বাংলাদেশ থেকে জাপানে দক্ষ জনশক্তি রপ্তানির নতুন দুয়ার উন্মোচিত হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. ইউনুসের সাম্প্রতিক জাপান সফরে সই হওয়া চুক্তি অনুযায়ী, এক লাখ প্রশিক্ষিত কর্মী জাপানের শ্রমবাজারে যাওয়ার সুযোগ পাবে।
জাপানের জনসংখ্যা ক্রমহ্রাসমান; একই সঙ্গে বৃদ্ধ জনগোষ্ঠীর সংখ্যা বাড়ছে। কর্মক্ষম নাগরিকরা চরম ব্যস্ততায় দিন কাটানোয় বৃদ্ধদের সেবা ও যত্নে কেয়ারগিভার ও নার্সের চাহিদা বেড়েছে বহুগুণ। এই প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশি তরুণ-তরুণীদের জন্য জাপানে উচ্চ বেতনে চাকরির সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার (২৩ জুন) খুলনার খালিশপুরে নিউ সিটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের সেমিনার কক্ষে জাপানের ওয়ার্ক ইন নিপ্পন ও কোকোরোজাশি লিমিটেডের যৌথ আয়োজনে “জাপানে দক্ষ নার্স ও কেয়ারগিভার নিয়োগ” শীর্ষক সেমিনারে এসব তথ্য তুলে ধরেন বক্তারা।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জাপানের ‘ইওর ব্রাইট’ এর সিইও মিওয়া ইয়ামাশিতা। বিশেষ অতিথি ছিলেন কোকোরোজাশি জাপান লিমিটেডের চেয়ারম্যান ওকাবায়শি কুনিয়াকি। সভাপতিত্ব করেন নিউ সিটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের প্রিন্সিপাল মো. জাহাঙ্গীর আলম। আলোচনায় আরও অংশ নেন সৈয়দ মাসুদুর রহমান ও সাব্বির আশরাফ।
সেমিনারে জানানো হয়, নার্সিং কোর্স শেষ করার পর শিক্ষার্থীরা জাপানে ‘এসএসডব্লিউ (Specified Skilled Worker)’ ভিসায় চাকরির আবেদন করতে পারবে। এ ভিসার মেয়াদ পাঁচ বছর, তবে দীর্ঘমেয়াদে থাকার সুযোগও রয়েছে। এজন্য জাপানি ভাষায় দুটি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে। দীর্ঘমেয়াদে থাকতে চাইলে জাপানে গিয়ে আরও একটি পরীক্ষায় পাস করলেই স্থায়ী কাজের সুযোগ মিলবে।
বক্তারা বলেন, দেশে নার্সিং পাস করে দক্ষ হলেও অধিকাংশ চাকরির বেতন ২০–২৫ হাজার টাকায় সীমাবদ্ধ। অথচ জাপানে একই যোগ্যতায় একজন কর্মীর প্রারম্ভিক বেতন শুরু হয় এক লাখ ৮০ হাজার টাকা থেকে।
তারা বলেন, এতদিন ইন্দোনেশিয়া, ফিলিপাইন, মিয়ানমার ও কম্বোডিয়া থেকে বিপুল সংখ্যক নার্স ও কেয়ারগিভার জাপানে কাজ করতেন। এখন বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের জন্যও আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার গড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, যা কাজে লাগাতে হবে।
সেমিনারে নিউ সিটি নার্সিং ইনস্টিটিউটের শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। আলোচনার পর অতিথিরা শিক্ষার্থীদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন।
এর আগে সকালে খুলনা সরকারি নার্সিং ও মিডওয়াইফারি কলেজেও একই বিষয়ে একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়।