/ চাহিদার তুলনায় কোরবানীযোগ্য পশু বেশি জাল নোট চক্রের বিরুদ্ধে কড়া নজরদারি

চাহিদার তুলনায় কোরবানীযোগ্য পশু বেশি জাল নোট চক্রের বিরুদ্ধে কড়া নজরদারি

খুলনায় কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনা শুরু

খুলনায় পবিত্র ঈদ-উল-আজহার (কোরবানির ঈদ) উপলক্ষে কোরবানির পশুর হাটগুলোতে ক্রেতা-বিক্রেতাদের আনাগোনা শুরু হয়েছে। এবার পশুর সরবরাহ চাহিদার তুলনায় বেশি, তবে জাল নোট চক্রের তৎপরতায় উদ্বেগ বেড়েছে। প্রশাসন ও পুলিশ নিরাপত্তা এবং বাজার ব্যবস্থাপনায় কড়া নজরদারি চালাচ্ছে।
খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, এ বছর জেলায় কোরবানির জন্য চাহিদা ১ লাখ ৫৬হাজার ২শত ২৮টি, আর প্রাপ্যতা ১লাখ ৬৩হাজার ৩১টি। ফলে ৬হাজার ৭শত ৪৬টি পশু উদ্বৃত্ত থাকছে।
খুলনা বিভাগের ১০ জেলায় চাহিদা ১০লাখ ৪৬হাজার ৬শত ৮৯টি, আর প্রস্তুত ১৪লাখ ৩৪হাজার ৫শত ৭৮টি পশু। উদ্বৃত্তের পরিমাণ ৩লাখ ৮৭হাজার ৮শত ৮৯টি।
বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ডা. নুরুল্লাহ মো. আহসান বলেন, এবার খামারি ও ব্যক্তি পর্যায়ে বিপুল পশু প্রস্তুত হওয়ায় কোরবানির পশুর বাজার স্থিতিশীল থাকবে। কোনো সংকট হওয়ার আশঙ্কা নেই।
খুলনা জেলার ৯ উপজেলায় ২২টি অস্থায়ী হাট বসানো হয়েছে। খুলনা মহানগরীর প্রধান হাট জোড়াগেট ১ জুন ঈদের দিন ভোর পর্যন্ত। উপজেলার মধ্যে রয়েছে দিঘলিয়া (যোগীপোল, মোল্লাডাঙ্গা), রূপসা (আমতলা), ডুমুরিয়া (আঠারো মাইল, খর্নিয়া, শাহাপুর), পাইকগাছা (গদাইপুর, চাঁদখালি), বটিয়াঘাটা (ভান্ডারকোট, বারোআড়িয়া, তালপাড়া), কয়রা (বাগালি, ইসলামপুর), দাকোপ (লাইডোব, চালনা বাজার), ফুলতলা (ফুলতলা বাজার)। এছাড়া বিশেষ দিন অনুযায়ী হাট রয়েছে শুক্রবার বটিয়াঘাটা (ভান্ডারকোট), কয়রা (বাগালি), রূপসা (আমতলা)। শনিবারে কয়রা (ইসলামপুর ঈদগাহ মাঠ)
রবিবারে ফুলতলা (বাজার), পাইকগাছা (চাঁদখালি), সোমবারে রূপসা (আমতলা), ডুমুরিয়া (আঠারো মাইল) মঙ্গলবারে দাকোপ (লাইডোব বাজার), বুধবারে দিঘলিয়া (মোল্লাডাঙ্গা), দাকোপ (চালনা বাজার), কয়রা (ইসলামপুর, বাগালি) এবং বৃহস্পতিবারে ডুমুরিয়া (খর্নিয়া, শাহাপুর) হাট।
এদিকে কোরবানির হাট ও বিভিন্ন বাজার গুলোতে জাল টাকা চক্র সক্রিয় হয়ে উঠেছে। পুলিশ জানিয়েছে, চক্রগুলো হাটের ভিড়ের মধ্যে এবং বাজারের ব্যস্ত সময়ে জাল টাকা ছড়াচ্ছে। ইতোমধ্যে পুলিশের হাতে ২৪ মে কয়রা বাজারে ১লাখ ৭৮ হাজার টাকার জাল নোটসহ দুইজন গ্রেফতার। ২১ মে সাঁচি বুনিয়া বিশ্বরোড মোড়ে ৫ লাখ টাকার জাল নোটসহ একজন আটক। এছাড়া ১৮ জানুয়ারি ৪লাখ ৬১হাজার টাকার জাল নোটসহ আরও এক অভিযুক্ত ধরা পড়ে।
জেলা পুলিশ সুত্রে জানা গেছে জাল নোট ছাড়াও পশু চুরি, মলম পার্টি, অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা রোধে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি হাটে সিসি ক্যামেরা, পুলিশি টহল, মাইকিং এবং সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হচ্ছে।
প্রতিটি হাটে ভেটেরিনারি টিম পশু পরীক্ষা করে সনদ দিচ্ছে। সনদবিহীন পশু বিক্রি নিষিদ্ধ। হাটগুলোতে সিসি ক্যামেরা, মোবাইল টয়লেট, পরিচ্ছন্নতা, হ্যান্ড স্যানিটাইজার, মাস্ক ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ ও বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করা হয়েছে।
পশু ব্যবসায়ী আহাদ শেখ বলেন, সরবরাহ ভালো থাকায় দাম মোটামুটি স্থিতিশীল, তবে জাল নোটের ঝুঁকি থাকায় সতর্ক থাকতে হচ্ছে। দৌলতপুরের কাপড় ব্যবসায়ী শফিকুল হক বলেন, জাল নোটের সমস্যা অনেক জায়গায় দেখা যাচ্ছে, তবে প্রশাসন পদক্ষেপ নিচ্ছে।
খুলনা বিভাগে কোরবানিযোগ্য পশুর মধ্যে রয়েছে ষাঁড় ৪লাখ ১৮হাজার ৮শত ৪৮টি, বলদ ৪৫হাজার ৯শত ১৮টি, গাভী ৭৩হাজার ৬শত ৬৫টি। মহিষ রয়েছে ৬হাজার ৩শত ১৭টি ছাগল ৮লাখ ৩৮হাজার ৬শত ৩টি। এছাড়া ভেড়া ৫১হাজার ১শত ৩২টি এবং অন্যান্য পশু রয়েছে ৯৫টি।