্ধারণ।
২.সড়ক ও জনপথ (সওজ) অধিদপ্তরের ইজারা এবং ভূমি ইজারা মাশুল পূর্বের হারে বহাল রাখা।
৩.পাম্প সংযোগ সড়কের ভূমি নবায়ন আবেদন গ্রহণের সঙ্গে ইজারা মাশুলের পে-অর্ডার জমা দিলেই নবায়ন অনুমোদিত হবে এমন বিধান চালু।
৪.বিএসটিআই কেবল ডিসপেন্সিং ইউনিট, স্টেম্পিং এবং পরিমাপ যাচাই করবে, অতিরিক্ত ফি বাতিল।
৫.আন্ডারগ্রাউন্ড ট্যাংক ক্যালিব্রেশন, ডিপ রড পরীক্ষণের ফি ও নিবন্ধন প্রথা বাতিল।
৬.পেট্রোল পাম্পকে কমিশন এজেন্ট বিবেচনায় এনে পরিবেশ, বিআরসি, কলকারখানা ও ফায়ার লাইসেন্স বাধ্যবাধকতা বাতিল।
৭.ঘরের মধ্যে বা খোলা স্থানে অবৈধভাবে স্থাপিত জ্বালানি বিক্রয় মেশিন বন্ধ।
৮.বিপণন কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে ডিলারশিপ ছাড়া সরাসরি তেল বিক্রি বন্ধ।
৯.ট্যাংকলরি চালকদের লাইসেন্স নবায়ন ও ইস্যু প্রক্রিয়া সহজ করা।
১০.ট্যাংকলরি থামিয়ে যত্রতত্র কাগজপত্র পরীক্ষার পরিবর্তে, কেবল ডিপো গেটে পরীক্ষার সরকারি সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন ও আন্তঃজেলা রুট পারমিট প্রদান।

নেতারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, সরকার দাবি বাস্তবায়নে উদ্যোগ না নিলে অনির্দিষ্টকালের জন্য জ্বালানি তেল সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এই ধর্মঘটের কারণে খুলনা বিভাগ ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে জ্বালানি সংকট দেখা দিতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এর প্রভাব পড়তে পারে পরিবহন, কৃষি সেচ এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন খাতে