স্টাফ রিপোর্টার ঃ শুনানীর মধ্যদিয়ে প্রায় ২৬ বছর পর খুলনার জননিরাপত্তা বিঘœকারী ট্রাইব্যুনালে গতকাল মঙ্গলবার থেকে জাতীয় পার্টি নেতা শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মামলার আসামী সাবেক এমপি আব্দুল গফফার বিশ^াস এসময় কাঠগড়ায় অবস্থান করেন। তবে সাক্ষী ম্যাজিষ্ট্রেট সগীর আহমেদের চোখের অপারেশন হওয়ায় তিনি সাক্ষ্য দিতে আসতে পারেননি বলে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী আদালতকে জানান। বাদীপক্ষে ৩ নম্বর সাক্ষী শেখ মনিরুজ্জামান এলু গতকাল সংশ্লিষ্ট আদালতে একটি না-রাজী আবেদন জমা দিয়েছেন। এতে মামলাটির সুষ্ঠু বিচারের স্বার্থে প্রকৃত অবস্থায় যথাযথ গুরুত্ব বিবেচনা করত মামলাটি দ্রুত নিষ্পত্তি ও তার পরিবারের নিরাপত্তা দাবি করা হয়। বিচারক সাইফুজ্জামান হিরো আগামী ৩ মার্চ এ মামলার পরবর্তী দিন ধার্য করেন।
শুনানীকালে আসামী পক্ষে ছিলেন এডভোকেট এস এম মঞ্জুরুল আলম, এড. পারভেজ আলম খান, এড. তৌহিদুর রহমান তুষারসহ ডজন খানেকের বেশি আইনজীবী। অপরদিকে, রাষ্ট্র পক্ষে পিপি এড. আরিফ মাহমুদ লিটন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, এড. মামুন মোর্শেদ মুন্না ও এড. মোহন মুখার্জী।
বাদীপক্ষের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে দেয়া না-রাজী আবেদনে উল্লেখ করা হয়, শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলাটি একটি সুপরিকল্পিত হত্যা মামলা। খুলনা বিভাগের নাম্বার ওয়ান কিলার পূর্ব পরিকল্পনার আলোকে ভাড়াটিয়া সন্ত্রাসীদের দিয়ে সুকৌশলে তাকে হত্যা করেন। মামলার আসামীরা ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিলেও মূল হোতারা ধরা ছোঁয়ার বাইরে অবস্থান করে মামলাটি হাইকোর্টে স্থগিত রাখে। এছাড়া কাশেম হত্যা মামলার ধারাবাহিকতায় খুলনায় আরও কয়েকটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ড সংঘটিত হয় বলেও আবেদনে উল্লেখ করা হয়। এজন্য নিহত কাশেম পরিবারে বিশেষ করে ৩ নম্বর সাক্ষীর পরিবারে অজানা আতংক বিরাজ করছে। তাই চলমান চাঞ্চল্যকর শেখ আবুল কাশেম হত্যা মামলার চার্জশীটকে না-রাজী দিতে তিনি গতকাল আদালতে হাজির হন।
উল্লেখ্য, ১৯৯৫ সালের ২৫ এপ্রিল দুপুরে খুলনা সদর থানার অদূরে স্যার ইকবাল রোডে বেসিক ব্যাংকের সামনে অস্ত্রধারীদের গুলিতে শেখ আবুল কাশেম ও তার ড্রাইভার মিখাইল মারা যান। খুলনা থানায় মামলা দায়ের হলেও পরে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পড়ে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) ওপর। সিআইডি দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১৯৯৬ সালের ৫ মে ১০ জনের নামে অভিযোগপত্র দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।
পরে মামলাটি হাইকোর্টে স্থগিত থাকার পর গতকাল থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচারিক কার্যক্রম পুনরায় শুরু হয়।