/ রামপালে ৫ নদী ও ৮৩ খাল আবারও নাব্যতা সংকটে

রামপালে ৫ নদী ও ৮৩ খাল আবারও নাব্যতা সংকটে

নৌ-চলাচল হুমকির মুখে

বাগেরহাটের রামপাল উপজেলার ৫টি নদী ও ৮৩টি খাল পুন:খননের পর আবারও নাব্যতা সংকটে পড়েছে। ২০১২ সালে মোংলা-ঘষিয়াখালি আন্তর্জাতিক নৌ-চ্যানেল পুন:খননের সময় এসব নদী খনন করা হয়।


সরেজমিনে খনন করা দাউদখালি, তেতুলিয়া, বগুড়া নদীর পাড় ঘেষে পায়ে হেটে দেখা গেছে, জোয়ারের সময় পানি মেপে মেপে ছোট ছোট নৌযান চলাচল করতে পারলেও ভাটার সময় হাটু পানিও থাকে না। খননের পর এসব নদী বেশ কিছু দিন সচল থাকলেও আস্তে আস্তে পলি জমে তলদেশ ভরাট হয়ে যায়। জোয়ারের পানির সাথে বয়ে আসা পলি ভাটায় অপসারণ না হওয়ায় মুলত নদীগুলোর তলদেশে পলি জমে ভরাট হয়ে যায়। নদীতে ¯্রােত না থাকায় এমন অবস্থা হয়েছে বলে মনে করেন পরিবেশবিদরা।


এসব নদীর পাড়ে জোয়ারের সময় দাঁড়িয়ে মনে হয় অনেক গভীর। অথচ ভাটার সময় নদীর করুন অবস্থা চোখের সামনে ফুটে উঠে। জোয়ার না এলে এসব নদীতে কোনো জলযান চলাচল করে না। ভাটার সময় অসংখ্য ছোট ছোট নৌযান জোয়ার না আসা পর্যন্ত নোঙ্গর করে থাকে। জোয়ার এলে নোঙ্গর করা নৌযান চলাচল শুরু হয়। ভাটার সময় এসব নদীতে এখন হাটু পানি থাকে। সাধারণ মানুষ ভাটার সময় গরু-মহিষ নিয়ে পায়ে হেটে অনায়াসে পার হচ্ছে। এ উপজেলা ৫টি নদী মোংলা-ঘষিয়াখালি আন্তর্জাতিক নৌ-চ্যানেলের সাথে সরাসরি যুক্ত থাকায় ২০১২ সালে মোংলা- ঘষিয়াখারি আন্তর্জাতিক নৌ-চ্যানেল পুন: খননের সময় ৫টি নদী খনন করা হয়। এসময় চ্যানেলে নাব্যতা ধরে রাখতে এ উপজেলায় ৮৩টি সরকারি মালিকানাধীন খাল খনন করা হয়। অভিযোগ আছে বিভিন্ন নদী-খালে এক শ্রেণির মানুষ জাল পেতে, ডালপালা জড়ো করে (কুমোর) দিয়ে মাছ ধরছে নিয়মিত। ডালপাল জড়ো থাকায় নদীতে স্রোত হয় কম। আর ¯্রােত না থাকলে জোয়ারের পলি অপসারণ হয় না।
উল্লেখ্য, আনুমানিক ১৯৮০ সালে এ উপজেলায় আমন চাষের জমিতে বেড়িবাঁধ দিয়ে লবণ পানিতে চিংড়ি চাষ শুরু হয়। সেই থেকে নদী খালে জোয়ার-ভাটার পানি প্লাবন ভূমিতে উঠা-নামা করতে পারে না। জোয়ার ভাটার পানি নদ-খালেই রয়ে যায়। এভাবে বছরের পর বছর পলি জমে নদী খালের তলদেশ ভরাট হয়ে যায়। এরই প্রভাবে মোংলা-ঘষিয়াখালি আন্তর্জাতিক নৌ-চ্যানেল নাব্যতা সংকটে পড়ে আনুমানিক ২০০৯ সালে নৌ-চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
২০১২ সালে মোংলা-ঘষিয়াখালি আন্তর্জাতিক নৌ-চ্যানেল খরনের সময় এ চ্যানেলের সাথে সরাসরিযুক্ত এমন ৫টি নদী ৮৩টি খাল পুন:খনন করা হয়। এসব নদী খাল এখন নাব্যতা সংকটে পড়ে নৌচলাচল বন্ধের উপক্রম হয়েছে।